কিন্তু রোহিঙ্গা ফেরত পাঠানোর বিষয়ে ইউএনএইচসিআর’কে যুক্ত করা হয় নি। তাই মহাসচিব গুতেরাঁ মঙ্গলবার এ প্রক্রিয়া নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। জাতিসংঘ সদর দফতরে তিনি এক সংবাদ সম্মেলন করেন। এতে গুঁতেরা বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, (রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন) অপারেশন যাতে আন্তর্জাতিক মান অনুসরণ করে চলে তা নিশ্চিত করার জন্য এ প্রক্রিয়ায় ইউএনএইচসিআরকে যুক্ত রাখা হবে। উল্লেখ্য, জাতিসংঘের মহাসচিব হওয়ার আগে ১০ বছর এ সংগঠনের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেছেন গুতেরাঁ। তিনি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে চুক্তির বিষয়ে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থার সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। তবে চুক্তিতে এ সংস্থাকে অংশীদার করা হয় নি। কিন্তু এমন শরণার্থী প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ায় এ সংস্থা জড়িত থাকে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি। এতে বলা হয়েছে, এই চুক্তি বাংলাদেশ থেকে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে প্রযোজ্য, যারা ২০১৬ সালের অক্টোবরে এবং গত আগস্টের পরে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছেন। অ্যান্তনিও গুতেরাঁ বলেন, রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়া হতে হবে স্বেচ্ছায় এবং তাদেরকে অবশ্যই তাদের আদি বাড়িতে ফিরে যেতে দিতে হবে। তাদেরকে কোনো আশ্রয়শিবিরে রাখা যাবে না। এ বিষয়গুলো নিশ্চিত করা অত্যন্ত প্রয়োজন। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ২০১৮ সালে কি কি বিষয়ে তিনি প্রাধান্য দেবেন সেসব সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরার সময় গুতেরাঁ বলেন, বাংলাদেশের আশ্রয় শিবির থেকে এসব মানুষকে (রোহিঙ্গা) মিয়ানমারের শিবিরে ফেরত পাঠানো হলে তা হবে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা। উল্লেখ্য, ডিসেম্বরে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো নৃশংসতার নিন্দা জানিয়ে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করে এবং তাতে মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরাঁর প্রতি আহ্বান জানানো হয় মিয়ানমার বিষয়ক স্পেশাল দূত নিয়োগ দেয়ার। এর জবাবে গুতেরাঁ বলেছেন, তিনি শিগগিরই ওই পদে নিয়োগ দিতে চলেছেন। উল্লেখ্য, গত ২৫ শে আগস্ট রাখাইনে নৃশংসতা শুরুর পর সেখান থেকে কমপক্ষে সাড়ে ছয় লাখ রোহিঙ্গা মুসলিম পালিয়ে এসে আশ্রয় নেয় বাংলাদেশে। এ জন্য দায়ী করা হয় মিয়ানমারের সেনাবাহিনীকে। তারা ব্যাপক গণধর্ষণ, গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ করে রোহিঙ্গাদের দেশছাড়া হতে বাধ্য করে। জাতিসংঘ একে জাতি নিধন হিসেবে আখ্যায়িত করেছে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। তারা দাবি করে, ২৫ শে আগস্ট হামলা চালানো আরাকান রোহিঙ্গা সালভেশন আর্মির (আরসা) বিরুদ্ধে তারা অভিযান চালিয়েছে।