নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের এই দেশে এমন ভয়াবহ হাড় কাঁপানো শৈত্যপ্রবাহ বহুদিন দেখেনি মানুষ। পুরো দেশ যেন অসহনীয় হিমাগার। সপ্তাহ ধরে শীতে জবুথবু মানুষের কষ্টের সীমা নেই। বিশেষ করে পঞ্চগড়, দিনাজপুর, নীলফামারীসহ উত্তরাঞ্চলে দুর্ভোগের শেষ নেই। গতকাল সোমবার পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যাতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ৫০ বছর আগের রেকর্ড ভেঙে গেছে। ১৯৬৮ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
প্রচণ্ড শীতে কাবু হয়ে পড়েছে রাজধানীসহ সারা দেশের মানুষ। এর মধ্যে সবচেয়ে কষ্টের শিকার শিশু ও বৃদ্ধরা। অতিদরিদ্র পরিবারগুলোর শীতবস্ত্র কেনার সামর্থ্য নেই। ফলে ছালা গায়ে জাড়িয়ে, খড়কুটো পুড়িয়ে তারা শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। এর মধ্যে শীত নিবারণের জন্য আগুন পোহাতে গিয়ে দিনাজপুর ও হবিগঞ্জে দগ্ধ হয়েছেন দুই গৃহবধূ। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে কম্বল বিতরণ করা হলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা কম।
শীতজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ঠাণ্ডা থেকে সাধারণ জ্বর-সর্দি-কাশি ছাপিয়ে বাড়ছে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, অ্যাজমাসহ নানা ধরনের শ্বাসতন্ত্রের রোগে ভুগছে হাজার হাজার মানুষ। গতকাল চুয়াডাঙ্গায় সদর হাসপাতালে তাপস হালদার (১৩) নামের একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
ঘন কুয়াশার কারণে কয়েক দিন থেকে আকাশ, সড়ক ও নৌ পথে যোগাযোগব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে। গতকালও দিনের বেলায় বিভিন্ন সড়কপথে হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করেছে। কুয়াশার কারণে বিভিন্ন্ন নৌ রুটে মাঝনদীতে ফেরি আটকা পড়েছে। বিমানবন্দরগুলোতে বিমান ওঠা-নামার শিডিউল বিপর্যয় হয়েছে।
পর্যাপ্ত তাপের অভাব ও ঘন কুয়াশায় ব্যাপক ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে বিভিন্ন মৌসুমি ফসল। শীতকালীন সবজির চাষ নিয়ে কৃষকরা চিন্তায় পড়েছে। তাদের আশঙ্কা, আবহাওয়া অনুকূলে না এলে তারা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এভাবে যদি আর এক সপ্তাহ কুয়াশা পড়তে থাকে, তাহলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হতে পারে, যেটি কাটিয়ে ওঠা কঠিন হবে। বিস্তারিত আমাদের আঞ্চলিক অফিস, নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে :
শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত : ‘এরঙ ঠাণ্ডা মোর জীবনত দেখু নাই বা। হাত-পা কোঁকড়া লাগে অচ্চে।’ শীত-কষ্টের অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে এভাবে বলছিলেন পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার ভজনপুর এলাকার বৃদ্ধ জুমার উদ্দিনের (৭০)। শুধু তিনিই নন, প্রচণ্ড শীতে জবুথবু সারা দেশের মানুষ। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের শিশু-বৃদ্ধদের কষ্টের সীমা নেই।
হিম ঠাণ্ডায় কাবু হয়ে পড়েছে কুড়িগ্রামের মানুষ। বিশেষ করে নদীতীরবর্তী ও শহরের দরিদ্র মানুষ এক কাপড়ে পার করছে কনকনে শীত। হিমেল বাতাসে লোকজন ঘর থেকে বের হতে পারছে না। দিনাজপুরে শীতে বিপর্যস্ত দিনাজপুরের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। সবচেয়ে বেশি কষ্টে রয়েছে ছিন্নমূল শ্রমজীবীরা। গতকাল সারা দিন সূর্যের আলো দেখা যায়নি। পাবনায় শৈত্যপ্রবাহে জনজীবন বির্পযস্ত হয়ে পড়েছে। তীব্র শীতের কারণে সকালে তীব্র ঠাণ্ডায় কাজে বের হতে পারছে না শ্রমজীবী তৃণমূল পর্যায়ের মানুষজন। নাটোরে শীতবস্ত্রেও অভাবে-কষ্টে আছে নিম্ন আয়ের মানুষ। তারা আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। বরিশালসহ গোটা দক্ষিণ জনপদ শীতে কাঁপছে। নীলফামারীতে প্রচণ্ড শীতে জবুথবু হয়ে পড়েছে মানুষ। ঘন কুয়াশার কারণে খেটে খাওয়া মানুষগুলো কাজে যেতে না পারায় মানবেতর জীবন যাপন করছে। চুয়াডাঙ্গা গরম কাপড়ের অভাবে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে হতদরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষ।
রাজবাড়ীর জনজীবনে চরম দুর্ভোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। হিমশীতল আবহাওয়ার কারণে নারী, শিশু ও বৃদ্ধরা পোহাচ্ছে নিদারুণ কষ্ট। তবে সবচেয়ে বেশি কষ্টের মধ্যে রয়েছে ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষজন।
