শুক্রবার, নভেম্বর ০৮, ২০২৪

বিক্ষোভ চলছেই, ইরানে হত আরও ৯

Slider সারাবিশ্ব
image
grambanglanews24.com

 

 

 

 

 

 

 

 

 

বিক্ষোভের বারুদে আগুন পড়েছে ইরানে। নতুন করে ছড়ানো সেই আগুনের গনগনে আঁচে সোমবারের বলি আরও ন’টি প্রাণ। যার মধ্যে ৬ জনই বিক্ষোভকারী। ধৃতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছে।

প্রশাসন জানাচ্ছে, সোমবার ইস্ফাহান প্রদেশের কোয়াহদেরিজান শহরে একটি থানা আক্রমণ করে বিক্ষোভকারীরা। পুলিশের বন্দুক, আগ্নেয়াস্ত্র কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। আর তাতেই মৃত্যু হয় ওই ছ’জনের। বাকি তিন জনের এক জন পথচলতি কিশোর, এক পুলিশ ও এক সেনা।

গত বৃহস্পতিবার দেশের উত্তর-পূর্বের মাশহাদ শহরে বিক্ষোভের প্রথম স্ফূলিঙ্গ জ্বলে উঠেছিল। মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে, দুর্নীতির প্রতিবাদে, এবং পরবর্তীতে সরকারের বিরোধিতায়। দাবি ছিল, যে দেশে মানুষ কাজ পাচ্ছে না, জিনিস পত্রের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে, সে দেশের সরকার আঞ্চলিক সংঘর্ষ থামাতে এক বিপুল ব্যয়ভার বহন করছে কেন? সরকারের কাছে জবাবদিহি দাবি করে শুরুতে পথে নেমেছিল সাধারণ মানুষ। সেই আন্দোলনের পিছনে না ছিল কোনও রাজনৈতিক দলের কলকাঠি, না মিছিলের সামনে ছিল কোনও পরিচিত মুখের দাপুটে নেতৃত্ব।

তার পর থেকে ধিকিধিকি জ্বলছে ইরান। পাঁচ দিনে প্রাণ গিয়েছে অন্তত ২১ জনের। আর্থিক সংস্কারের দাবিতে শুরু হওয়া মিছিল ক্রমশ রাজনৈতিক চেহারা নিয়েছে। সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেইয়ের পদত্যাদের দাবিতে সরব হয়েছে মানুষ। কোথাও কোথাও প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি সরকারের অবসান ঘটিয়ে রাজতন্ত্র ফিরিয়ে আনার দাবি তুলেছে মানুষ। অভিযোগ, দেশের অর্থনৈতিক খোলনলচে বদলানোর যে প্রতিশ্রুতি দিয়ে ২০১৩ সালে রুহানি ক্ষমতায় এসেছিলেন, চার বছর পরেও সেই কথা রাখতে পারেননি তিনি। আর সেই ক্ষোভেই আজ ফুঁসছে খোরামাবাদ, আহভাজ, জানজান, নজাফবাদের মতো একের পর এক প্রাদেশিক শহর। রাজধানী তেহরানেও সেই আঁচ পুরোদস্তুর টের পাওয়া যাচ্ছে।
সোমবার সন্ধেয় বড়সড় বিক্ষোভের আশঙ্কায় তেহরান জুড়ে ছিল কড়া পুলিশি প্রহরা।

বিক্ষোভ কি গণ অভ্যুত্থানের চেহারা নিচ্ছে? প্রশাসন প্রথম থেকেই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে চায়নি। তবে সোমবারের পরে সেই সুর কিছুটা বদলেছে। ইরানের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক সচিব আলি শামখানি এ দিন বলেন, ‘‘২০০৯ সালের পর এত বড় গণ আন্দোলন দেশে ঘটেনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিক্ষোভকারীদের সমর্থনে বার্তা পাঠাচ্ছে ব্রিটেন, আমেরিকা, সৌদি আরবের মানুষ। ’’

বস্তুত আর্থিক সংস্কারের দাবিতে ২০০৯ সালে ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়েছিল ইরানে। শক্ত হাতে সে বারও বিক্ষোভ দমন করেছিল সরকার। এ বারের বিক্ষোভেও একই বার্তা দিয়েছে রুহানি প্রশাসন। বিক্ষোভকারীদের কড়া মূল্য চোকাতে হবে বলে প্রকাশ্যে হুঁশিয়ারি দিয়েছে সরকার। আর খামেনেই আজ জাতীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এ বার্তায় বলেন, ‘‘শত্রুরা এক হয়ে তাদের ক্ষমতা, টাকা ও গোয়েন্দা ব্যবহার করে আমাদের অসুবিধায় ফেলার চেষ্টা করছে। তারা সফল হবে না।’’  ইঙ্গিত  প্রতিবেশী সৌদি আরবের দিকেই। রিয়াধের সুরে বিক্ষোভকারীদের প্রতি সমর্থনের মনোভাবই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *