নির্বাচনে বিএনপির অংশ নেওয়া, না নেওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, খালেদা জিয়াকে বাইরে রেখে নির্বাচন করতে চাইলে জনগণ মানবে না।
আজ সোমবার বিকেলে গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির দশম সংসদ নির্বাচন বর্জনের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “এবার না আসলে কিছু করার নেই। নির্বাচন সময় মতোই হবে। তারা ভোটে না আসলে জনগণ ভোট দেবে।” এই বক্তব্যের পরই রাতে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সাংবাদিকদের এ কথা বলেন দলটির মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল বলেন, “প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে মিথ্যাচার করেছেন। এমন কতগুলো কথা বলেছেন যার সাথে সত্যের কোনো সম্পর্ক নেই। নির্বাচন নিয়ে উনি কথা বলেছেন, নির্বাচন ঠেকে থাকবে না বলেছেন। এর সাথে তার অভ্যাস আছে, অভিজ্ঞতা আছে। ২০১৪ সালে যে নির্বাচন তারা করেছেন সেখানে ৫% মানুষও ভোট দিতে আসেনি…।
তিনি আরো বলেন, “আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, বেগম খালেদা জিয়া নির্বাচন না করলে এদেশে নির্বাচন কারো কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না, এটা বাস্তবতা। এই বাস্তবতাকে অস্বীকার করে যারা নির্বাচন করতে চায়, তারা আসলে প্রতিপক্ষকে বিরোধী দলকে এবোর্ট করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য ফাঁকা মাঠে গোল দিতে চায়, একতরফা করতে চায়। সেটা এদেশের মানুষ গ্রহণ করবে না।”
এ সময় বিএনপির গঠনতন্ত্রের একটি ধারা সংশোধন নিয়ে শেখ হাসিনার সমালোচনার জবাবে দলটির মহাসচিব বলেন, “বিএনপির ৭ ধারায় ছিল পিও প্রেসিডেন্ট অর্ডার-৮, যেটা ১৯৭২ সালে করা হয়েছিল। সেই ধারা এখন নেই, এটা এখন বাতিল হয়ে গেছে। সেই দণ্ডিত ব্যক্তি দলের কোনো পদের জন্য নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতে পারবে না, দলের প্রধান হতে পারবে না। আজকে একটা কথা মানতে হবে যে এই দণ্ডটা কারা দিয়েছে? একটি আদালত এই দণ্ড দিয়েছে, সেই আদালত কার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এই আদালত সরকারের নিয়ন্ত্রণে।”
তিনি বলেন, “৭ ধারায় পরিবর্তনটা কী হয়েছে? সমাজের স্বীকৃত কোনো ব্যক্তি যদি হয়ে থাকেন- সেটা এখনো আছে। সুতরাং মেজর কোনো পরিবর্তন হয়নি। আমি একটা বিষয় বুঝতে পারি না যে বিএনপির গঠনতন্ত্র নিয়ে কে প্রধান হলো, না হলো, উনাদের এতো মাথা ব্যথা কেন, উনাদের এতো আশঙ্কা কেন? আজকে বেগম খালেদা জিয়াকে নিয়ে তাদের এতো আশঙ্কা কেন, ভয় কেন? উনি নির্বাচন করতে পারবেন কি পারবেন না। নির্বাচন না করতে পারলে আপনার সুবিধা হয়, আমরা ভালো করেই বুঝি।”
মির্জা ফখরুল বলেন, “দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দলের চেয়ারপারসনের অনুপস্থিতিতে সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান অটোমেটিক্যালি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করবেন। এটা তাদের বিষয় না, বিষয়টা আমাদের। এটা আমাদের কাউন্সিলে সিদ্ধান্ত হয়েছে।”
এ ছাড়াও খালেদা জিয়ার রায়ের কপি পাওয়ার পর পদক্ষেপ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি আইনগত দিক বলতে পারব না। এটা আইনজীবীরা জানেন। তবে অবশ্যই আপিল করা হবে। আশা করি এই সপ্তাহে আপিল ফাইল করা হবে।”
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুল কাইয়ুমি এসময় উপস্থিত ছিলেন।