ভারতের জি বাংলার সিরিয়াল ‘অন্দরমহল’ এখন দারুণ জনপ্রিয়। এই সিরিয়ালের অন্যতম প্রধান চরিত্র ‘পরমেশ্বরী’। বাড়ির বড় মেয়ে হলেও বেশি বয়সে তার বিয়ে হয়। যার সঙ্গে বিয়ে হয়েছে, এটি তার দ্বিতীয় বিয়ে। তার একটি মেয়ে আছে। স্বামী খুব ব্যস্ত। নিজের জন্য নয়, তার মেয়েকে দেখাশোনা করার জন্য সে এই বিয়ে করেছে।
এর আগে দেওয়া আরেক সাক্ষাৎকারে কনীনিকা বলেছিলেন, ‘আমি পরমেশ্বরীর মতো মহান নই। কিছু মিল তো আছেই। পরমেশ্বরী ঠিক যে রাস্তায় হাঁটছে, সেটা দিয়ে আমি না হাঁটলেও ওর ক্রাইসিসগুলো যে সত্যি, সেটা জানি। একটা বয়সের পর বিয়ে হলে অনেক আপস করতে হয়। এই জায়গায় হয়তো আমার সঙ্গে মিল আছে। দেখেছি একটা মেয়ে ভালো থাকলে বাকি চারটি মেয়ের তা ভালো নাও লাগতে পারে। নিজেদের অজান্তেই তারা মানসিক ভাবে সমস্যা তৈরি করে।’
‘পরমেশ্বরী’ এখন বাংলা সিরিয়ালের দর্শকদের কাছে খুব জনপ্রিয়। কিন্তু অবাক করা ব্যাপার হলো, পর্দার পরমেশ্বরীর সঙ্গে বাস্তবের কনীনিকার কিছু মিল রয়েছে। গত বছর ১৭ জানুয়ারি সুরজিত হোরির সঙ্গে বিয়ে হয় কনীনিকার। সুরজিতের এটি দ্বিতীয় বিয়ে। তাঁর একটি ছেলে আছে। নাম দ্রোণ। নিজের ছেলে না হলেও দ্রোণের সঙ্গে কনীনিকার দারুণ বন্ধুত্ব। সুরজিত খুব ব্যস্ত। পেশায় ব্যবসায়ী। যুক্ত আছেন প্রযোজনার সঙ্গে।
দ্রোণকে নিয়ে কনীনিকা বললেন, ‘দ্রোণ খুব মিষ্টি ছেলে। ওর থেকে আমি জীবনের অনেক কিছু শিখেছি।’
পরমেশ্বরী খুব পরিচিত। দুই বাংলার অসংখ্য দর্শক এখন তাঁকে চেনে। বললেন, ‘বহু মানুষের কাছে আমি পরমেশ্বরী। শুনেছি “অন্দরমহল” সিরিয়ালে অভিনয় না করলে লোকে জানতই না আমি অভিনয় করি!’
নায়িকারা প্রযোজককে বিয়ে না করলে বিলাসবহুল জীবন যাপন করতে পারেন না? কনীনিকা বললেন, ‘সুরজিতের সঙ্গে যখন প্রেম হয়, জানতামই না ও ছবির প্রযোজক। একটি ছবির ডাবিংয়ের পরে জেনেছিলাম। ওকে প্রযোজক হিসেবে কোনো দিন দেখিনি। মানুষের জীবনে অসময়, অন্ধকার, ঝড় না উঠলে মানুষ আসল জীবনটাকে দেখতে পায় না। আর বিলাসিতা? আমি খুব অল্পে সন্তুষ্ট। জীবনে ভয়ংকর স্ট্রাগল দেখেছি। আমি আর সুরজিত ভাঙাগড়ার মধ্যে দিয়ে নিজেদের দাম্পত্যকে গড়ে তুলছি। আমাদের দুজনেরই দুজনকে বুঝতে সময় লেগেছে। তবে বিয়ের এক বছর পেরিয়ে যাওয়ার পর বলতে পারি, সুরজিত আমাকে অনেক সামলেছে।’
‘অন্দরমহল’ সিরিয়ালে আদব-কায়দা আর ইংরেজি না জানা নিয়ে পরমেশ্বরীকে খোঁটা শুনতে হয়। কনীনিকা বললেন, ‘এমন অনেক মেয়ে রয়েছে, যাদের একমাত্র লক্ষ্য সংসার করা। বাংলা মাধ্যমের কতজন দারুণ ইংরেজি বলতে পারে? আমি নিজে বাংলা মাধ্যমে পড়াশোনা করেছি। মাধ্যমিকের পর সব বিষয় ইংরেজিতে পড়া শুরু করেছি। কোনো পার্টিতে গেলে প্রথম দিকে জড়সড় লাগত। পরে নিজেকে গ্রুম করেছি। ইংরেজি বলতে না পারা লজ্জার নয়। কিন্তু আমাদের মধ্যে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে, ইংরেজি না জানলে স্ট্যাটাস নেই। ইংরেজি জানা, চাকরি করা মেয়েদের কি সমস্যা হয় না? আসলে, নরম মাটি পেলেই মানুষ আঁচড়াবে। সেটা শ্বশুরবাড়ি হোক বা বাপের বাড়ি!’
কনীনিকা এখন অভিনয় করছেন চলচ্চিত্রেও।