২০৪০ সালের মধ্যে ইহুদিদের টপকিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় গোষ্ঠীতে পরিণত হবে মুসলিমরা। পিউ রিসার্চ সেন্টারের নতুন এক গবেষণায় একথা বলা হয়েছে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মীয় জনগোষ্ঠী হচ্ছে ইহুদিরা। জনসংখ্যার দিক থেকে খ্রিষ্টানদের পরেই তাদের অবস্থান। কিন্তু পিউ রিসার্চের গবেষণা অনুসারে, ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী মুসলিমের সংখ্যা ছিল ৩৪ লাখ ৫০ হাজার। এই সংখ্যা যুক্তরাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যার ১.১ শতাংশ। এই হিসাব অনুসারে, মুসলিমরা যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় জনগোষ্ঠী। তবে ২০৪০ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ইহুদিদের চেয়ে সংখ্যায় বেশি থাকবে মুসলিমরা।
রিপোর্টে এর কারণ হিসাবে বলা হয়েছে, আমেরিকান মুসলিমদের জন্মহার বেশি। এর পাশাপাশি অভিবাসন মিলিয়ে প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে মুসলিমদের সংখ্যা প্রায় এক লাখ করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০৫০ সালের মধ্যে আমেরিকান মুসলিমের সংখ্যা দাঁড়াবে আনুমানিক ৮১ লাখে।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, পিউ সেন্টার সর্বপ্রথম ২০০৭ সালে আমেরিকান মুসলিমদের সংখ্যা নিয়ে কাজ শুরু করে। তখন থেকে দেশটিতে মুসলিমদের সংখ্যা দ্রুতগতিতে বেড়ে চলেছে।
প্রসঙ্গত, এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় জনগোষ্ঠী হচ্ছে খ্রিষ্টানরা। দেশটির মোট জনসংখ্যার ৭১ শতাংশ খ্রিষ্ট ধর্মালম্বী।
সৌদিতে যুবরাজের অভ্যুত্থানের কৃতিত্ব দাবি করেছিলেন ট্রাম্প
বিবিসি
সৌদি আরবে মোহাম্মদ বিন সালমান যুবরাজ হওয়ার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বড়াই করে তার বন্ধুদের বলেছিলেন, তিনি আর তার জামাতা জ্যারেড কুশনার সৌদি আরবে একটি ‘অভ্যুত্থানের পেছনে’ কলকাঠি নেড়েছেন। ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘আমরা আমাদের একজন লোককে শীর্ষ পদে বসিয়েছি’। আমেরিকান সাংবাদিক মাইকেল উলফের বই থেকে ট্রাম্প প্রশাসনের অন্দরমহল সম্পর্কে আরো যেসব বিস্ফোরক তথ্য বেরিয়েছে তার মধ্যে এটি একটি। ট্রাম্প অবশ্য এ বইকে ‘মিথ্যায় ভরা’ বলে মন্তব্য করেছেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার প্রথম বিদেশ সফরে সৌদি আরব যান, সেখানে তিনি ১১ হাজার কোটি ডলারের মার্কিন অস্ত্র বিক্রির এক চুক্তি করেন।
সৌদিরা সাড়ে সাত কোটি ডলার খরচ করে ট্রাম্পের সম্মানে এক পার্টি দেয়। ট্রাম্পের পরিবারকে সোনার তৈরি গলফ কার্টে করে বেড়াতে নিয়ে যায়। তখনকার যুবরাজ মোহাম্মদ বিন নায়েফের (বইতে তাকে বর্ণনা করা হয়েছে এমবিএন নামে) সাথে কুশনারের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ছিল, কিন্তু উলফ লিখছেন, মোহাম্মদ বিন সালমান বা ‘এমবিএস’-এর সাথেও কুশনারের সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
এমবিএসকে সে বছর মার্চ মাসে হোয়াইট হাউস সফরে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হলো। এমবিএস একে সৌদি রাজপরিবারের ভেতরের ক্ষমতার লড়াইয়ে তার নিজের পক্ষে ব্যবহার করেন। হোয়াইট হাউজ এতে কোনো বাধাই দেয়নি।
মোহাম্মদ বিন সালমান ট্রাম্পকে প্রতিশ্রুতি দিলেন, কয়েক সপ্তাহ পর ট্রাম্পের সৌদি আরব সফরের সময় চুক্তিগুলোর কথা ঘোষণা করা হবে। এ সফরের কয়েক সপ্তাহ পরই মোহাম্মদ বিন নায়েফকে রাতে আটক করলেন মোহাম্মদ বিন সালমান, তাকে বাধ্য করলেন যুবরাজের পদ ছেড়ে দিতে এবং সেই পদে আসীন হলেন এমবিএস নিজেই। ট্রাম্প এ খবর কিভাবে তার বন্ধুদের বলেছিলেন তা বর্ণিত হয়েছে উলফের বই ফায়ার অ্যান্ড ফিউরির ২৩১ পৃষ্ঠায়।
ট্রাম্পের ভয় খাবারে মেশানোর
মাইকেল উলফ তার বইতে লিখছেন, হোয়াইট হাউজে আসার পর ট্রাম্প কড়া নিয়ম চালু করেন যে, স্টাফদের কেউ তার ব্যক্তিগত জিনিসে হাত দিতে পারবে না, বিশেষ করে তার টুথব্রাশে। উলফ আরো লিখেন, প্রেসিডেন্ট চান তার জিনিসপত্র তিনি যেভাবে ঘরে ফেলে যাবেন তা যেন ঠিক সেভাবেই থাকে। এমনকি ময়লা কাপড় চোপড়ও মেঝেতে ফেলে যান তিনি। এ নিয়মের পেছনেও তার বিষপ্রয়োগের ভয় কাজ করে। কেউ তাকে বিষ খাইয়ে দিতে পারে এ ভয়ে তিনি ম্যাকডোনাল্ডসে খেতে পছন্দ করেন, কারণ কেউ জানবে না যে তিনি কখন সেখানে যাবেন এবং খাবারটাও তখন তখন তৈরি করে দেয়া হয়।
বেডরুমে তালা
হোয়াইট হাউসে এসে ট্রাম্প তার ঘরে মোট তিনটি টেলিভিশন দিতে বলেন। চিরাচরিত নিয়ম ভেঙে তিনি তার শোবার ঘরের দরজায় তালা লাগাতেও বলেন। এ নিয়ে তার সাথে সিক্রেট সার্ভিসের রেষারেষি হয়েছিল। কারণ তারা চাইছিল তাদের লোকেরা যেন ঘরে ঢুকতে পারে সে সুযোগ থাকতে হবে। ট্রাম্প হচ্ছেন জন এফ কেনেডির পর প্রথম প্রেসিডেন্ট যিনি তার স্ত্রীর সাথে এক ঘরে থাকেন না, আলাদা শোবার ঘরে থাকেন।