হাউ’জ দ্যাট বলে চিৎকারটা বেশিক্ষণ টেনে নিতে হলো না। আম্পায়ার তুলে দিলেন তর্জনী। স্টাম্পের মাইক্রোফোনের আওয়াজ শোনা যাচ্ছিল পরিষ্কার। ‘হোয়াহ’ বলে একটা কথা গেল মনে হয়, যার মানে কী কে জানে। জয়ের চেয়েও যেন একটা বুকে চেপে বসা পাথর সরে যাওয়ার স্বস্তি। অবশেষে ২৫ বছরের অপেক্ষা যে ঘুচল ভারতের। টেস্টে না পারলেও ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে রীতিমতো নাস্তানাবুদ করে সিরিজ জয় নিশ্চিত করে ফেলল বিরাট কোহলির দল।
ছয় ম্যাচ সিরিজের প্রথম তিনটা জিতেই কাজ প্রায় সেরে রেখেছিল ভারত। বৃষ্টির কারণে চতুর্থ ম্যাচটার আয়তন কমে না এলে সেটার ফল দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষেই যেত কি না, তা জোর দিয়ে বলা যাবে না। গত ম্যাচে প্রকৃতির বাগড়া ভারতের অপেক্ষা বিলম্বিত করলেও কাল পোর্ট এলিজাবেথে স্বাগতিকেরা আর প্রতিরোধই গড়তে পারল না। বিদেশের মাটিতে রোহিত শর্মার বিরল সেঞ্চুরির সুবাদে ভারতের ৭ উইকেটে তোলা ২৭৪ রানের জবাবে দক্ষিণ আফ্রিকা অলআউট ২০১ রানে।
পান্ডিয়ার সরাসরি থ্রোয়ে রানআউট হওয়ার আগে হাশিম আমলা করেছেন ৭১ রান। দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসে আর কেউ ৪০-এর ঘরেই যেতে পারেননি। যাদব-চাহাল জুটির বোলিংয়ে আবার বেহাল প্রোটিয়ারা। ৫ ম্যাচে ১৬ উইকেট নিয়েছেন যাদব। সিরিজে দ্বিতীয়বারের মতো নিলেন ৪ উইকেট। তাতেই নিশ্চিত হয়ে গেল দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ভারতের প্রথম সিরিজ জয়। এর আগে ভারত দক্ষিণ আফ্রিকায় ৮টি ওয়ানডে সিরিজ বা টুর্নামেন্ট খেলে একবারও বিজয়ীর ট্রফি হাতে নিতে পারেনি।
শুধু ভারত কেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় ৫ বা এর বেশি ম্যাচের দ্বিপক্ষীয় সিরিজ মাত্র একটি দল জিতে আসতে পেরেছিল। ১৯৯৬-৯৭ ও ২০০১-০২ মৌসুমের সেই সিরিজ দুটির জয়ী দলের নাম অস্ট্রেলিয়া।
আর তাই জয়ের পর কোহলির সেই ট্রেডমার্ক উদ্যাপন দেখা গেল আবার। পেছনের দিকে ধনুকের মতো বেঁধে মুষ্টিবদ্ধ দুই হাতে গর্জন করে উঠলেন কোহলি। ভারতের খেলোয়াড়েরা ছুটলেন স্টাম্প তুলে নিতে। ১১ জন খেলোয়াড় ৬ স্টাম্প, আগে আসিলে আগে পাইবেন তো হবেই। কিন্তু বেরসিক আম্পায়ার স্টাম্প নিতেই দিলেন না। এখন তিনটি স্টাম্পেই প্রযুক্তিগত ব্যাপার-স্যাপার থাকে হয়তো। এমনকি ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান রোহিতও একটা শেষ চেষ্টা নিয়েছিলেন। যদি মন গলে। তাতেও কাজ হয়নি।
স্মারক হিসেবে স্টাম্প রেখে দিতে না পারলেও এই ট্রফিটা ভারত বেশ যত্ন করে সাজিয়ে রাখবে, সন্দেহ নেই!