বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারাগারে যাওয়ার ঘটনাকে রাজনীতির জন্য টার্নিং পয়েন্ট বলে অভিহিত করেছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানোর প্রতিক্রিয়া কী হবে তা সরকার ভাবতে পারছে না। এর প্রতিক্রিয়া হবে অত্যন্ত ব্যাপক ও গভীর। গতকাল সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, খালেদা জিয়া বিএনপির চেয়ারপারসন, একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তাকে যেভাবে কারাগারে রাখা হয়েছে, তাকে বলতে হয় নির্জন কারাবাস। সেখানে আশপাশে কোনো মানুষজন নেই। একটি পরিত্যক্ত ভবনে তাকে রাখা হয়েছে। এটাকে স্বাভাবিক বলা যায় না। তাকে জনবিচ্ছিন্ন করার জন্য এ ব্যবস্থা করা হয়েছে। সরকারের এই আচরণের তীব্র নিন্দা জানাই। সরকার এই আচরণ পরিহার করতে পারত। তিনি বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে খালেদা জিয়া যেসব সুযোগ-সুবিধা পাবেন, তাকে তা দিতে হবে। তাকে ডিভিশন দিতে হবে। কিন্তু তাকে ডিভিশন দেওয়া হয়নি। এটি মানবাধিকার ও সংবিধানের লঙ্ঘন। খালেদা জিয়ার মামলা প্রসঙ্গে মওদুদ বলেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আইনে মামলা করা হলেও বিশ্বাস ভঙ্গের অভিযোগে দণ্ডবিধির ৪০৯ নম্বর ধারায় তাকে সাজা দেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বিশ্বাস ভঙ্গের অভিযোগে তাকে এই সাজা দেওয়া হয়েছে। খালেদা জিয়ার এই কারাবরণ মিথ্যা অভিযোগের মামলায়, ভুয়া অভিযোগের ওপর ভিত্তি করে। এটাই হবে বর্তমান রাজনীতির জন্য টার্নিং পয়েন্ট। সরকার একটি পলিটিক্যাল ব্লান্ডার করতে চাচ্ছে। এটি পলিটিক্যাল ব্লান্ডার অব দ্য পার্ট অব দ্য গভর্নমেন্ট। এর প্রতিক্রিয়া দেশের মানুষ আগামী নির্বাচনে ব্যালটের মাধ্যমে দেবে। তিনি আরও বলেন, এতদিন সরকার বলছিল বিএনপি নেতারা নাকি হাজার হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি করেছে। এখন আমরা কী দেখলাম, বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মাত্র দুই কোটি টাকার মামলা দেওয়া হয়েছে। আবার সেই টাকা রাষ্ট্রেরও নয় এবং সেই টাকা ব্যাংকে আছে। এখন তা বেড়ে ৬ কোটি টাকা হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে আজ রবিবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সারা দেশে সব আইনজীবী সমিতিতে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচি পালনের ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে এ সময় আইনজীবী ফোরামের নেতা অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, বদরুদ্দোজা বাদল, নিতাই রায় চৌধুরী, সানাউল্লাহ মিয়া, উম্মে কুলসুম রেখা, শিরীন সুলতানা, গাজী কামরুল ইসলাম সজল, রুহুল কুদ্দুস কাজল, বি এম সুলতান মাহমুদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।