জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দখল ও হরণের নীতি বাস্তবায়ন করতে মাইনাস ওয়ান ফর্মুলার নীল নকশা এঁকেছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
রিজভী বলেছেন, খালেদা জিয়াকে মাইনাস করে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না। আর বিএনপিকে মাইনাস করে দেশে কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না।
অন্যদিকে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে রক্ষা করতে গিয়ে দলটি নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ।
বিএনপির নেতাদের উদ্দেশে হাছান মাহমুদ বলেছেন, আপনাদের কাছে কোনটা বড়? বেগম জিয়া নাকি বিএনপি? কোনটা আপনাদের কাছে মুখ্য। সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনাদের।
সোমবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এবং জাতীয় প্রেসক্লাবে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে এক আলোচনা সভায় হাছান মাহমুদ এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ২০১৪ সালের মতো নির্বাচন এ দেশে আর করতে পারবে না জেনে নতুন ফর্মুলা বাস্তবায়নে পরিকল্পিতভাবে এগোচ্ছে সরকার। দেশে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েমের পথের কাঁটা হলেন বেগম খালেদা জিয়া, জিয়া পরিবার ও বিএনপি। বেগম খালেদা জিয়াকে মাইনাস করতে পারলে সে পথের কাঁটা দূর হয়ে যায়। তাই বেগম জিয়াসহ বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মামলা দেয়া হচ্ছে এবং তাড়াহুড়ো করে রায়ের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এর আসল উদ্দেশ্য আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন। জনগণের আর বুঝতে বাকি নেই এসব করা হচ্ছে বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা এক/এগার থেকে শিক্ষা নেননি। যদি নিতেন তাহলে রাজনীতির এ বিপজ্জনক খেলায় মেতে উঠতেন না। আমি স্পষ্ট বলে দিতে চাই দুঃশাসনের কালো রাত শেষ হয়ে এসেছে। আদালতের ঘারে বন্দুক রেখে বেগম জিয়ার মামলা নিয়ে সরকার কোনো হীন পরিকল্পনা করে থাকলে শেখ হাসিনার সরকার নিজেদের পতন থেকে আত্মরক্ষা করতে পারবে না। দেশের মানুষ মাইনাস ওয়ান ফর্মুলা বাস্তবায়নকারীদের প্রতিরোধে অনড় প্রস্তুতি গ্রহণ করে আছে। বেগম জিয়া, তারেক জিয়াকে মাইনাস করে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না। আর বিএনপিকে মাইনাস করে দেশে কোনো নির্বাচন হতে দেয়া হবে না।
হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির নেতারা মাঠ গরম করছে। টেলিভিশনের পর্দা গরম করছে। টকশোর পর্দা ফাটিয়ে দিচ্ছে। আদালতকে হুমকি দিচ্ছে। বেগম জিয়ার শাস্তি হবে কি-না সেটা আদালতে জানে। তারা বলে শাস্তি হলে আগুন জ্বলবে। তাদের এসব বক্তব্যের জন্য আদালত ব্যবস্থা নেবেন বলে আশা করি।
আদালত সম্পূর্ণ স্বাধীন দাবি করে আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, সরকারের মন্ত্রী এমপিদের আদালতের কাছে ক্ষামা চাইতে হয়েছে। কেউ জেলও খেটেছে। কিন্তু বেগম জিয়া আদালতকে হেনস্তা করেছে। দেশে থেকে বারবার সময় নিয়েছে। দেশে থেকে এভাবে বারবার আদালতের কাছে সময় নেওয়ার রেকর্ড মনে হয় নেই।
বিএনপির নেতাদের ডাকে কোনো কর্মী মাঠে আসবে না দাবি করে তিনি বলেন, যারা আন্দোলনের ডাক দিয়ে এসি রুমে বসে হিন্দি সিনেমা দেখে তাদের ডাকে কোনো কর্মী মাঠে আসবে না। বিএনপির নেতাদের এসব তর্জন গর্জন বর্ষাকালের ব্যাঙের ডাকের মতো। বিএনপির জন্য এখন রাজনীতিতে বর্ষাকাল।
বিএনপি খালেদা জিয়ার রায় নিয়ে দেশে কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাইলে তা জনগণ প্রতিহত করবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন হাছান মাহমুদ।