আরএসএস ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতাদের আওরঙ্গাবাদের শরফু ভাইয়ের পান খেতে পরামর্শ দিয়েছেন অল ইন্ডিয়া মজলিশ-এ-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (এমআইএম) নেতা আসাদুদ্দিন ওবেইসি। এটা তাদের জনসংখ্যা বাড়াতে ভূমিকা রাখবে বলে ফোঁড়ন কাটেন তিনি।
তার এমন বক্তব্যের অবশ্য পটভূমি আছে।
ভারতে মাত্রাতিরিক্ত জন্মহারের কারণে মুসলমানরা সংখ্যায় বেড়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে সম্প্রতি বিজেপির মিত্র আরএসএস রীতিমতো শঙ্কা প্রকাশ করেছে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের এক সমাবেশেও এ নিয়ে কথা বলেছেন তাদের নেতারা। সমবেত লোকদের উদ্দেশে নেতারা বলেন জন্মসংখ্যা বৃদ্ধি করতে। একজন নেতা বলেন, প্রয়োজনে প্রত্যেকে পাঁচজন করে সন্তানের জন্ম দিন।
এর সামলোচনায় অল ইন্ডিয়া মজলিশ-এ-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন নেতা আসাদুদ্দিন ওবেইসি চরম শ্লেষাত্মক মন্তব্য করেছেন। এমনিতে প্রতিপক্ষের ওপর হুল ফোটানো ভাষণের জন্য তিনি ব্যাপক পরিচিত। সেই আসাদুদ্দিন মুসলিম জনসংখ্যা নিয়ে হিন্দু নেতাদের ইঙ্গিতপূর্ণ বক্তব্যের জবাবে নিজেও ইঙ্গিতপূর্ণ ভাষা-ই ব্যবহার করেছেন। এতে প্রকারান্তরে তিনি প্রতিপক্ষকে বলেন যে সন্তান জন্মদানে তাদের হয়তো দুর্বলতা আছে।
তবে আসাদুদ্দিনের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন খোদ তার সম্প্র্রদায়ের নেতারাও।
আসাদুদ্দিনের ওই আলোচিত বক্তব্যসহ এক ভিডিও সম্প্রতি প্রকাশ পেয়েছে এবং তা ভাইরাল হয়ে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি করেছে ভারতে। হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (ভিএইচপি) সমালোচনায় আসাদুদ্দিনের এমন আক্রমণাত্মক আর বিদ্রুপাত্মক বক্তব্যের সমালোচনা করেন ইসলামী পণ্ডিত তারিফ ফতেহ তার টুইটার অ্যাকাউন্টে। ওই ভিডিও নিজের টুইটারে দিয়ে ফতেহ বলেন, ভারতের একজন অগ্রণী নেতা কীভাবে হিন্দুদের নিয়ে তামাশা করছেন! তিনি হিন্দুদের বেশি সন্তান জন্ম না দেওয়া নিয়েও মজা নিচ্ছেন।
ওই ভিডিও কবে কোথায় নেওয়া হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে এতে আসাদুদ্দিনকে পরিষ্কার বলতে শোনা যায়- আমাদের জনসংখ্যা সঠিক নিয়মে বাড়ছে। আমাদের সংখ্যা দেখে বিশ্ব হিন্দু পরিষদওয়ালারা ভয় পেয়ে গিয়েছে। তাই তারা নিজেদের ধর্মীয় সমাবেশে হিন্দুদের বলেছেন চার চারজন করে সন্তান জন্ম দিতে। আমি তো বলি তারা (নেতারা) নিজেরা একজন জন্ম দিতে পারেন না, কিন্তু লোকজনকে বলছেন চারজন করে জন্ম দিতে। যদি তারা সন্তান জন্ম দিতে সক্ষম না হন তবে আওরঙ্গবাদে আসুন। সেখানে এক পানের দোকান আছে। ওই দোকানের নাম ‘তারা পান শপ’…সেখানে পাঁচ হাজার টাকায় একটি পান বিক্রি করেন শরফু ভাই… সেই পান খেয়ে নিন, টনাটন কাজ হয়ে যায়… আমাদের তো সেই পানের দরকারই পড়ে না। আমরা পান না খেয়েই মাশা-আল্লাহ আছি… ওই পানে শরফু ভাই জাফরান দেন, শ্রেষ্ঠ মানের মধু মেশান… পাঁচ হাজার রুপিই তো দাম… খান… খেয়ে ফায়দা হলে এসে আমাদের মিঠাই খাওয়ান!
সূত্র : জনসত্তা.কম