বগুড়ায় প্রচণ্ড শীতের কারণে দুস্থ, বিশেষ করে স্টেশন, ফুটপাত, সড়কদ্বীপসহ বিভিন্ন খোলা স্থানে আশ্রয় নেওয়া ছিন্নমূল মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। ঠাকুরগাঁওয়ে হাড় কাঁপানো শীত ও ঘন কুয়াশার কারণে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছে কৃষক, শ্রমজীবী ও হতদরিদ্র ছিন্নমূল মানুষ।
বাড়ছে শীতজনিত রোগ, শিশুর মৃত্যু : দেশে শীতজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। ঠাণ্ডা থেকে সাধারণ জ্বর-সর্দি-কাশি ছাপিয়ে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, অ্যাজমাসহ নানা ধরনের শ্বাসতন্ত্রের রোগে ভুগছে হাজার হাজার মানুষ। এর মধ্যে গতকাল চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে তাপস হালদার (১৩) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
কুড়িগ্রামে প্রচণ্ড শীতে বাড়ছে রোগ-ব্যাধি। গত এক সপ্তাহে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে বিভিন্ন রোগে ভর্তি হয়ে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে দুজন বয়স্ক, তাঁদের হার্টের অসুখ ও শ্বাসজনিত সমস্যা ছিল। বাকিরা শিশু। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত প্রায় ৭০০ রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। বগুড়ায় শিশুরা কোল্ড ডায়রিয়া, আমাশয়, সর্দি-কাশি, পেটের পীড়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। গত এক সপ্তাহে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শিশু বিভাগে পাঁচ শতাধিক শিশুকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
পাবনায় হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলার বিভিন্ন হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে শীতজনিত রোগে ৩৫ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। নাটোরে গত তিন দিনে দেড় শতাধিক শিশু, নারী ও বয়স্ক মানুষ শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। বরিশালে হাসপাতালগুলোতে ঠাণ্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
সৈয়দপুরে হাসপাতালে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে কয়েক গুণ। চিকিৎসা দিতে হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা হিমশিম খাচ্ছেন। রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে গত এক সপ্তাহে ভর্তি হয়েছে ৮৪ জন শিশু ও বয়স্ক রোগী। ঠাকুরগাঁওয়ে বাড়ছে শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া, জ্বর, ডায়রিয়াসহ নানা রোগ। গত তিন দিনে সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১২২ জন শিশু। নীলফামারী সদর আধুনিক হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছে ২০০ জন রোগী।
নওগাঁ সদর হাসপাতালে সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এসব রোগীকে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে নার্স ও চিকিৎসকদের।
আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ দুই গৃহবধূ : শীত নিবারণের জন্য আগুন পেহাতে গিয়ে দিনাজপুর ও হবিগঞ্জে দগ্ধ হয়েছেন দুই গৃহবধূ। গতকাল দিনাজপুরে চিরিরবন্দরে আগুন তাপাতে গিয়ে ঝলসে যায় নাজমুন আক্তার (২৫) নামের এক গৃহবধূ। তাঁকে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে হবিগঞ্জ সদর উপজেলার পুরাসুন্দা গ্রামে আমিরুন্নেছা (৪০) নামের এক নারীর সারা শরীর আগুনে ঝলসে গেছে। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।
নৌ, সড়ক ও আকাশ পথে যোগাযোগ ব্যাহত : ঘন কুয়াশার কারণে কয়েক দিন ধরে আকাশ, সড়ক ও নৌ পথে যোগাযোগব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে। গতকালও দিনের বেলায় বিভিন্ন সড়কপথে হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করেছে। কুয়াশার করণে বিভিন্ন নৌ রুটে মাঝনদীতে ফেরি আটকা পড়েছে। কোনো ঘাট থেকে নৌযান ছেড়ে যায়নি। বিমানবন্দরগুলোতে বিমান ওঠানামার শিডিউল বিপর্যয় হয়েছে।
গতকাল ভোর সাড়ে ৫টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে সব ফেরি সার্ভিস বন্ধ ছিল। এ সময় কুয়াশার কবলে পড়ে আমানত শাহ, কপোতী ও শাহ আলী নামের তিনটি ফেরি মাঝনদীতে আটকা পড়ে থাকে। আড়াই ঘণ্টা ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় দৌলতদিয়া ঘাটে আটকা পড়ে যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাকসহ দুই শতাধিক বিভিন্ন গাড়ি। এতে ফেরিঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে দৌলতদিয়া-খুলনা মহাসড়কের সাইনবোর্ড এলাকা পর্যন্ত দুই কিলোমিটার রাস্তায় যানজট সৃষ্টি হয়। তীব্র শীত ও কুয়াশার মধ্যে যানজটে আটকে পড়া বিভিন্ন বাসের কয়েক হাজার যাত্রী এ সময় দুর্ভোগের শিকার হয়।
