আজ প্রথম টি২০ দিয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই ম্যাচের টি২০ সিরিজ খেলতে নামবে বাংলাদেশ। ত্রিদেশীয় সিরিজের শিরোপা হাতছাড়া হওয়ার পর টেস্টে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হেরেছে বাংলাদেশ। তবে টি২০ সিরিজে বাংলাদেশকেই এগিয়ে রাখছেন অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।
সাকিবের পরিবর্তে নেতৃত্ব রিয়াদের কাঁধে পড়েছে। তিনি বুধবার বলেন, ‘আমি সবসময় বলি ঘরের মাটিতে আমরা যার বিরুদ্ধেই খেলি আমি আমাদের দলকে এগিয়ে রাখব। যদিও আমরা টেস্ট ও ওয়ানডেতে আশানুরূপ পারফর্মেন্স করতে পারিনি। আমরা ভেরি মাচ হোপফুল। আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারব এবং ভাল ক্রিকেট খেলেই ঘুরে দাঁড়াতে পারব।’ সাকিব না থাকা আগে থেকেই নিশ্চিত ছিল। এরপরও অধিনায়ক ঘোষণা করতে দেরি হয়েছে। এ দেরি নিয়ে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ জানান, ‘আমি ঠিক ওইভাবে জিনিসটা চিন্তা করিনি। দায়িত্ব এসেছে, চেষ্টা করব দায়িত্বটা ভালভাবে পালন করার। টি২০ শর্ট ফরমেটের ক্রিকেট। আপনি যদি স্কিলগুলো কাজে লাগাতে পারেন সেটা পর্যাপ্ত। আমি নিজের দায়িত্বটা পালন করার চেষ্টা করব।’
বাংলাদেশ দলে নতুন মুখের ছড়াছড়ি। তাদের নিয়ে রিয়াদ বলেন, ‘প্রত্যাশা যদি বলেন অবশ্যই, টি২০তে একটা কোয়েশ্চেন মার্ক আছে। ওই জিনিসগুলো নিয়ে ব্যক্তিগতভাবে মনে করি বেশি চিন্তা না করাই ভাল। নতুন মুখের কথা বললেন, তারা সবাই ওয়েল ডিজার্ভিং। বিপিএলে সবাই ভাল খেলেছে, আশাকরি সেই ফর্মটা এখানেও ধরে রাখবে।’ টি২০তে ছন্দ ধরে রাখা গুরুত্বপূর্ণ। সেটাই ধরে রাখতে চান রিয়াদ, ‘প্রথমে একটা কথা বলতে চাই টি২০ ক্রিকেট আলাদা একটা ফরমেট। ডিফারেন্ট বল গেম। যেভাবে পারফর্ম করছিলাম ঘরের মাটিতে ওই প্রত্যাশা আমরাই তৈরি করেছি সবার মনে। এবার সেই ফলটা দেখাতে পারিনি। আমার যেটা মনে হয় আমাদের টি২০ সামর্থ্যরে ওপর একটা প্রশ্নবোধক চিহ্ন আছে। এই সিরিজে একটা স্টেটমেন্ট দেয়ার আছে বাকি বিশ্বকে। এই সিরিজটা খুব গুরুত্বপূর্ণ আমাদের জন্য, আমাদের ক্রিকেটের জন্য। উই ওয়ান্ট টু মেইক এ স্টেটমেন্ট ইনশাল্লাহ।’ বিপিএলে স্বাধীনতা নিয়ে অধিনায়কত্ব করেছেন রিয়াদ। আন্তর্জাতিক ম্যাচে কী তা সম্ভব? এ নিয়ে রিয়াদ বলেন, ‘যেহেতু আমি দায়িত্ব পেয়েছি আমি আমার তরফ থেকে চেষ্টা করব। যেভাবে চেষ্টা করি প্লেয়ারদের কাছ থেকে বেস্ট আউটপুট বের করে নেয়ার। সেম জিনিসটাই চেষ্টা করব। আপনি বিপিএলের কথা বললেন, আমি সবসময় বিলিভ করি টি২০ ক্রিকেটে আপনি যদি প্লেয়ারদের মোটিভেট ও ফ্রিডমটা না দিতে পারেন পারফর্ম করার সুযোগ সেক্ষেত্রে অনেক কম। আমি চেষ্টা করব অফ দ্য ফিল্ড ও অন দ্য ফিল্ড সেম জিনিসটা। আমাদের দলে যেহেতু নতুন মুখ আছে বেশ কজন। ওদের ওপর যাতে কম প্রেসার দেয়া যায়। ওদের পারফর্ম করার সুযোগটা দেব। সেটা ছোট ইনফর্মেশনের মাধ্যমে হোক। উপস্থিত বুদ্ধির মাধ্যমে হোক। দলে বেশ কজন অভিজ্ঞ প্লেয়ার আছে। আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করব বেস্ট ক্রিকেটটা যেন খেলতে পারি।’
