নির্বাচন নিয়ে সরকার প্রতারণা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ। শুক্রবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় তিনি এই অভিযোগ করেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কারাবাস দীর্ঘায়িত করার প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
মওদুদ আহমদ বলেন, সরকারের নীতি নৈতিকতা বলতে কিছু নাই, আছে প্রতারণা। আজকে তারা বলছে যে, অংশগ্রহনমূলক নির্বাচন হবে এবং বিএনপি নির্বাচনে আসবে। খুব ভালো কথা, সুন্দর কথা, চমৎকার কথা। কিন্তু কার্যক্রমে কী করছেন, মাঠ পর্যায়ে কী করছেন? তারা বলছেন, খবরদার- কোনো সভা-সমাবেশ কিন্তু করতে দেবো না, কোনো ঘরোয়া বৈঠকও করতে দেবো না। আর যত আপনাদের নেতা-কর্মী আছে সবাইকে যত পারি তত মামলা দিয়ে জেলখানায় ভরে রাখবো। অর্থাৎ হাত-পা শক্ত করে বেঁধে বিএনপিকে বলছেন, এখন আপনারা সাতার কাটেন, আমাদেরকে সাতার কাটতে বলছেন।
বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ৭৮ হাজার মামলা ও স¤প্রতি বেঁছে বেঁছে নেতাদের গ্রেপ্তারের ঘটনা তুলে ধরেন মওদুদ বলেন, এই যে প্রতারনা এটাতে আওয়ামী লীগ হচ্ছে চ্যাম্পিয়ান।
তিনি বলেন, আমরা বলতে চাই, বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, আমরা বুলেটে বিশ্বাস করি না, আমরা ষড়যন্ত্রে বিশ্বাস করি না। আমরা জনগনের ভোটে, জনসমর্থনের ওপর ভিত্তি করে এই দল, এর একমাত্র ভিত্তি হচ্ছে জনগন। একদিকে আমাদের অধিকার থেকে আমাদেরকে বঞ্চিত করা হচ্ছে, অন্যদিকে প্রধানমন্ত্রী সম¯Í সুযোগ সুবিধা নিয়ে প্রচারনা চালাচ্ছেন। তিনি কোনো মতেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রচারনা করতে পারেন না। দলের সভানেত্রী হিসেবে পারে। তবে তার সাথে শর্ত থাকতে হবে একই অধিকার বেগম খালেদা জিয়াকে দিতে হবে।
সংগঠনের সভাপতি আমির হোসেন বাদশার সভাপতিত্বে ও জাহাঙ্গীর আলমের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহাদাত হোসেন সেলিম, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, ফোরকান-ই-আলম, শাহ নেসারুল হক প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
নিম্ন আদালতসমূহ সরকারের নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে বলে বাস্তাবে বিচার বিভাগের কোনো স্বাধীনতা নেই বলে মমন্ত্য করেন সাবেক আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমদ।
তিনি বলেন, নিম্ন আদালত এখন সম্পূর্ণভাবে নির্বাহী বিভাগের নিয়ন্ত্রনে। এসকে সিনহার (সাবেক প্রধান বিচারপতি) পদত্যাগ ও তাকে তাড়িয়ে দেয়ার পর নিম্ন আদালতকে তারা (সরকার) গ্যাজেটের মাধ্যমে তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে গেছে। এখন কোনো বিচারপতির পক্ষের ভয়ভীতি, শঙ্কামুক্ত বিচার করা সম্ভবপর নয়। আজকে বিচার বিভাগ আছে, খাতা-কলমের স্বাধীনতা আছে।
খালেদা জিয়ার সুপ্রিম কোর্টে জামিন প্রাপ্তির প্রসঙ্গ টেনে মওদুদ বলেন, রোববারে যদি উচ্চতম আদালত আপীল বিভাগ বেগম খালেদা জিয়ার জামিন বহাল রাখেন। আমি আশা করি (জামিন বহাল) রাখবেন। তাহলে কী দাঁড়াল যে, উচ্চতম আদালত বললো আপনি (খালেদা জিয়া) মুক্ত। আর কোথাকার একজন ছোট্ট চুনোপুটি বললো শ্যোন অ্যারেস্ট। তাহলে এই যে সাংঘর্ষিক অবস্থা বিচার বিভাগের বিষয়টাতে নিয়ে এসেছেন। এটা বিচার বিভাগকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। সরকার যত কলাকৌশল করুন না কেনো গণতন্ত্রের বিজয় হবে বলে আশাবাদী মওদুদ।