মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ৫০ লক্ষাধিক অবৈধ অভিবাসীকে বৈধতা প্রদানের নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে ৩রা ডিসেম্বর মামলা করেছেন ১৭টি অঙ্গরাজ্যের একটি জোট। টেক্সাসের অস্টিন সিটির ব্রাউন্সভিলেতে ফেডারেল ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে দায়েরকৃত এ মামলায় বাদী হয়েছে টেক্সাসসহ ১৭ অঙ্গরাজ্য মিলে গঠিত একটি জোট। মামলায় অবিলম্বে ঐ নির্বাহী আদেশকে বেআইনি ঘোষণার দাবি জানানো হয়েছে। আদালত মামলাটি নথিভুক্ত করেছেন।
মামলায় বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ওবামা তার সাংবিধানিক ক্ষমতা লঙ্ঘন করে নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন। এর ফলে এসব অঙ্গরাজ্যকে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়ের সম্মুখীন করেছেন। জোটের অপর রাজ্যগুলো হচ্ছে আলাবামা, জর্জিয়া, আইডাহো, ইন্ডিয়ানা, ক্যানসাস, লুইঝিয়ানা, মেইন, মিসিসিপি, মন্টানা, নেব্রাস্কা, নর্থ ক্যারলিনা, সাউথ ক্যারলিনা, সাউথ ডেকটা, ইউটাহ, ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া এবং উইসকনসিন। ডেমক্র্যাট প্রেসিডেন্টের নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে রিপাবলিকানদের এটি প্রথম আইনগত চ্যালেঞ্জ।
এই জোটের পক্ষে টেক্সাসের এটর্নি জেনারেল (রাজ্যের আইনমন্ত্রী) গ্রেগ এ্যাবোট মামলার পর মিডিয়াকে বলেন, কংগ্রেসে পাস হওয়া বিল অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণের পরিবর্তে প্রেসিডেন্ট ওবামা নিজেই অভিবাসন আইন তৈরী করেছেন-যা সংবিধানের পরিপন্থি।
উল্লেখ্য, ২৭ বছরের ব্যবধানে অভিবাসন সমস্যার সমাধানে প্রেসিডেন্ট ওবামা বারবার কংগ্রেসকে আহবান জানিয়েছেন মানবিকতাকে গুরুত্ব দিয়ে একটি বিল পাশের জন্যে। সিনেট একটি বিল বছর দেড়েক আগে ‘কমপ্রিহেনসিভ ইমিগ্রেশন রিফর্ম বিল’ পাশ করলেও রিপাবলিকান শাসিত কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদ ওবামার আহবানে সাড়া দেয়নি। এ কারণে নভেম্বরের ২০ তারিখে ওবামা নির্বাহী আদেশ জারি করেছেন। এই আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ৫০ লাখ অবৈধ অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বষ্কিার করা যাবে না। অবশিষ্ট ৫০ লাখকে বহিষ্কার প্রক্রিয়া জোরদারের কোন স্পষ্ট নির্দেশ নেই ঐ আদেশে।
এ অবস্থায় মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ-পশ্চিমের রাজ্যসমূহে অবৈধভাবে প্রবেশের প্রবণতা বাড়বে এবং নির্বাহী আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে যারা ওয়ার্ক পারমিট পাবেন, তাদের জন্যে অঙ্গরাজ্যের বাজেট বৃদ্ধি করতে হবে। মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, নতুন করে বিদেশীদের আগমন ঠেকাতে সীমান্ত রক্ষীসহ অভ্যন্তরীণ প্রশাসনকে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করতে অর্থ-ব্যয় বাড়বে। শুধু তাই নয়, অবৈধ অভিবাসীদের স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষা খাতেও ব্যয় বাড়বে।
এই নির্বাহী আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে অর্ধ লক্ষাধিক বাংলাদেশীও ওয়ার্ক পারমিট পাবেন। ওয়ার্ক পারমিটের পথ ধরে তারা অভিবাসনের মর্যাদা ঢেলে সাজানোর সুযোগ পাবেন বলে মনে করা হচ্ছে।