বগুড়ায় প্রচণ্ড শীত ও ঘন কুয়াশার কবলে পড়ে উত্তরাঞ্চলের মহাসড়কে যানবাহন চলাচল একেবারে বন্ধ হয়ে গেছে বললেই চলে। ঘন কুয়াশার কারণে দূরপাল্লার যানবাহনের পূর্বনির্ধারিত গন্তব্য শিডিউল পরিবর্তন করা হচ্ছে।
শীতবস্ত্র বিতরণ প্রয়োজনের তুলনায় কম : প্রচণ্ড শীতে কাঁপছে সারা দেশের মানুষ। তবে হতদরিদ্র ছিন্নমূল, দিনমজুররা শীতবস্ত্রের জন্য হাহাকার করছে। বিশেষ করে হতদরিদ্র, ছিন্নমূল, ভূমিহীন, দিনমজুররা সীমাহীন কষ্টে রয়েছে। অতিদরিদ্র পরিবারগুলোর শীতবস্ত্র কেনার সামর্থ নেই। ফলে চট-ছালা গায়ে জড়িয়ে, খড়কুটো পুড়িয়ে তারা শীত নিবারণের চেষ্টা করছে। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে কম্বল বিতরণ হলেও প্রয়োজনের তুলনায় কম।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শীতার্তদের জন্য ৯ উপজেলায় ৫৭ হাজার কম্বল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যা বিতরণের কাজ চলছে। হবিগঞ্জে রবিবার রাতে চুনারুঘাট উপজেলা প্রশাসন কালেঙ্গা বনের ত্রিপুরা আদীবাসীদের মধ্যে কম্বল বিতরণ করেছে। সৈয়দপুরে গতকাল সোমবার পর্যন্ত উপজেলায় সরকারিভাবে চার হাজার ২৯১ পিস নতুন কম্বল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। বরাদ্দকৃত কম্বল উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের মাধ্যমে শীতার্তদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।
ঠাকুরগাঁওয়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম বলেন, শীত নিবারণে চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র (কম্বল) এসেছে এবং তা সদর উপজেলাসহ অন্যান্য উপজেলায় বিতরণ করা হয়েছে। শীতবস্ত্র বিতরণের জন্য মঙ্গলবার দুপুরে সড়ক, যোগাযোগ ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আসার কথা রয়েছে।
নীলফামারীর জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা এ টি এম আখতারুজ্জামান বলেন, এ বছর সরকারিভাবে বিতরণের জন্য ৪১ হাজার ৯৩৭টি কম্বল বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৩৫ হাজার ৯৩৭টি কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। নতুন করে আরো ২০ হাজার কম্বল বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।
শৈত্যপ্রবাহে ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা : পর্যাপ্ত তাপের অভাব ও ঘন কুয়াশায় ব্যাপক ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে বিভিন্ন মৌসুমি ফসল। শীতকালীন সবজির চাষ নিয়ে কৃষকরা চিন্তায় পড়েছে। তাদের আশঙ্কা, আবহাওয়া অনুকূলে না এলে তারা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
কুড়িগ্রামে শীতের তীব্রতার কারণে আলুক্ষেতে ছত্রাকের আক্রমণ ঠেকাতে ঘন ঘন স্প্রে দিতে হচ্ছে কৃষকদের। তবে কৃষি সম্প্রসারণ অফিস পরামর্শ দিয়ে বলছে, শীতের তীব্রতা বেড়ে গেলেও দুপুরে রোদ ওঠায় ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। তার পরও মাঠপর্যায়ে বীজতলা, আলু, গমসহ বিভিন্ন ফসল থেকে কুয়াশা সরিয়ে দিতে হবে। দিনাজপুরে বোরো বীজতলা ও আলুর ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সতর্ক রাখা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গায় ঘন কুয়াশা ও শীতে বোরো বীজতলা, আলুসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে বলে জানিয়েছে কৃষকরা। বীজতলা ও আলুক্ষেতে ছত্রাকজাতীয় রোগ দেখা দিয়েছে।
বগুড়ায় প্রচণ্ড শীত আর ঘন কুয়াশার কারণে আলুর জন্য বিখ্যাত উত্তরাঞ্চলের চাষিরা তাদের হাজার হাজার হেক্টর জমিতে দেরিতে লাগানো আলুগাছ ও সবজি ক্ষেত নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছে। কৃষি বিভাগ এরই মধ্যে শীত ও কুয়াশাজনিত রোগবালাই থেকে আলু ও সবজি গাছ রক্ষার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে মাইকিংসহ নানা রকম প্রচারণা শুরু করেছে। যদিও এরই মধ্যে বিভিন্ন স্থানে আলুক্ষেত পাতা কুঁচকানো ভাইরাস রোগে আক্রান্ত হয়েছে। ঠাকুরগাঁওয়ে ঘন কুয়াশা ও প্রচণ্ড ঠাণ্ডার কারণে ক্ষেতে হাল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। নওগাঁয় শীতের কারণে টমেটো ও আলুক্ষেতে সমস্যা দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছে কৃষকরা। নীলফামারীর কৃষকরা বলছে, শৈত্যপ্রবাহের সময় বাড়লে বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। পাশাপাশি আলুক্ষেতে লেট ব্রাইট রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটবে।