কিছু পরিবার ও ব্যক্তি বিশেষের অপপ্রচারে পরিণত হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

Slider গ্রাম বাংলা জাতীয় টপ নিউজ ঢাকা বাংলার মুখোমুখি রাজনীতি সারাদেশ

ড়ম

গ্রাম বাংলা ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ব্যাহত করার জন্য একটি গোষ্ঠী এখনো ষড়যন্ত্র করে চলেছে। তিনি তা প্রতিরোধ করতে দেশবাসীকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, কিছু কিছু পরিবার ও ব্যক্তি মহল বিশেষের অপপ্রচারে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তিরা দেশকে তাঁবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। এ ব্যাপারে দেশবাসীকে সজাগ থাকতে হবে।
তিনি আজ সংসদে বিরোধীদলের সংসদ সদস্য নাসিম ওসমানের শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় এ কথা বলেন।
এ আলোচনায় আরও অংশ নেন সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, ডাক ও টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিমন্ত্রী আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, সরকারি দলের শামীম ওসমান, জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ, রুহুল আমিন হাওলাদার এবং সমবায় ও পল্লী উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পেছনে অনেক পরিবারের আত্মত্যাগ রয়েছে। নাসিমদের পরিবারও তার মধ্যে একটি।
তিনি বলেন, এদেশে কিছু কিছু পরিবার ও ব্যক্তি মহল বিশেষের অপপ্রচারে পরিণত হয়েছে। অথচ এর চেয়ে অনেক বেশি অপরাধ করেও কিছু পরিবারের বিরুদ্ধে কোনো অপপ্রচার নেই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুক্তিযোদ্ধা নাসিম ওসমান নিজের বিয়ের রাতে নববধূকে ফেলে রেখে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ নিতে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়েন।
শেখ হাসিনা বলেন, নাসিম ওসমান নিজের জীবনের সুখ-শান্তি ও ভবিষ্যতের কথা না ভেবে বঙ্গবন্ধুর প্রতি যে আনুগত্য দেখিয়েছে তা অনেকেই তখন দেখায়নি।
তিনি বলেন, এ জন্য আমি তার রুহের প্রতি মাগফেরাত কামনা করছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি যতদিন বেঁচে আছি নাসিম ওসমানের সন্তানদের যদি কোনো কিছুর প্রয়োজন হয় সরাসরি আমার সঙ্গে দেখা করলে আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করবো তাদের সমস্যার সমাধান করতে।
তিনি বলেন, তার বাবা শামসুজ্জোহার বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ছিল। তার বাড়িতেই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জন্ম হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৬ ডিসেম্বর পাকবাহিনীরা যখন আত্মসমর্পণ করে তখন জোহা ভাই রেসকোর্স ময়দানেই ছিল। আত্মসমর্পণের পর তিনি ধানমন্ডি ১৮ নম্বর বাড়িতে চলে আসেন। যেখানে আমাদের বন্দি করে রাখা হয়েছিল।
তিনি বলেন, ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হলেও আমরা মুক্ত হতে পারেনি। জোহা ভাই আত্মসমর্পণের খবর দিতে এলে ওই বাড়ির ছাদ থেকে পাকবাহিনী তাকে লক্ষ করে গুলি ছোঁড়ে। তিনি আহত হন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ’৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আমরা ভারতে এসে রাজনৈতিক আশ্রয় গ্রহণ করি তখন অনেক আওয়ামী লীগ নেতাকেই বন্দি করা হয়।
তিনি বলেন, ১৯৭৯ সালে আওয়ামী লীগ নেতারা যখন মুক্তি লাভ করে তখন একমাত্র জোহা ভাই দিল্লী গিয়ে আমাদের খোঁজ-খবর নেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি শুধু আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সদস্যই ছিলেন না, এ দলটি গড়ে তুলতে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক আদর্শ নিয়ে কাজ করে গেছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, দুর্ভাগ্য এ পরিবারটির ওপর বারবারই আঘাত এসেছে। আইয়ুব, ইয়াহিয়ার আমল থেকে শুরু করে ’৭৫ পরবর্তী যারাই ক্ষমতায় এসেছে এ পরিবারের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে।
তিনি বলেন, নাসিম ওসমান প্রায় আমার কাছে আসতেন এবং দোয়া চাইতেন। তখন তাকে আমি একটি কোরআন শরীফ উপহার দেই। এটি পেয়ে সে খুব খুশি হয়েছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দলের মোশতাক আহমেদ বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। এর সঙ্গে জড়িতদের আমরা বিচার করেছি। অনেকের ফাঁসির রায়ও কার্যকর করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর খুনি কর্নেল ফারুক বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে বলেছেন বঙ্গবন্ধু হত্যার ষড়যন্ত্রে জিয়াউর রহমানও জড়িত। যার রেকর্ড বিবিসিতে আছে।
শেখ হাসিনা বলেন, নাসিম ওসমানের মা এখনও বেঁচে আছেন। এ সাহসী মহিলা দিনের পর দিন আন্দোলন-সংগ্রামে কখনও ভেঙে পড়েননি। কিন্তু পুত্রের শোক কিভাবে সইবেন তা জানি না। আমি আল্লাহর কাছে মাগফেরাত কামনা করি তাকে এ শোক সইবার শক্তি দিক। সূত্র : বাসস।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *