বিয়ের বয়সের ক্ষেত্রে ১৬ নয় ১৮ বছরই জয়যুক্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি। তিনি বলেছেন, আমি মনে করি ১৮ বছর পর্যন্ত একজন শিশু। গণমাধ্যমের প্রচারসহ ব্যাপক আলোচনার ফলে বিয়ের বয়সের ক্ষেত্রে ১৬ নয় ১৮ বছরই জয়যুক্ত হয়েছে। তবে সমাজের কিছু জটিল সমস্যা সমাধানে আইনে ক্লজ (ধারা) যুক্ত হতে পারে।
আজ বুধবার উইমেন জার্নালিস্টস নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ আয়োজিত ‘বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে গণমাধ্যমের ভূমিকা’ বিষয়ক কর্মশালার উদ্বোধনী পর্বের প্রধান অতিথি হিসেবে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বাসী। আমার মনে হয়, প্রধানমন্ত্রী বিয়ের ক্ষেত্রে বয়সের বিষয়টি সঠিকভাবে চিন্তাভাবনা করবেন।
জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত কানাডিয়ান হাইকমিশনার ক্রিস্টিয়ান টার্ডিফ। অতিথি আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভোরের কাগজ–এর সম্পাদক শ্যামল দত্ত, জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল ইউএনএফপিএর বাংলাদেশ প্রতিনিধি আর্জেন্টিনা মাতাভেল পিক্কিন, ইউএন উইমেনের আবাসিক প্রতিনিধি ক্রিস্টাইন হান্টার, ইউনিসেফের উপপ্রতিনিধি লুইস মভোনো এবং জাতীয় প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন।
কর্মশালা সঞ্চালনা করেন উইমেন জার্নালিস্টস নেটওয়ার্ক বাংলাদেশের সমন্বয়কারী আঙ্গুর নাহার।
কর্মশালার উদ্বোধনী পর্বে মন্ত্রিসভায় বিয়ের বয়স কমানোর আলোচনায় প্রতিমন্ত্রীর ভূমিকা কী ছিল বা এখন তিনি ১৬ না ১৮ বছরের পক্ষে—এসব নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেন গণমাধ্যমের কর্মীরা।
এসব প্রশ্নের উত্তরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমার মনে হচ্ছে আমি কাঠগড়ায় বসে আছি। সবাই প্রশ্ন করছেন। তবে সত্য কথা, বাল্যবিয়ে বন্ধ করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। তবে সরকার যেভাবে কর্মসূচি পরিচালনা করছে, তাতে বাল্যবিয়ে বন্ধ করতে ২০৪১ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে না।
মন্ত্রিসভায় বয়স কমানোর বিষয়টি উত্থাপন প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমার মন্ত্রণালয় থেকে যে খসড়া মন্ত্রিসভায় উত্থাপন করা হয় তাতে মেয়েদের ন্যূনতম বিয়ের বয়স ১৮ এবং ছেলেদের ২১ বছরই ছিল। ক্যাবিনেট শক্তিশালী জায়গা। সেখানে উচ্চপর্যায়ের মন্ত্রীরা থাকেন। বিভিন্ন দিক নিয়ে কম–বেশি সবাই আলোচনা করেন। একপাশ বেশি হয়ে গেলে তখন আর অন্য পাশের কিছু করার থাকে না। আর এখন আমার যে ভূমিকা রাখার কথা, যেটা সঠিক মনে করছি, তা করার চেষ্টা করছি।
বিয়ের ক্ষেত্রে বয়স প্রমাণে নোটারি পাবলিকের দেওয়া সনদ বাতিল করা, শাস্তির পরিমাণ বাড়ানোসহ আইনের অন্যান্য দিক তুলে ধরেন প্রতিমন্ত্রী।
বাল্যবিবাহ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমার বাসায় কাজ করত যে মেয়েটি, সে ১৮ বছর হওয়ার আগেই একজন বিবাহিত পুরুষকে বিয়ে করবে, তাই সে আমার বাসা থেকে চলে যায়। তারপর আমি যখন বলতে গেলাম তখন বলে, আমি এখন আর আপনার বাসায় থাকি না। এখন আর আপনি বলার কে। এছাড়া আমার এলাকায় বাল্যবিয়ে দিতে না পেরে অন্য এলাকায় নিয়ে মেয়েদের বিয়ে দেওয়া হচ্ছে।