ঢাকা: পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) পদে নতুন কেউ দায়িত্বে আসছেন, নাকি বর্তমান আইজিপির মেয়াদ বাড়ানো হবে—এ নিয়ে এখন জোর আলোচনা চলছে। বর্তমান আইজিপি এ কে এম শহীদুল হকের নিয়মিত চাকরির মেয়াদ ৩১ জানুয়ারি শেষ হচ্ছে। তাই যে কোন সময় এই শীর্ষ পদে নিয়োগ দেয়া হতে পারে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, স্বাভাবিক নিয়মেই আইজিপি নিয়োগ দেওয়া হবে। তবে এখনো কোনো কিছু চূড়ান্ত হয়নি।
পুলিশ বাহিনীতে চুক্তিভিত্তিক হিসেবে আইজিপি নিয়োগের নজির থাকলেও এবার তা যে হচ্ছে না, সেটা মোটামুটি স্পস্ট। বর্তমান আইজিপি নিজেই তার আভাস দিয়েছেন। ৬ জানুয়ারি পুলিশ সদর দপ্তরে ‘পুলিশ সপ্তাহ-২০১৮’ উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নিজ দায়িত্বের মেয়াদ শেষ হওয়ার বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘যাবার আগে আরেকবার আসব আপনাদের সামনে।’ এ কে এম শহীদুল হক ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর এই পদে যোগ দিয়েছিলেন।
পুলিশ সদর দপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, নতুন আইজিপি কে হচ্ছেন তা নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি সদর দপ্তরের কাজকর্মেও গতি কমে গেছে। সবাই তাকিয়ে আছেন পরবর্তী আইজিপির দিকে। বড় ধরনের সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে কেউ ঝুঁকি নিতে চাইছেন না। পুলিশ সপ্তাহের অনুষ্ঠানে দেখা গেছে, আইজি হিসেবে আলোচনায় যেসব কর্মকর্তার নাম শোনা যাচ্ছে, সবার নজরও তাঁদের দিকে।
আইজি হিসেবে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় এসেছে বিশেষ শাখার অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক জাবেদ পাটোয়ারির নাম। তিনি পুলিশ গ্রেড-১ পদের কর্মকর্তা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জেলজীবনের ওপর লেখা গ্রন্থ কারাগারের রোজনামচার বিভিন্ন তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ১৯৮৬ সালে তিনি পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন।
আলোচনায় আরও আছে অতিরিক্ত আইজিপি মোখলেসুর রহমানের নাম। পুলিশ সপ্তাহের আগের দিন তাঁকে পদোন্নতি দিয়ে গ্রেড-১ করা হয়েছে। এ কারণে আইজি হিসেবে বেশ জোরালোভাবে তাঁর নাম শোনা যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা দায়েরের পরপরই ১৯৯৬ সালের ১৩ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর খুনিদের গ্রেপ্তার করেছিলেন মোখলেসুর রহমান। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা ছিলেন। তিনি পুলিশে যোগ দেন ১৯৮৮ সালে।
এ ছাড়া আলোচনায় আছে র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদের নাম। ১৯৮৮ সালে পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেওয়া বেনজীর জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা বাহিনীর সদস্য হিসেবে বসনিয়া ও কসোভোতে কাজ করেছেন। তিনি ডিএমপি কমিশনার ছিলেন।
ঢাকা মহানগর পুলিশের বর্তমান কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়ার নামও আলোচনায় আছে। তিনিও ১৯৮৮ সালে পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন। কর্মজীবনে তিনি সুনামগঞ্জ, পাবনা, টাঙ্গাইল জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) ছাড়াও পুলিশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, কে আইজিপি হবেন, তা প্রধানমন্ত্রীর ওপরই নির্ভর করছে।