পাঁচ কোটি গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য নিয়ে মার্কিন নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষে কাজে লাগানোর ওই ঘটনায় ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক জুকারবার্গ ক্ষমা চেয়েছেন এইতো কিছুদিন আগে। তথ্য ফাঁস হওয়ার এক সপ্তাহে ফেসবুকের বাজার ধসে মূলধন কমেছে ৫৮ বিলিয়ন ডলার। বিবিসির এক প্রতিবেদনে এমনটি বলা হয়েছে।
এই ঘটনায় অনলাইন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটির ক্ষতি কোন মাত্রায় গিয়ে ঠেকবে তা নিয়ে শঙ্কিত অনেকে। গত সোমবার ফেসবুকের শেয়ারের দাম ছিল ১৭৬ দশমিক ৮০ ডলার, সেই শেয়ারের মূল্য শুক্রবার রাতে নেমেছে ১৫৯ দশমিক ৩০ ডলারে। ভিত্তিমূল্য ৩৮ ডলার ধরে ২০১২ সালে আইপিও ছাড়ে ফেসবুক, তাতে কোম্পানিটির বাজারমূলধন হয় ১০৪ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। এরপর ধারাবাহিকভাবে গ্রাহক বৃদ্ধি এবং ডিজিটাল বিজ্ঞাপন বাজারে শক্ত অবস্থানে রাজস্ব আসতে থাকায় ফেসবুকের শেয়ারের দাম বাড়তে থাকে, যা গত ফেব্রুয়ারিতে গিয়ে দাঁড়ায় ১৯০ ডলারে।
ফেসবুকের ইতিহাসে এই সপ্তাহকে একটি ‘বিপর্যয়ের অধ্যায়’ হিসেবে আখ্যায়িত করছেন যুক্তরাজ্যের বিস্ট্রলভিত্তিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান হারগ্রেভস ল্যানসডাউনের জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক লেইথ খালাফ। তিনি বিবিসিকে বলেন, “ফেসবুকের সাফল্যের অন্যতম কারণ ছিল, ফেসবুক ব্যবহারকারী ক্রমশ বেড়েছে। গ্রাহকদের কাছে তা অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। ফেসবুকের জন্য দুর্ভাগ্য যে, এই কেলেঙ্কারির কারণে এটা যদি উল্লেখযোগ্যসংখ্যক গ্রাহক হারায় তাহলে এর উত্থানের পেছনের ওই কারণই উল্টোভাবে কাজ করবে।”
২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রচারণায় পরামর্শক হিসেবে কাজ করে লন্ডনভিত্তিক রাজনৈতিক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা। ট্রাম্পের প্রচারণার রসদ যোগাতে তারা পাঁচ কোটি ফেসবুক গ্রাহকের ব্যক্তিগত তথ্য কাজে লাগায় বলে সম্প্রতি ব্রিটিশ টেলিভিশন চ্যানেল ফোরের এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে আসে।
এই তথ্য প্রকাশের পর যুক্তরাজ্য পার্লামেন্টের একটি তদন্ত কমিটি ওই বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে জুকারবার্গকে তলব করেছে। যু্ক্তরাষ্ট্রেও তার ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনার মধ্যে বুধবার এক ফেসবুক পোস্টে জুকারবার্গ বলেন, “আমরাও ভুল করেছি। এ বিষয়ে আমাদেরও কিছু করার ছিল।”