অটিস্টিক শিশুদের প্রতি মানবিক আচরণের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ভালোবাসা ও যত্ন পেলে তারাও দেশের সম্পদ হবে।
সোমবার সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে একাদশ বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবসের এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, উপযুক্ত প্রশিক্ষণ পেলে অটিস্টিক শিশুরাও সমাজের মূলধারায় ফিরে আসতে পারবে। অটিজম নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে বর্তমান সরকার কাজ করছে। তাদের জন্য অটিস্টিক কমপ্লেক্স গড়ে তোলার ঘোষণাও দেন শেখ হাসিনা।
এসময় অটিস্টিক শিশুদের সহযোগিতায় সমাজের বিত্তশালীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
অটিজম বিষয়ে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি ও তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও আজ দিবসটি পালন করা হচ্ছে। এ উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
অটিজম শিশুদের বিকাশগত একটি সমস্যা। অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন শিশুরা সাধারণত অপরের সঙ্গে ঠিকমতো যোগাযোগ করতে পারে না, তারা অতিরিক্ত জেদি হয়ে থাকে এবং নিজেকে বিচ্ছিন্ন ও গুটিয়ে রাখার মানসিকতাসম্পন্ন হয়ে থাকে। অটিজমের সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ নেই। তবে গবেষকরা মনে করছেন, জেনেটিক, নন-জেনেটিক ও পরিবেশগত প্রভাব সমন্বিতভাবে অটিজমের জন্য দায়ী। শিশুর বিকাশে প্রাথমিক পর্যায়ে এটি সৃষ্টি হয়। এ পর্যন্ত পরিচর্যাই এর একমাত্র বিকল্প।
অটিজমে আক্রান্ত শিশু ও বয়স্কদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সহায়তার প্রয়োজনীয়তাকে তুলে ধরতে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ২০০৭ সালে ২ এপ্রিলকে ‘বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস’ হিসেবে পালনের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর থেকে প্রতি বছর দিবসটি পালন করা হচ্ছে। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য হল- ‘নারী ও বালিকাদের ক্ষমতায়ন, হোক না তারা অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন’।
একসময় অটিজম ছিল একটি অবহেলিত জনস্বাস্থ্য ইস্যু। এ সম্পর্কে সমাজে নেতিবাচক ধারণা ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্যা ও স্কুল সাইকোলজিস্ট সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নিরলস প্রচেষ্টায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অটিজম বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি হয়েছে। তিনি ২০০৭ সালে এ বিষয়ে দেশে কাজ শুরু করেন।
সায়মা সম্প্রতি এ অবহেলিত জনস্বাস্থ্য ইস্যুতে তার বিরাট অবদানের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার স্বীকৃতি পেয়েছেন।