মো: আবু বক্কর সিদ্দিক সুমন ; উত্তরা প্রতিনিধি :
রাজধানীর উত্তরা পূর্ব থানা এলাকা থেকে ৭৩ হাজার ৮৪৫ পিস ইয়াবাসহ চার মাদক বিক্রেতাকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১)। মাদক ব্যবসায়ী সুমন মিয়া ওরফে ফিসাইন সুমন ওরফে মনোয়ার হোসেন (৪০), মোঃ কালাম হোসেন (৩৬), মোঃ ইসমাইল (৩০) ও মোঃ দেলোয়ার হোসেন (২০) । এসময় র্যাব সদস্যরা গ্রেফতারকৃত মাদক ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে ৭৩ হাজার ৮৪৫পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, মাদক বিক্রয়ের নগদ ১৯ হাজার ৮৮১ টাকা, মাদক ব্যবসার কাজে ব্যবহৃত ৬ টি মোবাইল ফোন এবং ইয়াবা ট্যাবলেট সরবরাহের কাজে ব্যবহৃত ১টি কালো রংয়ের মাইক্রোবাস উদ্বার করে।
শুক্রবার দিবাগত রাত (আজ) দেড়টার দিকে উত্তরা-পূর্ব থানাধীন সেক্টর-৮, আলাউল এভিনিউ, পোষ্টাল কোয়ার্টার ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন এর প্রধান গেইট সংলগ্ন মাঠে গোপনে অভিযান চালিয়ে ইয়াবার এ চালানটি গাড়িসহ আটক করেন।র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১) কমান্ডিং অফিসার (অধিনায়ক) সিও লেফটেন্ট্যান্ট কর্ণেল সারওয়ার বিন কাশেম আজ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১),উত্তরা অপস শাখার সিনিয়র এএসপি সামিরা সুলতানা আজ শনিবার বিকেলে ইয়াবা উদ্বারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান। শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে (আজ) র্যাব-১, উত্তরা, ঢাকা এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী কক্সবাজার হতে বড় ধরনের একটি মাদকদ্রব্যের চালান সংগ্রহ পূর্বক একটি মাইক্রোবাসযোগে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পাইকারী সরবরাহের উদ্দেশ্যে ঢাকার দিকে আসছে। প্রাপ্ত সংবাদের ভিত্তিতে র্যাবের আভিযানিক দলটি মাইক্রোবাসটি ধরার জন্য তার পিছু নেয়।
পরবর্তীতে র্যাব-১ এর সদস্যরা উক্ত মাইক্রোবাসটি রাজধানীর উত্তরা-পূর্ব থানাধীন সেক্টর-৮, আলাউল এভিনিউ, পোষ্টাল কোয়ার্টার ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন এর প্রধান গেইট সংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম দিকে একটি ফাঁকা মাঠে প্রবেশ করে পাইকারী মাদক বিক্রেতাদের নিকট মাদকদ্রব্য সরবরাহের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। তখন র্যাবের দলটি গোপনে মাইক্রোবাসটিকে চার দিক দিয়ে ঘিরে ফেলে। এসময় র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদকব্যবসায়ীরা মাইক্রোবাস সহ পালানোর চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে র্যাব সদস্যরা মাদক ব্যবসায়ী সুমন মিয়া ওরফে ফিসাইন সুমন ওরফে মনোয়ার হোসেন (৪০), পিতা- আনোয়ার হোসেন ওরফে আনোয়ার মিয়া, সাং রঘুরামপুর (আরবপুর), থানা- যশোর কোতয়ালী, জেলা- যশোর, মোঃ কালাম হোসেন (৩৬), পিতা- মৃত কওছার আলী বিশ্বাস, সাং গাইকুড়, থানা- দিঘলিয়া, জেলা- খুলনা, মোঃ ইসমাইল (৩০), পিতা- মৃত আব্দুল মাহবুদ, সাং নয়া বাজার, থানা- টেকনাফ, জেলা- কক্সবাজার ও মোঃ দেলোয়ার হোসেন (২০), পিতা- নুর হোসেন, সাং নয়া বাজার, থানা- টেকনাফ, জেলা- কক্সবাজারদেরকে হাতেনাতে গ্রেফতার করে।
র্যাব-১ এর কর্মকর্তারা জানান, ধৃত আসামীদের দেয়া তথ্যমতে উক্ত মাইক্রোবাস তল্লাশী করে গাড়ীর চালকের বামপাশে দ্বিতীয় আসনের পেছনে ফ্লোর চেসিস কেটে তৈরিকৃত বক্সে সুকৌশলে লুকানো অবস্থায় ১টি ঘিয়ে রং এর শপিং ব্যাগ ও ১টি নীল রংয়ের পলিথিন ব্যাগ হতে সর্বমোট ৭৩ হাজার ৮৪৫পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করে। পরে তাদের দেহ তল্লাশী করে মাদক বিক্রয়ের নগদ ১৯ হাজার ৮৮১ টাকা, মাদক ব্যবসার কাজে ব্যবহৃত ৬ টি মোবাইল ফোন এবং ইয়াবা ট্যাবলেট সরবরাহের কাজে ব্যবহৃত ১টি কালো রংয়ের মাইক্রোবাস জব্দ করে।
গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র্যাবকে জানায় যে, উল্লেখিত ইয়াবা ট্যাবলেট এর চালানটি রাকিব মেম্বার ও বখতিয়ার (লবন চাষী) উভয় সাং- নয়া বাজার, থানা- টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজারদ্বয়ের নিকট হতে সংগ্রহ করেন। মাইক্রোবাসযোগে তারা রাজধানীর উত্তরা সহ বিভিন্ন এলাকায় পাইকারী সরবরাহ/বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে তারা ঢাকায় এনেছিল। গ্রেফতারকৃতরা দীর্ঘদিন যাবৎ পলাতক আসামীদের সহযোগীতায় কক্সবাজার হতে গাড়িযোগে ইয়াবার চালান সংগ্রহপূর্বক দেশের বিভিন্ন জেলা শহরে সরবরাহ/বিক্রয় করে আসছিল বলে তারা স্বীকার করেছেন।
র্যাব-১ আরো জানান, গ্রেফতারকৃত সুমন মিয়া ওরফে ফিসাইন সুমন ওরফে মনোয়ার হোসেন (৪০), এর বিরুদ্ধে যশোর কোতয়ালী মডেল থানার মামলা নং ১২৮, তারিখ ২৯/১০/২০১২, ধারা- ১৪৭/৫০৬ পেনাল কোড ১৮৬০ তৎসহ ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক উপাদানাবলী আইনের ৩/৪, জিআর নং ১১৯৭/১২, এসটিসি নং ২৪৩/১৫ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে বলে জানা যায়। উপরোক্ত বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে বলে জানিয়েছে র্যাব-১।