প্রতিরক্ষার দায়িত্বে থাকা বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীকে অন্য কাজে যুক্ত করার ক্ষেত্রে আপত্তি জানিয়েছেন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান।
“যার যেখানে বিচরণ, তাকে তার বিচরণ ক্ষেত্রের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখা যৌক্তিক,” বুধবার এক আলোচনা অনুষ্ঠানে বলেছেন তিনি।
রাজধানীর সিবিসিবি সেন্টারে ইনস্টিটিউট ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট আয়োজিত ‘আদিবাসীদের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ শীর্ষক গণশুনানিতে মিজানুর রহমান এই মত প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, “আমাদের সশস্ত্র বাহিনী করপোরেট বডি হয়ে যাচ্ছে। আর এই করপোরেট বডির স্বার্থ রক্ষার্থে কোনো কোনো ক্ষেত্রে যে ভূমি অধিগ্রহণ করা হচ্ছে না, তা-ও কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারবে না।”
পার্ব্ত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির ১৭ বছর পূর্তিতে পাহাড়ে সেনাবাহিনীর অবস্থান ও কার্যক্রম নিয়ে জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমার (সন্তু লারমা) প্রশ্ন তোলার একদিন পরই মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের এই বক্তব্য এল।
তবে বাংলাদেশে সশস্ত্র বাহিনী নিয়ে নিজের গর্ববোধের কথা জানিয়ে মিজানুর বলেন, সরকার যখন তাদের জন্য অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র ও যুদ্ধবিমান কেনে, সমুদ্রসীমা সুরক্ষিত রাখতে তাদের জন্য যখন সাবমেরিন কেনার উদ্যোগ নেওয়া হয়, তাতে সাধুবাদ।
“কিন্তু যখন দেখি, আমাদের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার দায়িত্বে থাকা সশস্ত্র বাহিনী ব্যাংক গড়ছে, গণপূর্ত বিভাগের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ঠিকাদারি কাজে লিপ্ত হচ্ছে, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির জন্য ব্যস্ত, তখন মনে ভয় জাগে, অদূর ভবিষ্যতে হয়ত আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বেসরকারি সশস্ত্র বাহিনী প্রতিষ্ঠা করতে হবে কি না।”
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে নিজেদের ওপর নির্যাতন-নিপীড়নের চিত্র তুলে ধরেন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সাত ব্যক্তি। নির্যাতনের পরও অধিকার আদায়ের সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান তারা।
অনুষ্ঠানে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতা রানা দাশগুপ্ত, ঐক্য ন্যাপ নেতা পঙ্কজ ভট্টাচার্য উপস্থিত ছিলেন।