২০১১ সালে শুরু। কলকাতা নাইট রাইডার্সের (কেকেআর) সঙ্গে সাকিব আল হাসানের বন্ধনটা প্রায় সাত বছরের। লম্বা সময় ধরে চলা এ বাঁধনটা শেষ পর্যন্ত আলগা হয়ে যাচ্ছে। কলকাতা ছেড়ে দিচ্ছে সাকিবকে। সাত বছর পর সাকিবকে আবার যেতে হচ্ছে নিলামের হাতুড়ির নিচে।
২৭ ও ২৮ জানুয়ারি আইপিএলের নিলামে উঠতে আগ্রহ প্রকাশ করা বাংলাদেশের ৮ ক্রিকেটারের নাম কাল বিসিসিআইকে পাঠিয়েছে বিসিবি। যাঁদের মধ্যে আছে সাকিবের নামও। প্রতিবছরই আইপিএলের নিলামে বাংলাদেশের একাধিক খেলোয়াড়ের নাম উঠতে দেখা যায়। যদিও তাঁদের ভাগ্যের শিকে ছেঁড়ে কমই।
তবে নিলামে ওঠার এই ধারা থেকে দীর্ঘদিন মুক্ত ছিলেন সাকিব। প্রতিবারই তাঁকে ধরে রেখেছে কেকেআর। গতবারও সাকিবকে তাঁর ২ কোটি ৮০ লাখ রুপির দাম শোধ করে রেখে দিয়েছিল কলকাতা। এবার বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারকে আর ধরে রাখবে না কেকেআর, আগে থেকেই অনুমান করা যাচ্ছিল। বিসিবির পাঠানো তালিকা বলে দিচ্ছে, সত্যিই কলকাতা আর ধরে রাখছে না সাকিবকে।
অবশ্য তাঁকে নিলাম থেকে কেনার সুযোগ আবারও থাকল কেকেআরের। তারা কিনবে কি না, নিলামে কত দূর পর্যন্ত যাবে সাকিবের জন্য, সেটাই দেখার। গতবার পুরো মৌসুমে সাকিব মাত্র এক ম্যাচ খেলেছিলেন আইপিএলে। ১ রানে অপরাজিত ছিলেন, বল হাতে ৩ ওভারে ৩১ রান দিয়ে উইকেটশূন্য।
দেশের মাঠে পাকিস্তান সিরিজ থাকায় ২০১৫ আইপিএলে ৪ ম্যাচ খেলেছিলেন সাকিব। ২০১৬ আইপিএলের পুরোটা খেলেও সুযোগ পান ১০ ম্যাচে। ১১৪ রান ও ৫ উইকেট নেওয়া সাকিবের পারফরম্যান্সটা যদিও বলার মতো হয়নি। আর গতবার খেলার সুযোগ পেয়েছেন মাত্র এক ম্যাচে। ধীরে ধীরে কমতে থাকা ম্যাচসংখ্যা বলে দিচ্ছে, কলকাতা আর সাকিবের রসায়নটা ঠিক আগের মতো জমছে না! যদিও গত সাত বছরে বাংলাদেশের জার্সির পর কেকেআরের জার্সিতেই সাকিব সবচেয়ে বেশি সমার্থক হয়ে উঠেছিলেন সাকিব। এমনও হয়েছে, আইপিএলে কলকাতার একমাত্র বাঙালি খেলোয়াড় ছিলেন তিনিই।
গতবারের চেয়ে এবারের হিসাবটা যদিও ভিন্ন। ২০১৭ আইপিএলে কেকেআর ১৪ জন খেলোয়াড় ধরে রাখতে পেরেছিল। এবার এই সুযোগটা নেই। দলগুলো নিলামের আগে সর্বোচ্চ তিনজন করে খেলোয়াড় ধরে রাখার সুযোগ পেয়েছে। বাকিদের ছেড়ে দিতে হয়েছে। আগামীকাল দলগুলোর জানানোর শেষ তারিখ, কোন কোন খেলোয়াড়কে তারা রেখে বাকিদের ছেড়ে দেবে। কেকেআর কাকে কাকে রাখল, তা এখনো নিশ্চিত না হলেও এটা বোঝা গেল, সাকিব অন্তত সে তালিকায় নেই। বিসিবির পাঠানো নিলাম তালিকায় তাঁর নাম সে কথাই বলছে।
দলগুলোকে একটি বাড়তি সুযোগ অবশ্য দেওয়া হয়েছে। নিলামে নিজের দলের ছেড়ে দেওয়া খেলোয়াড়কে আবার নিতে ব্যর্থ হলে ওই খেলোয়াড়টিকে সর্বোচ্চ যে দামে কেনা হবে, সেই একই দামে কিনতে চাইলে নিলামের পর খেলোয়াড়টির আগের দলকে সুযোগ দেওয়া হবে। নিলামে সাকিবকে আবার কেনার সুযোগ কেকেআরের থাকছেই, নিলামে হেরে গেলেও সুযোগ থাকবে কেকেআরের।
গত বিপিএলে বল হাতে শীর্ষে থাকা সাকিবকে নিশ্চয়ই কোনো না কোনো দল কিনতে আগ্রহী হবে। এবার তাঁর গায়ে কোন জার্সি ওঠে, সেটাই দেখার।