সামনে পাওয়া টাকা অবলীলায় খেয়ে নিচ্ছে ষাঁড়টি। এরই মধ্যে তার পেটে লক্ষাধিক টাকা ঢুকেছে বলে মালিকসহ অন্যদের দাবি। টাকাখেকো এ ষাঁড় নিয়ে রীতিমতো বিপদে পড়েছেন মালিক রমজান আলী। একটি সংস্থার মাধ্যমে কেনা ষাঁড়টি বিক্রি করার অনুমতিও পাচ্ছেন না তিনি। গত ১০ জানুয়ারি মালিকের জ্যাকেটে থাকা এক লাখ ১৫ হাজার টাকা খেয়ে ফেলেছে ষাঁড়টি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, পঞ্চগড় সদর উপজেলার জগদল সর্দারপাড়া এলাকার বাসিন্দা রমজান আলী। স্থানীয় বাজারে পানের দোকান রয়েছে তাঁর। রমজানের চার সন্তানের মধ্যে তিন মেয়ে স্কুলে অধ্যয়নরত। ছেলেটির বয়স তিন বছর। অর্থকষ্টে থাকা রমজান তিন মাস আগে কাজী শাহেদ ফাউন্ডেশন থেকে কিস্তিতে ষাঁড়টি কেনেন। শাহিওয়াল ষাঁড়টির আচরণ এমনিতে স্বাভাবিক। গত ১০ জানুয়ারি রমজান নিজ দোকানে হালখাতা করেন বকেয়া টাকা আদায়ের উদ্দেশ্যে। দোকানে বকেয়া দুই লাখ টাকার মধ্যে এক লাখ ১৫ হাজার টাকা আদায় করে গভীর রাতে বাড়ি ফেরেন তিনি। টাকাসহ জ্যাকেটটি মাথার কাছে রেখে ঘুমিয়ে পড়েন তিনি। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখেন, জ্যাকেটটি ঘরের ভাঙা বেড়ার ফাঁকে ঝুলে আছে। কিন্তু পকেটে টাকা নেই। ও পাশে অবস্থান করা ষাঁড়টির দিকে তাকাতেই দেখা যায়, এক হাজার টাকার একটি নোট মুখে ঢুকিয়ে চিবোচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত ওই নোট রমজান কোনোক্রমে মুখ থেকে বের করলেও বাকি টাকার সন্ধান মেলেনি। এ দৃশ্য দেখার পর রমজান মূর্ছা যান। তাঁকে নিতে হয় হাসপাতালে। পরে ঘটনা যাচাইয়ে ষাঁড়টির সামনে টাকা রাখলেই দেখা যাচ্ছে সে তা খেয়ে নিচ্ছে।
প্রতিবেশী মতিয়ার রহমান বলেন, আমরা প্রথমে ঘটনা বিশ্বাস করিনি। পরে নিজেরা পরীক্ষা করে দেখেছি গরুটি টাকা খায়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আজিজার রহমান বলেন, আমি রমজানের বাড়ি গিয়ে দেখেছি ঘটনাটি সত্যি। বেচারার খুব কষ্টে উপার্জন করা টাকা ষাঁড়টি খেয়ে ফেলেছে। আমরা তাঁকে যথাসাধ্য সহযোগিতার চেষ্টা করব।
ক্ষতিগ্রস্ত রমজান আলী বলেন, চোরের ভয়ে টাকাসহ জ্যাকেটটি ঘুমের সময় কাছেই রেখেছিলাম। কিন্তু কী করে বুঝব, ষাঁড়টি টাকা খেয়ে নেবে। এখন ষাঁড় বিক্রি করে দিতে চাচ্ছি, কিন্তু কাজী শাহেদ ফাউন্ডেশন থেকে অনুমতি দিচ্ছে না। এখন কিভাবে সংসার চালাব, কিভাবেই বা ঋণের টাকা শোধ করব?
কাজী শাহেদ ফাউন্ডেশনের চিকিৎসক শফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতনদের জানিয়েছি। তাঁরা এ বিষয়ে কোনো ক্ষতিপূরণ দেবেন না।