কায়রোর প্রথম মহিলা মিনিবাস ড্রাইভার ওম আবদুল্লাহ। তিনি মিনিবাস চালালেও তার পড়নে থাকে বোরকা এবং পুরো মুখ ঢাকা নিকাব। শুধু মাত্র মহিলা যাত্রীদের জন্য তার মিনিবাসটি।
গত বছর আবদুল্লাহর স্বামী মারা যাবার পর তিনি ড্রাইভারের কাজ শুরু করেন। তার মূল উদ্দেশ্য ছিলো কিছু অর্থ আয় করা।
ওম আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমি দেখলাম আমার চলতে হলে তো কিছু করতে হবে। ছেলেমেয়েদের বড় করতে হবে। তখন আমি গাড়ি চালানোর কথা ভাবলাম। গাড়ি চালানো একটা ভালো কাজ। আমি কাজটা পছন্দও করি।’
তবে এর আগে কোনদিন মিনিবাস চালাননি আবদুল্লাহ। ওম আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমি ওদের বলেছি আমি শিখতে চাই। কোন কাজ শেখাই খুব বেশি কঠিন নয়।’
কায়রোর অন্যতম জনপ্রিয় একটি গণপরিবহন হচ্ছে মিনিবাস। মিনিবাস কোম্পানির প্রধান নির্বাহী ফাতিমা এবং তার স্বামী সায়েদ ওম আবদুল্লাহকে ড্রাইভারের চাকরিটি দিয়েছেন। আর তারাই ওই কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা।
ফাতিমা বলেন, ওম আবদুল্লাহ আমার কাছে বেশ কয়েকবার এসেছিলেন চাকরি খোঁজে। আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম যে তিনি কি করতে চান। তিনি বললেন আমি গাড়ি চালাতে চাই।
কোম্পানিটি মহিলাদের কাজের জায়গায় বাচ্চাদেরও নিয়ে আসতে দেয়।
‘আমি গর্ভবতী অবস্থাতেও কাজ করেছি’ – বলেন ফাতিমা। তার নবজাত শিশুকে ডেস্কের পাশে প্রামে রেখেই তিনি অফিসের কাজ করেন। ওম আবদুল্লাহকে কাজ দেবার ব্যাপারে কিছু পুরুষ ড্রাইভার আপত্তি তুলেছিলেন। কেউ কেউ বলেছিলেন, ‘এখন মহিলারা কাজ করছে, আমাদের তো তাহলে বাড়িতে বসে থাকতে হবে। আমি তাদের বললাম, আপনারা যদি কাজ করতে না চান তাহলে মহিলারাই করবে।’
তবে ধীরে ধীরে অবস্থাটা পাল্টাতে লাগলো। ওম আবদুল্লাহ বলেন, ‘এখন পুরুষ ড্রাইভাররা আমাকে তাদের সহকর্মী হিসেবেই দেখে এবং তারা খুশি।’
ওম আবদুল্লাহ যে মিনিবাস চালান তা শুধু মহিলা যাত্রীদের। তিনি বলছেন, এটা যৌন হয়রানি রোধে কার্যকর।
তিনি আশা করছেন তার দৃষ্টান্ত দেখে ভবিষ্যতে আরো মেয়ে ড্রাইভারের কাজ করতে অনুপ্রাণিত হবে।