টাঙ্গাইলে ক্রমশ রুপ পাচ্ছে অনন্য স্থাপত্যের এক মসজিদ। মসজিদটির মিনারের উচ্চতা থাকছে ৪৫১ ফুট (১৩৮ মিটার), যা ৫৭ তলা ভবনের সমান। সব কিছু ঠিক থাকলে এই মসজিদ হবে বিশ্বের দ্বিতীয় উঁচু মিনারের মসজিদ। এছাড়া মসজিদে গম্বুজের সংখ্যা হবে ২০১ টি। আর নির্মাণ ব্যয় প্রায় ১০০ কোটি টাকা।
টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলা সদর থেকে সাত কিলোমিটার পশ্চিমে ঝিনাই নদীর তীরে তৈরি হচ্ছে এই ২০১ গম্বুজ মসজিদ। মসজিদটির নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে ২০১৩ সালের ১৩ জানুয়ারি। এ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন কল্যাণ ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের মা রিজিয়া খাতুন। এবছরই মসজিটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। ২০১৯ সালের প্রথম দিকে পবিত্র কাবা শরীফের ইমামের ইমামতির মাধ্যমে মসজিদের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার পরিকল্পনা রয়েছে। এ লক্ষ্যে নির্মাণ করা হয়েছে দুটি হেলিপ্যাড। ডিজাইন ও কারুকার্যের দিক থেকে মসজিদটি একটি সৌন্দর্যের প্রতীক হয়ে গড়ে উঠছে।
মসজিদের টাইলসসহ ফিটিংস এর যাবতীয় শোভাবর্ধনে সৌখিন কারুকার্য খচিত পাথরসমূহ বিশ্বের কয়েকটি দেশ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। দ্রুত গতিতে মসজিদের নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে। শৈল্পিক স্থাপনা হিসেবে এ মসজিদটি অনন্য বৈশিষ্ট্যের প্রতীক হবে এমনটাই মনে করা হচ্ছে। নির্মাণাধীন এ মসজিদ বাংলাদেশকে বিশ্বে নতুন করে পরিচিত করবে। এখানে দেশি-বিদেশি পর্যটক, ওলি-আউলিয়া ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের আগমন ঘটবে বলে মনে করছেন উদ্যোক্তারা।
এদিকে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু মিনারটি মরক্কোর কাসাব্লাংকায় দ্বিতীয় হাসান মসজিদে অবস্থিত। এর উচ্চতা ৬৮৯ ফুট (২১০ মিটার), যা ৬০ তলা ভবনের সমান। তবে এটি ইটের তৈরি নয়। ভারতে দিল্লীর কুতুব মিনার বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু ইটের তৈরি মিনার। এটির উচ্চতা ৭৩ মিটার বা ২৪০ ফুট। ৩৭৯টি সিঁড়ি রয়েছে এতে।
মসজিদের তত্ত্বাবধায়ক মো. হুমায়ুন কবির জানান, নির্মাণাধীন অবস্থাতেই ২০১ গম্বুজ মসজিদে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রায় ১৫ বিঘা জমির ওপর এ মসজিদ কমপ্লেক্সে থাকবে অত্যাধুনিক সব সুবিধা। মিহরাবের দুপাশে লাশ রাখার জন্য হিমাগার তৈরি করা হবে। মসজিদের ছাদের মাঝখানে থাকবে ৮১ ফুট উচ্চতার একটি বড়গম্বুজ। এর চারদিকে থাকবে ১৭ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট ২০০টি গম্বুজ। মূল মসজিদের চার কোণে থাকছে ১০১ ফুট উচ্চতার চারটি মিনার। পাশাপাশি থাকবে ৮১ ফুট উচ্চতার আরও চারটি মিনার। ১৪৪ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১৪৪ ফুট প্রস্থের দ্বিতল মসজিদটিতে নামাজ আদায় করতে পারবেন একসঙ্গে প্রায় ১৫ হাজার মুসল্লি। দেওয়ালের টাইলসে অঙ্কিত থাকবে ৩০ পারা পবিত্র কোরআন শরীফ। যে কেউ বসে বা দাঁড়িয়ে পবিত্র কোরআন শরীফ পড়তে পারবেন। আর মসজিদের প্রধান দরজা তৈরিতে ব্যবহার করা হবে ৫০ মণ পিতল। আজান প্রচারের জন্য মসজিদের দক্ষিণ পাশে নির্মাণ করা হবে একটি উঁচু মিনার।
মসজিদের নির্মাতা বাংলাদেশ ব্যাংক এমপ্লয়িজ ফেডারেশনের (সিবিএ) সভাপতি, মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম বলেন, আশা করছি, রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে মসজিদটি উদ্বোধন করবেন পবিত্র মক্কা শরীফের ইমাম।