বিএনপি নেতা মনির চেয়ারম্যানের নামে ব্যানার টাঙানো হয়েছে। ঘটনাস্থলে কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণও ঘটেছে। একটি ইজিবাইকে আগুন লাগানো হয়েছে। বাইকের চালকের শরীরেও আগুন লেগেছে। তাকে মাটিতে শুইয়ে পানি ঢালছেন থানার এসআই শেখ মো: নতুন মিয়া। পাশেই দাঁড়িয়ে আছেন কামরাঙ্গীরচর থানার ওসি শাহীন ফকির। তিনি সবকিছু মনিটরিং করছিলেন বলে অভিযোগ মনির চেয়ারম্যানের। তিনি অভিযোগ করেছেন, এর আগেও পুলিশ এভাবে মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে তিনিসহ কামরাঙ্গীরচর থানার বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। এসবের প্রতিকার চেয়ে মনির চেয়ারম্যান আইজিপি বরাবর আবেদন করেছেন।
মনির চেয়ারম্যান কামরাঙ্গীরচর থানা বিএনপির সভাপতি এবং সুলতানগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান। তিনি পুলিশের মহাপরিদর্শকের কাছে অভিযোগ করেছেন, গত ২০ জানুয়ারি সকালে তার এক আত্মীয় মোবাইলে তাকে জানান, কামরাঙ্গীরচরের ঝাউলা হাটি এলাকায় এসআই নতুন মিয়া পরপর তিনটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পাশে থাকা একটি ইজিবাইকে আগুন জ্বালিয়ে দেন। এ সময় ইজিবাইকের চালক এক কিশোরকে মাটিতে শুইয়ে তার শরীরে পানি ঢালতে থাকেন। এ সময় ওসি শাহীন ফকির কাছেই দাঁড়িয়ে ছিলেন।
অভিযোগে মনির চেয়ারম্যান উল্লেখ করেছেন, ফজরের নামাজ আদায় করে বাসায় ফেরার পথে ওসি শাহীন ফকির লোকজনকে ধরে বলতে থাকেন, ‘দেখেন মনির চেয়ারম্যান নিজে লোকজন লইয়া আসিয়া এই ব্যানার টানায় এবং ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটাইয়া ও ইজিবাইকে আগুন দিয়া চলিয়া গিয়েছে।’
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ৩১ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ নেতা সোলায়মান মাতবরের বাড়ির ঘাটে এসআই নূরে আলম সিদ্দিকী ও এসআই ইয়াকুব আলী একই স্টাইলে ঘটনা ঘটিয়ে মনির চেয়ারম্যানসহ ৫৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
মনির চেয়ারম্যান অভিযোগ করেন, এভাবে তিনি ও স্থানীয় অন্যান্য নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা হচ্ছে। এমনকি, মিথ্যা খুনের মামলায় তিনি ৫ বছর ২১ দিন জেল খেটেছেন। তিনি আইজিপির কাছে ওসি শাহীন ফকির, এসআই শেখ নতুন মিয়া, নূরে আলম সিদ্দিকী ও ইয়াকুবসহ অন্য সহযোগীদের বিরুদ্ধে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং আর যাতে নতুন কোনো মিথ্যা মামলা না হয় সেই দাবি জানিয়েছেন।
এ দিকে, অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে কামরাঙ্গীরচর থানার ওসি শাহীন ফকির নয়া দিগন্তকে বলেন, যদি কেউ এই ধরনের অভিযোগ করে থাকেন তবে সেটা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। কাউকে কোনো প্রকার হয়রানি বা জুলুম-অত্যাচার করার কোনো সুযোগ নেই। অত্র এলাকায় মনির চেয়ারম্যানসহ বিএনপি-জামায়াত শিবিরের সদস্যরা খালেদা জিয়ার মুক্তির নামে বিভিন্ন সময়ে নৈরাজ্য সৃষ্টির জন্য অগ্নিসংযোগ, ককটেল বিস্ফোরণসহ পুলিশকে আহত করেছে, যা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যথাযথ নিয়মে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। কাউকে কোনো প্রকার হয়রানি করা হয়নি। তিনি বলেন, যারা সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে ব্যাহত ও ভাবমর্যাদা ক্ষুণ্ন করে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমরা বদ্ধপরিকর।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রত্যেক আসামি গ্রেফতারের পরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা থানায় এসে জিজ্ঞাসাবাদ ও তদারকি করেন। যাতে জনগণের হয়রানির স্বীকার না হয়। সুতরাং অভিযোগ করে কোনো লাভ নেই। যা করা হয়েছে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পরামর্শেই করা হয়েছে।