তিন শতাধিক মায়ের দোয়া নিয়ে মাঠে নামলেন রাসেল সরকার

Slider রাজনীতি

191118gazipur_electiongrambanglanews24.com

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

স্টাফ করেস্পন্ডেন্ট ;গাজীপুর অফিসঃ জাতীয় কিংবা স্থানীয় নির্বাচনের সময় আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারণার মাঠে নামার আগে চলে প্রার্থীদের দোয়া নেয়ার পর্ব। গাজীপুর সিটি নির্বাচনকে সামনে রেখেও দোয়া নিয়ে মাঠে নামছে সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরা। ইতিমধ্যে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম তফশিল ঘোষণার আগেই চট্টগ্রামের হাটহাজারী গিয়ে হেফাজতে ইসলামীর আমির আল্লামা শফির দোয়া নিয়ে মাঠে নেমেছেন। আরেক সম্ভাব্য প্রার্থী মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক কামরুল আহসান রাসেল সরকার তিন শতাধিক মায়ের দোয়া নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় মাঠে নেমেছেন। অনেকেই মাজারে কিংবা বড় হুজুরের কাছে দোয়া নিতে গেলেও এই প্রথম মায়েদের দোয়া নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে মাঠে নামার ঘটনা এই প্রথম।

এ প্রসঙ্গে রাসেল সরকার বলেন, ‘মায়ের পায়ের নিচে বেহেস্ত, সেই মায়েদের দোয়া নিয়েই আমি নির্বাচনী মাঠে নামছি। আমার নেত্রী যদি নৌকার প্রার্থী করে আর ইনশাল্লাহ মায়েদের দোয়া নিয়ে বিজয়ী হতে পারব।

রবিবার সকালে সরেজমনি গিয়ে দেখা গেছে, ষাটোর্দ্ধ নাজমা বেগম মহানগরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের দীঘিরচালা থেকে পায়ে হেটে ভোগড়ায় এসেছেন। সকাল ৮টায় গাজীপুর চৌরাস্তা ধরেই চলে আসেন সরকার বাড়ি। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক ধরে হাটতে হাটতে অনেকটা ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন বৃদ্ধা। সরকার বাড়িতে কেন এসেছেন জানতে চাইলে বৃদ্ধা নাজমা বেগম বলেন, ‘শহরে নির্বাচন আইছে, কয়দিন পরে নির্বাচন, হোনছি আমগো রাসেল মেয়র পদে খারইছে, ওরে দোয়া করবার আইছি। শুধু দীঘিরচালার নাজমা বেগম নয় সরকার বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, মহানগরের ৫৭ ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্থান থেকে ছুটে এসেছেন কামরুল আহসান সরকার রাসেলকে দোয়া করতে শত শত মায়েরা। তাঁরা সবাই আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী রাসেল সরকারকে দোয়া করার জন্য ছুটে এসেছেন। বাড়ির ভেতর থেকে রাসেল সরকারও ছুটে আসেন মায়েদের আসার খবর শোনে। শুরু হয় এক আবেগময় দৃশ্যের। সবার চোখ যেন রাসেলের দিকে। কেউ মাথায় হাত রেখে দোয়া করছেন, কেউবা আবার কপালে চুমু খেয়ে বুকে জড়িয়ে নিয়ে তাঁর মঙ্গল কামনা করছেন।

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৪৯ নম্বর ওয়ার্ড এরশাদ নগর থেকে আসা জোহুরা বেগম ও আকলিমা জানান, রাসেল সব সময় আমাদের সুখ-দুঃখের সাথী। আমরা চাই ওনি মেয়র হক। সারা জীবন আমরা নৌকায় ভোট দিছি। আমরা নৌকার মানুষ। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন ওনি যেন রাসেলকে নৌকা দেন। একই কণ্ঠে সুর মেলালেন মহানগরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে আসা সুফিয়া খাতুন। তিনি বলেন, রাসেলের বাসায় ঢুকতে অনুমতি লাগে না। যখন খুশি তখন ঢুকন যাই। আমরা চাই সে আমগো মেয়র হক।

মহানগরের চতর বাজারের বাসিন্দা নাছরিন নাহার কলি বলেন, আমার স্বামী সন্তানসহ আমরা ৬ জন চতর বাজারে থাকতাম,স্বামী রিকশা চালাতো। একটি দুর্ঘটনার পর সে আর কাজ করতে পারেন না। দুই ছেলের পড়া লেখার বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল। রাসেল ভাই আমার দুই ছেলের দায়িত্ব নিয়ে পড়াচ্ছেন। ওনি খুব ভালো মানুষ। মেয়র হইলে আমগো ভালো হবে। রাসেল সরকারের ভোগড়ার বাড়িটি যেন মায়েদের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছিল রবিবার। মায়েদের দোয়া নিয়ে এভাবে কেউ নির্বাচনের প্রচারণা নামে সেটা প্রথমই দেখলেন গাজীপুরবাসী।

সম্ভাব্য এই মেয়র প্রার্থীও উপস্থিত মায়েদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমি মুসলমান হিসেবে আল্লাহকে জানি, মানি। আল্লাহ্র- নবী রাসুল এবং ওলি-আউলিয়াদের পরেই মায়ের অবস্থান। আর তাঁদের দোয়া নিয়েই আমি গাজীপুর সিটি করপোরেশনে মেয়র হিসেবে অংশ নিতে মাঠে নামলাম। জনগণের ভালোবাসা নিয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে নৌকার মনোনয়ন চাইতে যাব।

সালনা থেকে আসা মোসা.আজমা নামে এক মা রাসেল সরকারের বক্তব্য শোনে বলেন,‘স্বাধীনতার পর কত নির্বাচন গেল আইলো কেউ আমগো কথা চিন্তা করলো না আর রাসেল সরকার আমগো দোয়া নিয়া নির্বাচনে নামলো। আল্লাহ ওর মনের আশা পূরণ করক,আমরা ওর সাথে আছি।’

জানা গেছে, গাজীপুর মহানগর যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক মো.কামরুল আহসান সরকার রাসেল ছাত্রজীবন থেকেই আওয়ামী রাজনৈতির সাথে যুক্ত। গাজীপুরের অন্যতম বিদ্যাপিঠ ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের সভাপতি হিসেবে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *