জাহিদ হাসান। শক্তিমান অভিনেতা। দীর্ঘদিন ধরে ছোটপর্দায় দাপুটে বিচরণ তার। সে সঙ্গে নির্মাতা হিসেবেও সফল। অভিনেতা জাহিদ হাসান ছোট পর্দার পাশাপাশি বড়পর্দাতেও বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন। এ মাধ্যমটিতে তিনি অনেক আগেই নাম লেখান।
সেটা ১৯৮৮ সালের কথা। পরিচালক আবদুল লতিফ বাচ্চুর ‘বলবান’ ছবিতে তিন নায়কের একজন ছিলেন তিনি। এরপর ‘জীবনসঙ্গী’, ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’, ‘মেড ইন বাংলাদেশ’, ‘আমার আছে জল’, ‘প্রজাপতি’, ‘হালদা’ নামের ছবিগুলোতে অভিনয় করেছেন। সবশেষ গত বছরের ডিসেম্বরে তার অভিনয়ে অভিনেতা-নির্মাতা তৌকীর আহমেদ পরিচালিত ‘হালদা’ ছবিটি মুক্তি পায়। বর্তমানে জাহিদ হাসান ভারতের বাংলা ও হিন্দি চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেত্রী রাইমা সেনের বিপরীতে ওপার বাংলার একটি ছবিতে কাজ করছেন। ছবির নাম ‘সিতারা’। বর্তমানে এ ছবির শুটিংয়ে তিনি ভারতের কোচবিহারে আছেন। সেই শুটিং স্পট থেকে মুঠোফোনে মানবজমিনকে বলেন, পাঁচদিন হলো এখানে আসা। বেশ ভালোভাবে কাজ এগিয়ে চলছে। আমার বিপরীতে রাইমা সেন অভিনয় করছেন। চরিত্রটি একটু ভিন্ন ধরনের। বলতে গেলে ছবিতে রাইমা সেনের সঙ্গে আমার বেশিরভাগ দৃশ্য আছে। আমার চরিত্রটি নিয়ে এখন বেশি কিছু বলতে চাই না। ছবিটি আবুল বাশারের উপন্যাস ‘ভোরের প্রসূতি’ অবলম্বনে তৈরি হচ্ছে। এটি পরিচালনা করছেন কলকাতার পরিচালক আশীষ রায়। জাহিদ হাসান আরো বলেন, উপন্যাসটা পড়ে আমার খুব ভালো লেগে যায়। পরে আমাকে পরিচালক স্ক্রিপ্ট পাঠান, এরপর তো শুটিং শুরু। ভারতের কোচবিহারের মেখলিগঞ্জের পাশাপাশি কলকাতায়ও এ ছবির কাজ হবে। এতে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের নানা ঘটনা থাকবে। ওপারের অভিনেত্রী রাইমা সেনের সঙ্গে প্রথমবার কাজ করছেন। তার সম্পর্কে জানতে চাইলে জাহিদ হাসান এককথায় বলেন, খুব ভালো একজন অভিনেত্রী রাইমা। তার সঙ্গে কাজ করে বেশ ভালো লাগছে। গল্পে রাইমা ও আমার চরিত্রটা প্রেমিক প্রেমিকার কি-না তা দেখতে হলে সিনেমা হলে যেতে হবে। এদিকে সরকারের ২০১৬-১৭ অর্থবছরে অভিনয়শিল্পী বিভাগে কয়েকজন সেরা করদাতার তালিকায় রয়েছে জাহিদ হাসানের নাম। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সঠিক পথে দেশের জন্য কোনো কিছু করলে সম্মান পাওয়া যায়। সেই সম্মানই আমি পেয়েছি। জীবদ্দশায় সেরা করদাতার সম্মান পেয়েছি, একজন অভিনেতা হিসেবে এটা আমার বড় পাওয়া। সবশেষ জাহিদ হাসান ইফতেখার চৌধুরীর ‘বিজলি’ এবং মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ‘শনিবার বিকেল’ নামের নতুন দু’টি ছবিতে অভিনয় করেছেন। ‘শনিবার বিকেল’ ছবির কারণে কাঁচা-পাকা দাড়িসহ বেশ কিছুদিন তাকে দেখা গেছে। ছবিটি নিয়ে জাহিদ হাসান বলেন, এর কাজ শেষ হয়েছে। ছবিতে আমার চরিত্রের নাম শহীদুল। একজন ব্যবসায়ী। যে মেডিকেলের নানা সামগ্রী আমদানি করে এবং মানুষকে ভালোবাসে। কিছু ঘটনার কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মুসলমানদের নানাভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে। এ খবর শুনে কষ্ট পায় সে। সবাইকে বোঝাতে চেষ্টা করে যে, সব মুসলিম এমন নয়। বিশ্বে মুসলিমরা যেন মাথা উঁচু করে সম্মানের সঙ্গে বেঁচে থাকতে পারে এটাই ছবির গল্পে আমার অভিনীত চরিত্রটির চাওয়া থাকে। ছবির কাজ শেষ হয়েছে। শুধু অভিনেতা না, পরিচালক হিসেবেও নিয়মিত কাজ করছেন জাহিদ হাসান। ছোটপর্দায় তার পরিচালিত বেশ কয়েকটি খন্ড ও ধারাবাহিক নাটক রয়েছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ‘নীলের বউ রাশি’, ‘মটর সাইকেল’, ‘গল্প নয় সত্যি’, ‘এক টাকার ব্যাপার’, ‘টো টো কোম্পানি’, ‘সুইট মানে মিষ্টি’, ‘সাহেব বাবুর বৈঠকখানা’ ইত্যাদি। মঞ্চ, টেলিভিশন, চলচ্চিত্র অভিনেতা এবং নাট্যনির্মাতা-এরপর জাহিদ হাসানের গন্তব্য কোথায় জানতে চাইলে বলেন, উত্তরটি আসলে আমার কাছে নেই। দেখা যাক সামনে কি আছে।