রাত সাড়ে ১২টার দিকে মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়ার কথা ছিল মালয়েশিয়ান এয়ারলাইনসের এমএইচ ১৯৭ নম্বর ফ্লাইটের। বোয়িং ৭৩৭ উড়োজাহাজটিতে দেড় শ যাত্রী ছিলেন। যাত্রীদের নিয়ে উড়োজাহাজটি রানওয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল। হঠাৎ উড়োজাহাজের ভেতরে থাকা মশার কামড়ে অতিষ্ঠ হয়ে যান তাঁরা। যাত্রীদের অভিযোগে আকাশে ডানা মেলার ঠিক আগমুহূর্তে আবার বে এরিয়ায় ফিরে আসে উড়োজাহাজটি।
বে এরিয়ায় ফিরে আসার পর মশা নিধন শুরু হয়। কেবিন ক্রুরা ওষুধ ছিটিয়ে এ কাজ করতে থাকেন। ওষুধ ছিটানোর পর মশার দাপট কমে আসে। পরে প্রায় দুই ঘণ্টা দেরিতে রাত পৌনে তিনটার দিকে মালয়েশিয়ান এয়ারলাইনসের ফ্লাইটটি নিজ গন্তব্যের দিকে রওনা হয়।
মালয়েশিয়ান এয়ারলাইনসের স্টেশন ম্যানেজার মোহাম্মদ আজিজ বলেন, যাত্রীরা মশার কারণে উড়োজাহাজে বসতে পারছিলেন না। তাঁদের অভিযোগের কারণে উড়োজাহাজটি ফিরে আসে। মশার কারণেই ফ্লাইটটি দুই ঘণ্টা দেরিতে ছাড়ে। বিষয়টি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে বলে তিনি জানান।
বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবছর গড়ে সাত মাস মশার দাপট থাকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। অক্টোবর মাস শুরু হতে না হতেই মশার উপদ্রব শুরু হয়। শীতকালে তা সহ্যের বাইরে চলে যায়। এপ্রিলের পর বৃষ্টি হলে মশার দাপট কিছুটা কমে। ১ হাজার ৯৭১ একর আয়তনের এই বিমানবন্দরের প্রায় অর্ধেক জায়গাজুড়ে আছে ছোট-বড় জলাশয়। মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পাঁচ মাস বৃষ্টির কারণে এই জলাশয়গুলো পানিতে ভরে যায়। বর্ষা চলে যাওয়ার পর শুষ্ক মৌসুমে এসব জলাশয়ে অল্প পানি জমে থাকে। এ সময় সেখানে মশার বংশবিস্তার ঘটে। দিনের বেলা মশার দাপট না থাকলেও রাতের বেলা বিমানবন্দরের বিভিন্ন স্থাপনায় ঢুকে পড়ে মশা। এ ছাড়া কার্গো গুদাম এলাকায় মশার কারণে অবস্থান করা প্রায় অসম্ভব হয়ে যায়।
বিদেশি বিমান সংস্থার একাধিক কর্মকর্তারা জানান, প্রচুর বৈদ্যুতিক আলো ও প্রবেশপথ খোলা থাকায় মূল টার্মিনালে সন্ধ্যার পরপরই মশা ঢুকে পড়ে। উড়োজাহাজ থেকে নামার পর মশার ঝাঁক যাত্রীদের রীতিমতো ঘিরে ধরে। রাতের বেলা মশার কামড় খেয়ে ছটফট করতে করতে যাত্রীদের চেক-ইনের কাজ করেন কর্মীরা।