ক্রিমিয়ার মুসলিম ঐতিহ্য মুছে ফেলার চেষ্টা করছে মস্কো

Slider সারাবিশ্ব

295187_160

 

 

 

 

৫০০ বছরের পুরনো চুনাপাথরের ভবনটি মোড়ানো ছিল কাঠের পাটাতন ও লম্বা লম্বা কাপড়ের টুকরায়। এতে ঢাকা পড়েছে জ্যামিতিক অলঙ্কার ও কুরআন শরিফের কালিগ্রাফি।

এর পাশেই পড়ে রয়েছে ইস্পাত-রডের ভারী বান্ডিলগুলো, যা খানদের জন্য নির্মিত আপাত ওজনহীন কিংবদন্তির প্রাসাদতুল্য ভবনের আঙ্গিনায় বেমানান মনে হয়। ১৭৮৩ সালে রাশিয়ার জাররা কৃষ্ণ সাগরের উপদ্বীপটি দখল করার পর চেঙ্গিস খানের বংশধরদের উৎখাত করেছিল।

মস্কো দ্বিতীয়বার ক্রিমিয়া দখলের চার বছর পর চলতি বছরের জানুয়ারিতে রাশিয়াপন্থী কর্তৃপক্ষ কমপ্লেক্সটির সবচেয়ে পুরনো ও সবচেয়ে পবিত্র অংশটুকু অর্থাৎ ১৫৩২ সালে নির্মিত বিগ খান মসজিদ পুনরুদ্ধারের উদ্যোগ নিয়েছে। পাশাপাশি তারা পুরো প্রাসাদ পুনরুদ্ধারের পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছে।

তবে বিশেষজ্ঞ, সমাজের নেতৃবৃন্দ ও ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা বলেছেন, পুনরুদ্ধারে কমপ্লেক্সটির আসল রূপ ধ্বংস হতে পারে। তারা বলেছেন, এটি ক্রিমিয়ান তাতার জনগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক পরিচয় মুছে ফেলার একটা ফন্দি। কারণ দুই লাখ ৫০ হাজার তাতার ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার অন্তর্ভুক্তির বিরোধিতা করেছিল।

নির্মাণ প্রকৌশলী ও ক্রিমিয়ার প্রাক অধিগ্রহণ সরকারের সাবেক কর্মকর্তা এডাম দাদকভ বলেছেন, ‘পুরো ভবন পুনরুদ্ধারের প্রকল্পটি একটি নীল নকশা’। তিনি বলেন, প্র্রসাদটি হারিয়ে যাবে।’ তারা যা নির্মাণ করছেন তা একটি নকল ভবন।

দাদকভ বলেন, পুনঃস্থাপনের কাজে নিয়োজিত এটিটিএ গ্রুপ আধুনিক স্থাপত্য নির্মাণে অসাধারণ এবং তারা যে উপকরণ ব্যবহার করে যেমন স্টিল ও কংক্রিট, তাতে নিশ্চিতরূপে ধ্বংস হবে ভঙ্গুর ভবনটি।

তারা ব্যবহার করবে মধ্যযুগীয় হস্তনির্মিত টাইলসের জায়গায় আধুনিক স্পেন নির্মিত আচ্ছাদন এবং পুরো কাঠের পাটাতনের পরিবর্তে সংযুক্ত পাথর। এ ব্যাপারে মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি কোম্পানিটি।
মস্কো কর্তৃক বহিষ্কৃত সম্প্রদায়ের নেতা মোস্তফা জেমাইলভ ফেসবুকে লিখেছেন, মসজিদটিতে এরই মধ্যেই যা করা হয়েছে, তা ভবনটির আসল রূপের আংশিক ক্ষতি। এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইউক্রেন কর্তৃপক্ষও।
সূত্র : আলজাজিরা

নানা অনুষ্ঠানে কসোভোর স্বাধীনতার বার্ষিকী উদযাপন
এপি

সারা দেশে দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সার্বিয়ার কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জনের দশম বার্ষিকী উদযাপন করছে কসোভোর মুসলমানরা। গত শনিবার রাজধানী প্রিস্টিনায় কসোভো বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ গায়িকা রিটা ওরার উন্মুক্ত সঙ্গীত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এই উৎসবের সমাপ্তি ঘটবে।

দিবসটি উদযাপন কর্মসূচির মধ্যে ছিল কসোভোর সরকার ও পার্লামেন্টের উদ্যোগে ভাবগম্ভীর নানা অনুষ্ঠান, রাজধানী প্রিস্টিনার ওপর দিয়ে প্যারাগ্লিডাস উড্ডয়ন এবং পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী কুচকাওয়াজ।

নয় বছর ধরে স্বাধীনতাযুদ্ধ চলাকালে জাতিগত আলবেনিয়দের ওপর সার্বিয়ার নৃশংস হামলা রোধে তার বিরুদ্ধে ন্যাটোর ৭৮ দিনব্যাপী বিমান হামলার পর ২০০৮ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি কসোভো স্বাধীনতা ঘোষণা করে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের প্রধান প্রধান সব শক্তিসহ বিশ্বের ১১৭টি দেশ কসোভোকে স্বীকৃতি প্রদান করেছে। দেশটি ইতোমধ্যে প্রায় ২০০ আন্তর্জাতিক সংস্থায় যোগদান করেছে।

সার্বিয়া শত শত কসোভোকে দেশটির সভ্যতার সূচিকাগার বলে গণ্য করে আসছে। দেশটি এখনো কসোভোর স্বাধীনতাকে মেনে নেয়নি, অঞ্চলটিকে তার ভূখণ্ড বলে দাবি করছে। সার্বিয়ার অবস্থানের প্রতি চীন ও রাশিয়া সমর্থন জানাচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পাঁচটি সদস্য দেশও কসোভোর স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেয়নি। বেলগ্রেড বলেছে, তারা কখনোই কসোভোর স্বাধীনতার স্বীকৃতি দেবে না।

এ দিকে গত মাসে মিত্রোভিসা শহরে একজন বিশিষ্ট সার্ব রাজনীতিককে হত্যার ঘটনায় দেশটির স্বাধীনতা উদযাপনে কালোছায়াপাত করেছে। এতে দেশটির সার্ব নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে আইনশৃঙ্খলাহীনতা ক্রমেই বাড়ার বিষয় প্রকাশ পেয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *