বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এবং সবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের ছেলে অমিতসহ বিএনপির অর্ধশতাধিক নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে সাদা পোশাকে পুলিশ তুলে নিয়েছে বলে অভিযোগ করে বিএনপি। গত রাত সাড়ে ৯টায় গুলশানে পুলিশ প্লাজার সামনে থেকে দলের এই নীতিনির্ধারককে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় বলে জানান বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ। এ নিয়ে রাতে তাৎণিক নয়াপল্টন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী।
গয়েশ্বর রায়ের গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে তাকে নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।
গয়েশ্বর রায়ের ব্যক্তিগত মাইক্রোবাসে থাকা অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ বলেন, গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসন কার্যালয় থেকে দলীয় কর্মসূচি শেষ করে বাসার দিকে ফিরছিলেন গয়েশ্বর রায়। আমি নিজেও ওই গাড়িতে ছিলাম। গুলশান থেকে পুলিশ প্লাজার সামনে এগোতেই সাদা পোশাকের ডিবি পুলিশ গয়েশ্বরের গাড়ির সামনে আড়াআড়ি করে আরেকটি মাইক্রোবাস রাখে। ১০-১২ জন ডিবি পুলিশ সদস্য এ সময় গয়েশ্বর রায়কে বলেন, স্যার আমাদের সাথে যেতে হবে। পরে তাকে তাদের মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে ডিবি কার্যালয়ের দিকে নিয়ে যায়। আদৌ ডিবি কার্যালয়ে গিয়েছে কি না জানি না। তবে এ ব্যাপারে পুলিশের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলায় রায়ের তারিখ ৮ ফেব্রুয়ারি নির্ধারণের পর দলের নেতাকর্মীদের রাজপথে সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন গয়েশ্বর রায়। খালেদা জিয়ার সাজার রায় হলে সরকার পতনের আন্দোলনের হুমকিও দিয়েছিলেন বিএনপির এই নেতা।
তরিকুলের ছেলে অমিত গ্রেফতার
বিএনপির কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের ছোট ছেলে অনিন্দ্য ইসলাম অমিতকে গত রাতে ডিবি পুলিশ গ্রেফতার করেছে। রাত ১২টায় অমিতের শান্তিনগরের বাসায় ডিবি পুলিশের একটি দল তাকে আটক করে। এ সময় তারা পুলিশের লোক বলে পরিচয় দিয়ে তাদের সাথে যেতে বলে। পরিবারের লোকজন বিস্তারিত জানতে চাইলে কোনো জবাব দেয়নি ডিবি পুলিশ। এরপর তাকে নিয়ে চলে যায়।
আটক ৬৯ : দুই মামলার প্রস্তুতি
এ দিকে রাজধানীর হাইকোর্ট এলাকায় পুলিশের প্রিজন ভ্যানে হামলা ও ছাত্রদলের দুই কর্মীকে ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনায় ৬৯ জনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় শাহবাগ থানায় পৃথক দু’টি মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। দুই মামলায় আটক হওয়া ৬৯ জনসহ বিএনপির শীর্ষ নেতাকর্মীদের অনেককেই আসামি করা হবে। পুলিশ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মারুফ হোসেন সরদার বলেন, ‘মামলার প্রস্তুতি চলছে। হামলার পর ৬৯ জনকে আটক করা হয়েছে। হামলায় অংশ নেয়া অন্য আসামিদেরও গ্রেফতারে অভিযান চালানো হচ্ছে।’
পুলিশ সূত্র জানায়, হামলার পর শাহবাগ ও রমনা থানা পুলিশসহ গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা হাইকোর্ট এবং আশপাশ এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রথমে ২২ জনকে আটক করেন। পরে সন্ধ্যায় আরো ৪৭ জনসহ মোট ৬৯ জনকে আটক করা হয়। আটক ব্যক্তিদের যাচাই-বাছাই করে আদালতে পাঠানো হবে।