মিয়ানমারের রাজধানী নেপিডোতে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ের জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের (জেডব্লিউজি) বৈঠকে চুক্তিটি চূড়ান্ত রূপ পায়।
চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার ফলে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন শুরুর জন্য সরকারি পর্যায়ের কাজটি সম্পন্ন হলো।
আজকের বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হক বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য আমরা সফলভাবে ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট চূড়ান্ত করে ফেলেছি। সেই সঙ্গে যেসব রোহিঙ্গা ফেরত যাবেন, তাঁদের জন্য একটি ফরমের রূপও চূড়ান্ত করা হয়েছে।
পররাষ্ট্রসচিব আরও বলেন, ওই চুক্তিতে প্রত্যাবাসনের সংখ্যাসহ অন্য যেসব বিষয় আছে, সেগুলোর উল্লেখ আছে। বিশেষ করে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার ভূমিকার বিষয়টি এখানে যুক্ত করা হয়েছে। এখানে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, প্রত্যাবাসনের পর রাখাইনে রোহিঙ্গাদের জীবন-জীবিকার বিষয় নিশ্চিত করার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত আছে।
শহীদুল হক বলেন, সামগ্রিকভাবে দুই পক্ষের আলোচনার পর একটি ভারসাম্যপূর্ণ চুক্তি হয়েছে। এখন দুই পক্ষ যদি আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে, তবে টেকসই উপায়ে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের কাজ শুরু করা যাবে বলে আশা করা যায়।
জেডব্লিউজির বৈঠকে পররাষ্ট্রসচিব মো. শহীদুল হক বাংলাদেশের এবং মিয়ানমারের পররাষ্ট্রসচিব মিন্ট থোয়ে তাঁর দেশের নেতৃত্ব দেন।
বেশ কয়েকটি মৌলিক বিষয় অমীমাংসিত থাকায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য ‘ফিজিক্যাল অ্যারেঞ্জমেন্ট’ নামের মাঠপর্যায়ের চুক্তি গতকাল পর্যন্ত চূড়ান্ত করা যায়নি। ফলে গতকাল সোমবার মিয়ানমারের নেপিডোতে দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিবদের নেতৃত্বাধীন জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের প্রথম বৈঠকে চুক্তিটি সই হয়নি। তবে সন্ধ্যায় অনিষ্পন্ন এসব খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে ইতিবাচক আলোচনা হয়। মিয়ানমারের কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, গতকাল জেডব্লিউজির বৈঠকে বাংলাদেশ গত ২৩ নভেম্বরের চুক্তি অনুযায়ী দুই মাসের মধ্যে প্রত্যাবাসনের প্রক্রিয়া শুরুর ওপর জোর দেয়। বিশেষ করে চুক্তির বাস্তবায়ন নিয়ে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় প্রশ্ন তোলায় ২৩ জানুয়ারি থেকে প্রত্যাবাসনের প্রক্রিয়া শুরুর তাগিদ দেয় বাংলাদেশ। বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের প্রথম দলটিকে রাখাইনে ফেরত পাঠানোর পর থেকে প্রত্যাবাসনের কাজটি শেষ করার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় ঠিক করার কথা বলে। বাংলাদেশের যুক্তি হচ্ছে, নির্দিষ্ট সময়সীমা না থাকলে পুরো প্রক্রিয়া ঝুলে যাবে। আর মিয়ানমার প্রত্যাবাসন শেষ হওয়ার জন্য সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার পরিবর্তে এ ক্ষেত্রে শিথিলতা রাখতে জোর দিচ্ছে।