ঢাকা: রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন বিলম্বিত হওয়ার রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান করেছে মিয়ানমার। তারা বলেছে, রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন বিলম্বিত করার কথা মিয়ানমারকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়টি বাংলাদেশ। তাই তারা পরিকল্পনামতো আজ মঙ্গলবারও অপেক্ষায় আছে। মিয়ানমারের অনলাইন দ্য মিয়ানমার টাইমসকে এ কথা বলেছেন প্রেসিডেন্ট হতিন কাইওয়ার অফিসের মুখপাত্র ইউ জাওয়া হতাই। ২৩ শে জানুয়ারি অনলাইন দ্য মিয়ানমার টাইমসে ‘ডিনাইয়িং রিপোর্টস অব ডিলে, গভর্নমেন্ট সেজ ইট ইট রেডি ফর রিপ্যাট্রিয়েশন’ শীর্ষক প্রকাশিত এক রিপোর্টে বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে মঙ্গলবার রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন শুরু হবে এ জন্য মিয়ানমার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। ইউ জাওয়া হতাই ইমেইল মাধ্যমে বলেছেন, তারা (বাংলাদেশ) আমাদেরকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাবর্তন বিলম্বিত করা সম্পর্কে জানায় নি।
তাই আমরা মঙ্গলবার পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকবো। যখন তারা আমাদেরকে এ বিষয়ে জানাবে তখনই এ প্রক্রিয়া বিলম্বিত করা হবে। এ প্রক্রিয়া নিয়ে আমাদেরকে আরো আলোচনা করতে হবে। উল্লেখ্য, ২৩ শে নভেম্বর মিয়ানমারের রাজধানী ন্যাপিডতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন বিষয়ে একটি সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষরিত হয় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে। তার পর এটি চুক্তিতে পরিণত হয়। সে অনুযায়ী বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফেরত পাঠানো শুরু হওয়ার কথা আজ মঙ্গলবার। কিন্তু শরণার্থী ও প্রত্যাবর্তন বিষয়ক বাংলাদেশী কমিশনার আবুল কালাম সোমবার জানান, মঙ্গলবার রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন হচ্ছে না। এ প্রক্রিয়া বিলম্বিত হবে। তিনি বার্তা সংস্থা এপি’কে বলেছেন, এখনও অনেক ইস্যুর সমাধান হয় নি। এক্ষেত্রে প্রধান বিষয় হলো প্রত্যাবর্তন হতে হবে স্বেচ্ছায়। ফেরত যাওয়া শরণার্থীদের বিষয়ে এখনও ডকুমেন্ট চূড়ান্ত করা যায় নি। বাংলাদেশে এখনও ট্রানজিট ক্যাম্প নির্মাণ শেষ হয় নি। তাই এ প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া কবে নাগাদ শুরু হবে এ বিষয়টি স্পষ্ট নয়। এ বিষয়ে মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট হতিন কাইওয়ার অফিসের মুখপাত্র ইউ জাওয়া হতাই দ্য মিয়ানমার টাইমসকে বলেছেন, আমরা প্রস্তুত। আমাদেরকে বাংলাদেশ বিলম্বিত করা সম্পর্কে কিছু জানায় নি। ওদিকে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের একজন সৈয়দ নূর বার্তা সংস্থা এপি’কে বলেছেন, তারা (বাংলাদেশ) যদি আমাদেরকে জোর করে ফেরত পাঠায় তাহলে আমরা যাবো না। মিয়ানমার টাইমসের রিপোর্টে বলা হয, আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মির (আরসা) সদস্যরা সম্প্রতি হামলা চালানোর জের হিসেবে রাখাইনের উত্তরাঞ্চলে দেখা দেয় ভয়াবহ সহিংসতা। এর ফলে সরকারি বাহিনীর চালানো ‘জাতি নিধন অভিযানে’ হত্যা করা হয়েছে কয়েক শত মানুষকে। এক্ষেত্রে সরকারের অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগের বিষয়ে মিয়ানমারের কড়া সমালোচনা করে মানবাধিকার বিষয়ক গ্রুপগুলো। এতে অভিযোগ করা হয়, সেনাবাহিনী মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। তাদের এমন আচরণের শিকার যারা তাদের বেশির ভাগই মুসলিম। মিয়ানমার টাইমস আরো লিখেছে, রাখাইনে বসবাসকারী সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদেরকে নাগরিক হিসেবে স্বীকার করে না মিয়ানমারের বেশির ভাগ নাগরিক। এমন কি তাদেরকে জাতি হিসেবেও স্বীকৃতি দেয়া হয় না। তাদেরকে দেখা হয় বাংলাদেশ থেকে যাওয়া অবৈধ অভিবাসী হিসেবে।