টি২০তে দ্রুতই সিদ্ধান্ত নিতে হয়। রিয়াদ সেই কাজ বিপিএলে করেও দেখিয়েছেন। সাফল্যও মিলেছে। এবার কী হবে? রিয়াদ জানান, ‘টি২০ ক্রিকেটে মূল জিনিসটি হলো ট্যাকটিক্যাল বিষয়গুলো ধরা। আমরা কোন ব্যাটসম্যান পার্টিকুলার সময়টায় কি খেলতে যাচ্ছে সেটা চিন্তা করা। একটা বোলার কি চিন্তা করছেন সেটা ঠিক করা। এগুলো নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা বলে, উপস্থিত বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে ওই জিনিসগুলো এক্সপোজ করা। ওই জিনিসগুলো আমরা সঠিকভাবে আমাদের স্কিল কাজে লাগিয়ে করতে পারি তাহলে আমার বিশ্বাস আমরা ভাল করব। আমাদের দলের যে কয়েকজন নতুন মুখ আছে তারা ক্যাপাবল। আামি খুব এক্সসাইটেড এই সুযোগটির জন্য। আমার মনে হয় সবাই খুব উদগ্রীব আছে। আমার মনে হয় আমরা বিগত কয়েক বছরে পারফর্ম করে যেভাবে আমাদের প্রত্যাশা তৈরি করেছি সেটা ধরে রাখা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটা জিনিস। আমরা চিন্তা ভাবনা করছি। আমরা মাঠে কতটুকু প্রয়োগ করতে পারি, স্কিলগুলো কিভাবে এক্সিকিউশন করতে পারি সেটার ওপরও নির্ভর করছে। আমি আমার দল নিয়ে বলতে পারি আমরা বেশ আত্মবিশ্বাসী এই সিরিজটি নিয়ে।’ টি২০ বিশ্বকাপকেও মাথায় রাখছেন রিয়াদ, ‘এখানে যারা ভাল করবে তাদের অবশ্যই (অন্য ফরমেটের খেলায়) নেয়ার সুযোগ থাকবে। যে কয়েকজন নতুন মুখ এসেছে তারা ওয়েল ডিজার্ভিং। এখান থেকে যারা ভাল করবে তাদের নিয়ে পরবর্তীতে সামনে আমাদের টি২০ বিশ্বকাপও আছে। এই প্রসেসিংটা স্টার্ট করা ভাল একটা ইতিবাচক দিক আমাদের দলের জন্য। আমার মনে হয় আমাদের একটা টি২০ ব্যালেন্স টিম ওয়েল টু ফাইন্ড আউট। যেহেতু আমরা সামনের দিকে এগোচ্ছি আমাদের এটা ফাইন্ড আউট করতে হবে।’ উইকেট নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। ত্রিদেশীয় সিরিজে এবং টেস্টে উইকেট ছিল আলোচনায়। রিয়াদ উইকেট নিয়ে বাড়তি চিন্তা করতে নারাজ, ‘আমি একটা জিনিস শুধু চিন্তা করছি, আপনি উইকেট নিয়ে যদি নিজের ওপর প্রেসার ক্রিয়েট করেন, তাহলে আপনার নিজের পারফর্মেন্সের জন্য আরও বেশি প্রেসার ক্রিয়েট হবে। এভাবে দলের কালেকটিভ পারফর্মেন্সের ওপরও প্রেসার ক্রিয়েট হবে। পিচ নিয়ে যদি এতো চিন্তা করেন তাহলে আমার মনে হয় না টিমের পারফর্মেন্সে কোন ভাল প্রভাব পড়বে। তো এই জিনিসগুলো সাইডে রেখে আমরা যদি আমাদের কাজ নিয়ে চিন্তা করি, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব উইকেট এসেস করতে পারি ওইটা আমাদের জন্য বেটার হবে।’
মুশফিক কব্জির চোটে পড়েছেন। এরপরও তার খেলার সম্ভাবনা অনেকটুকু দেখছেন রিয়াদ। তামিম চোট পেয়েছেন পিঠের পেশিতে। তামিমও সুস্থ হয়ে খেলতে পারেন আজ। তবে দুইজনের জন্যই অপেক্ষা করতে চান রিয়াদ। মুশফিক, তামিমের ইনজুরির জন্য ডট বল বেশি দেয়াটাও চিন্তার বিষয়। যেটি বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা বেশি করে থাকেন। সেই ডট বল নিয়ে চিন্তা আছে রিয়াদেরও। তিনি এ নিয়ে বলেছেন, ‘এটা ভাল একটা পয়েন্ট বলেছেন। টি২০তে ডট বলের পার্সেন্টেজ অনেক বেশি প্রভাব ফেলে। যত কম ডট বলের পার্সেনটেজ ওই ডট বলগুলো যদি সিঙ্গেল বা স্ট্রাইক রোটেডে মনোযোগ দিতে পারি তাহলে আমার মনে হয় অনেক বেটার হবে। কারণ টি২০ ক্রিকেটে যাদের কম ডট থাকে তাদের সফলতার হার বেশি থাকে। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’