বাংলাদেশের পণ্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানির জন্য নতুন নতুন বাজার খোঁজার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ সোমবার সকালে মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা-২০১৮ (ডিআইটিএফ) উদ্বোধন করে শেখ হাসিনা এ জন্য তাঁর সরকারের নানা উদ্যোগের কথাও তুলে ধরেন।
ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিজেদের সচ্ছলতার কথা ভাবলেই শুধু হবে না। পাশাপাশি মানুষ যাতে আপনাদের পণ্য কিনতে পারে, সেটার কথাও ভাবতে হবে।’
সরকার গ্রামের মানুষের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ওপর বিশেষ জোর দিচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গ্রামের মানুষের আর্থিক সচ্ছলতা যদি ভালো হয়, তাহলে তাঁরা আপনাদের উৎপাদিত পণ্য ক্রয় করতে পারবে।এ জন্য প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশ নানাভাবে যোগাযোগ ব্যবস্থা জোরদার করছে বলেও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘শুধু নিজের দেশ নয়, বাইরের দেশ এমনকি নতুন নতুন বাজার এবং সেখানে নিজেদের পণ্য রপ্তানির জন্য উদ্যোগ নিতে হবে।প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে নিজেদের বাজার ব্যবস্থা আরো বিস্তৃত করতে সরকার ১২টি নতুন দূতাবাস এবং ১৭টি নতুন মিশন খুলেছে’।
‘সারা বিশ্বের দূতাবাস, মিশনের কর্মকর্তাদের ডেকে তাদের নতুন বাজার, বিনিয়োগ বাড়ানো এবং ব্যবসা সম্প্রসারণের ব্যাপারে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দেশে ১০০টি নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী শিল্পের পাশাপাশি দেশের কৃষিভিত্তিক শিল্পের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, ‘কৃষি আমাদের ভিত্তি। কিন্তু শিল্পের সম্প্রসারণও আমাদের ঘটাতে হবে। শিল্প ছাড়া না হলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চাকা শক্তিশালী হবে না। কিন্তু কৃষিভিত্তিক শিল্প গড়ে তা দিয়ে পণ্য তৈরি করে বাইরে রপ্তানি করতে হবে। রপ্তানি আয় বাড়াতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হয়েই আমরা ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত হয়ে ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করতে চাই। আর ২০৪১ সালে আমরা দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হতে চাই।’
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের পাশের মাঠে আজ থেকে শুরু হওয়া এ মেলা চলবে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) যৌথ এর আয়োজন করেছে।
এবারের মেলায় ১৪ ক্যাটাগরিতে দেশ-বিদেশের ৫২০টি স্টল ও প্যাভিলিয়ন বরাদ্দ পেয়েছে। এর মধ্যে থাকছে ৬৪টি প্রিমিয়াম প্যাভিলিয়ন, ৩৬টি মিনি প্রিমিয়াম প্যাভিলিয়ন, ১৭টি জেনারেল প্যাভিলিয়ন, ২৫টি মিনি জেনারেল প্যাভিলিয়ন, চারটি রিজার্ভ প্যাভিলিয়ন, ছয়টি মিনি রিজার্ভ প্যাভিলিয়ন, ২৭টি বিদেশি প্যাভিলিয়ন ও আটটি মিনি বিদেশি প্যাভিলিয়ন। এ ছাড়া ৬৭টি প্রিমিয়ার স্টল, ১৮টি বিদেশি স্টল, ২৬০টি সাধারণ স্টল ও ২৪টি ফুড স্টল।
এবারের মেলায় বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, পাকিস্তান, চীন, মালয়েশিয়া, ইরান, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ কোরিয়া, জার্মানি, নেপাল, হংকং, জাপান, আরব আমিরাত, মরিশাস, ঘানা, মরক্কো ও ভুটান অংশগ্রহণ করে। অংশগ্রহণকারী দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের উৎপাদিত পণ্য প্রদর্শন করবে।
এবারের মেলার মূল ফটকে তুলে ধরা হবে বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্য।