রাজশাহী অঞ্চলের ওপর দিয়ে বইছে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ। শনিবার ভোর ৬টায় রাজশাহীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৫ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যাচ্ছে, শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে রাজশাহী অঞ্চলে। বৃহস্পতিবার থেকে চলমান মৃদু শৈত্যপ্রবাহটি আরও ঘনীভূত হয়ে তীব্র শৈত্যপ্রবাহে রূপ নিয়েছে। ফলে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রায় দুর্ভোগে পড়েছেন এই অঞ্চলের সাধারণ মানুষ। সকালে সূর্য উঠলেও শৈত্যপ্রবাহের কারণে শীতের তীব্রতা রয়েছে। বিশেষ করে ভাসমান ও ছিন্নমূল মানুষ পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। তীব্র শীত থেকে রক্ষা পেতে সকালে পথের ধারে খড়-কুটায় আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করতে দেখা অসহায়দের। শীতের মধ্যে শত কষ্ট হলেও পেটের দায়ে ঘর থেকে বের হচ্ছেন কাজের সন্ধানে। এই তীব্র শীতে কষ্ট পেতে হচ্ছে শিশু-বৃদ্ধসহ সব বয়সের মানুষদের।
শীতে মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় ডায়রিয়া দেখা দিয়েছে। এছাড়া রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিউমোনিয়া, সর্দি-কাশি, জ্বর, শ্বাসকষ্ট ও হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। এদের মধ্যে নবজাতক, বিভিন্ন বয়সের শিশু ও বয়স্কদের সংখ্যাই বেশি বলে জানিয়েছেন জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আরিফুল হক। বাড়তি শীত নিয়ে শঙ্কা কাটছে না এ অঞ্চলের কৃষকদেরও। জানুয়ারির শুরুতেই শৈত্যপ্রবাহ শুরু হওয়ায় বোরো বীজতলার কোল্ড ইঞ্জুরি, আলুর আর্লি ব্লাইটসহ ডাল ফসলের নানা শীতজনিত রোগের প্রার্দুভাব দেখা দিয়েছে এরইমধ্যে।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী মঙ্গলবার অবধি শীতের তীব্রতা কমবে না। তাপমাত্রা ক্রমশ হ্রাস পাবে। এ সময় রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলিসিয়াস নেমে যাবে। এ মাসেই তিনটি শৈত্যপ্রবাহের আশঙ্কা আছে। জানুয়ারিতে দেশের উত্তরাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে একটি মাঝারি (৬ ডিগ্রি-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস), একটি তীব্র (৪ ডিগ্রি-৬ ডিগ্রি সে.) ধরনের শৈত্য প্রবাহ, অন্যত্র দুই থেকে তিনটি মৃদু (৮ ডিগ্রি ১০ ডিগ্রি সে.) বা মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
দিনাজপুর আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. তোফাজ্জুর রহমান জানান, শনিবার সকালে দিনাজপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। আবহাওয়ার পূর্ব আভাস অনুযায়ী আগামী আরো দুই থেকে তিনদিন দিনাজপুরে শীতের তীব্রতা থাকবে। পাশাপাশি ঘন কুয়াশা ও শীতল বাতাস বয়ে যাবে।