সরকার বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা দিয়ে পরিস্থিতি সংঘাতপূর্ণ করতে উস্কানি দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ম এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
আজকে দলের কালো পতাকা প্রদর্শন কর্মসূচীতে পুলিশী বাধার নিন্দা জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকার উস্কানি দিয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে ও সংঘাতপূর্ন করতে চাইছে। কিন্তু বিএনপি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চালিয়ে আসছে। সরকার যে ধরনের আচরণ করছে তাতে উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য তারা দায়ী থাকবে।
তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ বিনা উস্কানিতে হামলা চালিয়ে অসংখ্য নেতাকর্মীকে আহত ও গ্রেফতার করেছে। এর তীব্র ঘৃনা ও ধিক্কার জানাই। রঙিন পানি দিয়ে ভিজিয়ে দেয় এবং কার্যালয়ের ভেতরে টিয়ার সেল মেরে দম বন্ধ করার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। সরকার শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বাধা না দেয়ার কথা বললে কালো পতাকা প্রদর্শনের মতো কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে তারা প্রমান করেছে তা মুনাফেকী গণতন্ত্র।
কর্মসূচির অনুমতি না থাকায় তা পালন করতে দেয়া হয়নি বলে পুলিশের বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে মির্জা ফখরুল বলেন, সব কর্মসূচির কারণে অনুমতি নিতে হবে কেন? ফুটপাতে দাড়িয়ে কালো পতাকা প্রদর্শন করতে পারবো না কেন? এটা তো আমার মৌলিক অধিকার। তাহলে কি ঘরের মধ্যে কথা বলতেও পুলিশের অনুমতি লাগবে?
এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, পুরুষ পুলিশ এসে দলের মহিলা নেতাকর্মীদেরকে কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকে টেনে হিচড়ে নিয়ে গেছে।
বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার দাবি জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার না হলে এদেশে কখনো সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হতে পারে না।
আরেকটি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করার জন্য বিএনপির এই কর্মসুচিতে ষড়যন্ত্র আছে – স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এ বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, সরকারের মন্ত্রী-এমপিরা উস্কানি ও নির্যাতন চালিয়ে চেষ্টা করছেন, পরিস্থিতিকে ঘোলাটে করার জন্য। কিন্তু আমরা সচেতনভাবে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছি।
শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বিনা উস্কানিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অতর্কিত হামলা করেছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, কালো পতাকা প্রর্দশন এ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সকাল ৯ টা থেকে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নেতাকর্মীরা জমায়েত হতে শুরু করলে সোয়া ১০ টায় পুলিশ বেপোয়াভাবে নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করে। পরে সকাল সাড়ে ১০ টায় নেতাকর্মীরা ফুটপাতে ওপর সুশৃঙ্খলভাবে দাঁড়ালে পুলিশ আবারও অতর্কিত হামলা ও লাঠি চার্জ করে। আমি কার্যালয়ের সামনে পৌছালে সাংবাদিক ও নেতাকর্মীরা আমাকে ঘিরে ধরে। পরে পুলিশ রঙিন পানি ছুড়ে এবং লাঠি চার্জ করে। আমাকেসহ অন্য নেতাদের রঙিন পানিতে ভিজে দেয়া হয়।
মির্জা আলমগীর বলেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ২২ ফেব্রুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আমাদের সমাবেশের অনুমতি না দেয়ার প্রতিবাদে আজ ১ ঘন্টার কালো পতাকা প্রদর্শনের কর্মসূচি ছিল। এই কর্মসূচি ছিল অত্যান্ত শান্তিপূর্ণ। কারণ কোনো রাস্তা দখল না করে এবং মিছিল ছিল, সেটাও পরিবর্তন করে প্রর্দশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।