নিষিদ্ধ মাদক ইয়াবার বিষয়ে ‘জিরো টলারেন্স’ দেখানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের অধিনায়ক কর্নেল গাজী আহসানুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘খাওয়ার প্রবণতা রোধ করা না গেলে সীমান্ত দিয়ে ইয়াবার অনুপ্রবেশও বন্ধ করা যাবে না। ডিমান্ড অ্যান্ড সাপ্লাইয়ের একটা বিষয় আছে। যে জিনিসটার ডিমান্ড আছে, সেটা নিয়ে আপনি যতকিছুই করেন না কেন, সাপ্লাই হবেই। আমাদের যদি ইয়াবা খাওয়ার প্রবণতা থাকে, তাহলে ইয়াবা তো আসতেই থাকবে।’
তিনি গতকাল মঙ্গলবার নগরের হালিশহরে বিজিবি কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন।
কর্নেল আহসানুজ্জামান আরো বলেন, ‘আমরা জিরো টলারেন্সে আছি। স্মার্ট বর্ডার ম্যানেজমেন্ট করছি। সীমান্তকে ক্যামেরার আওতায় আনা হবে। এক জায়গা থেকে কন্ট্রোল হবে। তবে আমি আবারও বলব, সীমান্তে আমরা বালুর দেওয়াল দিইনি। ইয়াবা যদি বন্ধ করতে হয় আগে দেশের ভেতরে ডিমান্ডটা বন্ধ করতে হবে।’
এ সময় সীমান্তে কিছু সীমাবদ্ধতার কথাও তুলে ধরেন কর্নেল আহসানুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘আমাদের একটা বর্ডার আউট পোস্ট (বিওপি) থেকে আরেকটির দূরত্ব কমপক্ষে পাঁচ কিলোমিটার। কিছু আছে ১২ থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে। হেঁটে যেতে ৪-৫ দিন সময় লাগে। কিন্তু পার্শ্ববর্তী দেশ বর্ডারে প্যারালাল রোড করেছে। আমাদের এ রকম রোড নেই। তবে এ ধরনের রোড তৈরির বিষয়টি আমাদের পরিকল্পনায় আছে। এর আগে আমরা স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে টাকা নিয়ে নিজেদের চেষ্টায় হাঁটাপথ তৈরি করছি। যোগাযোগটা সহজ হয়ে গেলে সীমান্তে নজরদারি আরও সহজ হবে।’
সভায় বিজিবির দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের পরিচালক (অপারেশন) লে. কমান্ডার রাহাত নেওয়াজ বলেন, ‘স্থলসীমান্তে বিজিবির নজরদারির কারণে ইয়াবা আসা অনেকটা কমে গেছে। এখন যেটা আসছে সেটা নদীপথে আসছে। কয়েকদিন আগে সরকার তো নাফ নদীতে মাছধরাই বন্ধ করে দিয়েছিল। তবে স্থলসীমান্ত দিয়ে যেগুলো আসছে, সেগুলো খুব কম পরিমাণে আসছে।’
সভায় জানানো হয়, বিজিবি দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের অধীনে চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটির ৫৩৩ দশমিক ৫৫ কিলোমিটার সীমান্তপথ আছে। এর মধ্যে ২৭১ কিলোমিটার অরক্ষিত সীমান্তে নতুন করে ৪১টি বিওপি নির্মাণ করা হয়েছে। বিজিবি ২০১৩ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ৪ বছরে ৩ কোটি ১১ লাখ ৪ হাজার ৮১১টি ইয়াবা উদ্ধার করেছে।
সভায় আরও ছিলেন দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলের অধীন গুইমারা সেক্টরের কমান্ডার কর্নেল আবদুল্লাহ আল মামুন, রাঙামাটি সেক্টর কমান্ডার কর্নেল পাভেল আকরাম, খাগড়াছড়ি সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মোয়াজ্জেম এবং রিজিওনের নিজস্ব ৮ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার কর্নেল মঞ্জুর।