বগুড়ার ধুনট উপজেলায় নিজ বাড়ি থেকে এক কিশোরের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তার বাবা বলছেন, বাইসাইকেল কিনে না দেওয়ায় অভিমান করে সে আত্মহত্যা করেছে।
ওই কিশোরের নাম অন্তর হোসেন (১৩)। সে ধুনটের গোঁসাইবাড়ি ফকিরপাড়া গ্রামের চা বিক্রেতা সাহেব আলীর ছেলে।
পুলিশ ও অন্তরের পরিবার সূত্রে জানা যায়, অন্তর এ বছর গোঁসাইবাড়ি উচ্চবিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে ভালো ফল করে সপ্তম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়। ভালো ফল করে উত্তীর্ণ হলে নতুন বছরের শুরুতেই বাবা তাকে বাইসাইকেল কিনে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। বাজারের চা বিক্রি করে সংসার চালানো দরিদ্র বাবার পক্ষে ছেলেকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বাইসাইকেল কিনে দেওয়ার সামর্থ্য হয়নি। আজ বৃহস্পতিবার সকালে অন্তর বাবার কাছে আবারও বাইসাইকেল কিনে দেওয়ার বায়না ধরে। এ সময় বাবা তাকে কয়েক দিন পরে সাইকেল কিনে দেওয়ার কথা বলে বাজারে চা বিক্রি করতে যান। তার মা-ও অন্য কাজের জন্য বাড়ির বাইরে যান। ফলে বছরের শুরুতেই নতুন শ্রেণিতে বাইসাইকেল নিয়ে স্কুলে যেতে না পেরে বাবার ওপর অভিমান করে অন্তর সকাল সাতটার দিকে নিজ বাড়িতে ঘরের তীরের সঙ্গে (ধরনা) গলায় কাপড় দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। সকাল নয়টার দিকে মা বাড়িতে ফিরে ঘরের ভেতর ছেলের ঝুলন্ত মৃতদেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তখন তাঁর কান্নায় বিষয়টি প্রতিবেশীদের মধ্যে জানাজানি হয়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ দুপুর ১২টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে স্কুলছাত্রের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে।
বাবা সাহেব আলী জানান, ‘তাঁর দুই ছেলে দুই মেয়ে। চার ছেলেমেয়ের মধ্যে অন্তর সবার ছোট। সে একটি সাইকেল কিনে দেওয়ার জন্য বায়না ধরেছিল। আমি তাঁকে কিনে দেওয়ার কথা বলেছিলাম। কিন্তু আমি গরিব মানুষ। টাকার অভাবে দিতে পারি নাই। তাই ছেলেটি আমার ওপর অভিমান করে আমাকে ছেড়ে চলে যাবে, তা আমার জানা ছিল না।’
ধুনট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ফারুকুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য বাইসাইকেল কিনে না দেওয়ায় বাবার ওপর অভিমান করে অন্তর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এই আত্মহত্যার বিষয়টি প্রাথমিক তদন্ত করে নিশ্চিত হয়ে মৃতদেহ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর (ইউডি) মামলা হয়েছে।