প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দীর্ঘ রোহিঙ্গা সংকটের অবসানের জন্য বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারের নাগরিকদের দ্রুত প্রত্যাবাসন বিষয়ে আজ আবারো চাপ সৃষ্টি করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন কার্যক্রম দ্রুত শুরু করতে চাই।’
আজ বৃহস্পতিবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর তেজগাঁওস্থ কার্যালয়ে বাংলাদেশে নবনিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রেনে হোলেস্টেইন সৌজন্য সাক্ষাতে এলে শেখ হাসিনা একথা বলেন।
বৈঠকের পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
প্রেস সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও সুইস দূত দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে, বিশেষ করে অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং বাংলাদেশে সুইস প্রেসিডেন্টের আসন্ন সফর নিয়ে আলোচনা করেন।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুও আলোচনায় উঠে এসেছে।
সুইস রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনিও সুইস প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতের অপেক্ষায় রয়েছেন।
সরকারের বিভিন্ন খাতের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, তৃণমূলের উন্নয়ন এবং গ্রাম্য জনসাধারনের উন্নয়নই তাঁর সরকারের লক্ষ্য।
দেশের আর্থসামাজিক অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার মূল্যস্ফীতি দুই অংকের ঘর থেকে এক অংকে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে।
সরকার প্রধান বলেন, বঙ্গবন্ধু সুইজারল্যান্ড খুব পছন্দ করতেন এবং স্বাধীনতার পর তিনি বাংলাদেশকে প্রাচ্যের সুইজারল্যান্ড হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন।
বৈঠকে সুইস রাষ্ট্রদূত বলেন, এত বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় প্রদান একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ এবং বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসনের পরে রাখাইন রাজ্যে নিরাপদ এবং শান্তিপূর্ণ অবস্থা চায় তার দেশ।
এ প্রসঙ্গে রেনে হোলেস্টেইন উল্লেখ করেন, এই বিষয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে সংহতি প্রকাশের জন্যই সুইস প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ সফর করবেন।
তিনি বলেন,‘আমাদের রাষ্ট্রপতির সফর দু’দেশের মধ্যে বিশেষ করে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ ও কৃষি ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে।
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সুইস বিনিয়োগ বৃদ্ধির প্রসংগ উল্লেখ করে সুইস রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের প্রশংসা করে বলেন, তারা বিনিয়োগের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য অনেক কাজ করেছেন।
নতুন রাষ্ট্রদূত তৎকালিন সুইস রাষ্ট্রপতিকে লেখা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি চিঠির কপি প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন। ১৯৭২ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু তাঁর চিকিৎসাকালীন সুইস সরকারের আতিথিয়তায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এই চিঠিটি লিখেছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।