শনিবার কালো পতাকা প্রদর্শন কর্মসূচিতে পুলিশি হামলা ও বাধার প্রতিবাদে আগামী সোমবার ঢাকায় থানায় থানায় এবং মহানগর ও জেলা সদরে প্রতিবাদ মিছিলের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। শনিবার বিকেলে নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই কর্মসূচি ঘোষণা করে বলেন, সরকারের চণ্ডনীতির কারণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বেপরোয়া সন্ত্রাসীদের মতো আচরণ করছে। তারা হিতাহিত বিবেক বিবেচনাহীন হয়ে বিরোধী দলের ওপর হামলা করছে। এরা অবৈধ সরকারকে টিকিয়ে রাখতে জনগণের পরাধীনতার সুদৃঢ় বন্ধনে বন্দি করে রাখার দায়িত্ব নিয়েছে। পুলিশ এক অমানবিকতার জ্যান্ত হিংস্ত্রতা প্রদর্শন করেছে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর।
তিনি বলেন, আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বিনা উস্কানিতে কর্দয হিংস্ত্র আক্রমণের প্রতিবাদে ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আগামী সোমবার ঢাকায় থানায় থানায় এবং মহানগর ও জেলা সদরে প্রতিবাদ মিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করছি।
রিজভী বলেন, আজকে পুলিশি আক্রমণে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে থেকে দেড় শতাধিক নেতাকর্মী গ্রেফতার ও ২৩০ জনের অধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালকে গ্রেফতারের সময় পুলিশী আচরণের নিন্দা জানিয়ে রিজভী বলেন, সাবেক এমপি যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের সাথে পুলিশ যে নৃশংস আচরণ করেছে তা মনুষ্যত্বহীন। তার ঘাড় ঝাপটে ধরে শার্টের কলার ও বুকের-পিঠের কাপড় টেনে সিএনজিতে তোলা হয়। একজন শিক্ষিত ও মননশীল রাজনীতিবিদের সাথে পুলিশের এই আচরণ আমাদের সেই অভিযোগটি প্রমাণিত হলো যে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ দ্বারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পূর্ণ করা হয়েছে। আমরা এহেন আচরণের নিন্দা জানাচ্ছি। তিনি অবিলম্বে আলালের মুক্তির দাবি জানান।
বিএনপির এই নেতা বলেন, গণতন্ত্রবিনাশী ভোটারবিহীন সরকার বিরোধী দলের হাত-পা বেঁধে গণতন্ত্রকে বঙ্গোপসাগরে ডুবিয়ে দিতেই পুলিশকে দিয়ে পান্ডামি করাচ্ছে। তাই বিরোধী দলের আওয়াজ শুনলেই তাদের বুকে কম্পন সৃষ্টি হয়। গণতন্ত্র ও সংবিধানকে কেড়ে নিয়ে একতরফা রাজত্ব কায়েম করতেই বিএনপিসহ বিরোধী দলের কর্মসূচির ওপর ঝাঁপিড়ে পড়ছে। অত্যাচারী রাষ্ট্রে নিষ্ঠুর বলপ্রয়োগের মাধ্যমে প্রতিবাদ দমন করার জন্যই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে লেলিয়ে দেয়া হয়েছে। তাদের আচরণে মনে হয়-বিএনপির নেতাকর্মীদের কেউ মারা গেলে তাদের জানাযা, দাফন ও রুহের মাগফিরাতে জন্য মিলাদ করতে গেলেও পুলিশের অনুমতি লাগবে। পুলিশের হাতে এখন গণতন্ত্রের মৃত্যু পরোয়ানা। পুলিশি আক্রমণে বিএনপি নেতাকর্মীদের অবস্থা যেন আদিম জিঘাংসার বহিঃপ্রকাশ, অবিশ্বাস্য ও মর্মস্পর্শী। আবারো আমি বিএনপি নেতাকর্মীদের জীবনপ্রবাহ রুদ্ধ করে দেয়ার মতো পুলিশের আক্রমণের তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে দলের কেন্দ্রীয় নেতা আমিরুল ইসলাম খান আলিম, তাইফুল ইসলাম টিপু, মুনির হোসেন, বেলাল আহমেদ, আমিনুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।