ঋণ প্রবাহের মাধ্যমে ২০০৮-০৯ অর্থবছরে জিডিপিতে ব্যাংক খাতের অবদান ছিল ৪৬ শতাংশ। ২০১৩ সাল শেষে যার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৫ শতাংশে। দিন দিন বাড়ছে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি। অনেক ব্যাংক সুদের হার কমিয়ে আনছে। এমনকি কোন কোন ব্যাংক ভালো গ্রাহকদের জন্য সিঙ্গেল ডিজিটে ঋণ দিচ্ছে। ২০১৩ সাল শেষে বাংলাদেশে ব্যাংকিং খাতের অবস্থা তুলে ধরে এসব কথা জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান।
শনিবার সকালে রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টে (বিআইবিএম) ‘বার্ষিক ব্যাংকিং কনফারেন্স-২০১৪’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।
অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থায়ন নিয়ে ড. আতিউর বলেন, ‘২০০৮-০৯ সালে বিশ্বের উন্নত দেশগুলো মূলধারার অর্থনীতিতে অর্থায়ন করেছে। কিন্তু আমরা সাধারণ মানুষকে অন্তর্ভুক্ত করে প্রকৃত অর্থনীতিতে অর্থায়ন করার চেষ্টা করেছি। এ কারণে উন্নত দেশগুলোর বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দায় থাকলেও বাংলাদেশে এর প্রভাব পড়েনি।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের কঠোর নজরদারি ও ভূমিকার কারণে ব্যাংকিং খাতের কিছু কিছু বড় অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়েছে। আর এটি সম্ভব হয়েছে এ খাতটিকে দ্রুত আধুনিকায়ন করার ফলে। এখন অনলাইনে টাকা ট্রান্সফার, ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার, অনলাইনে ঋণের তথ্য ও তদারকি সহজতর হয়ে পড়েছে।’
এ সময় কি-নোট পেপার উপস্থাপনকালে বিআইবিএম’র পরিচালক ড. তৌফিক আহমেদ চৌধুরী জানান, বর্তমানে দেশে ৮ কোটি ৫০ লাখ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। যার মধ্যে ৩ কোটির মত রয়েছে স্কুল ব্যাংকিং ও কৃষকের ১০ টাকার অ্যাকাউন্ট। বাংলাদেশে ২০১৩ সালের শেষে ব্যাংকিং খাতের মোট সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার বিলিয়ন টাকা। যা এর আগের বছরের চেয়ে ১৩ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি শেষে ব্যাংকের মোট আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার বিলিয়ন টাকা।
তিনি জানান, ব্যাংকগুলোর কৃষি খাতে ঋণ বিতরণ বাড়ছে। ২০১৩-১৪ অর্থবছরে আগের বছরের তুলনায় ঋণের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৩ দশমিক ৩২ শতাংশ। এই ঋণ প্রবৃদ্ধিতে ফলে কৃষি খাত জিডিপিতে অতিরিক্ত ৫ দশমিক ৭ শতাংশ অবদান রাখতে পারছে বলে তিনি জানান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন, অনুষ্ঠানের আয়োজক কমিটির চেয়ারম্যন প্রফেসর ড. শাহ মো. আহসান হাবিব। এসময় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিভিন্ন ব্যাংকের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।