গতকাল মঙ্গলবার রাত সোয়া নয়টার দিকে উপজেলার খুলনা-মোংলা মহাসড়কের যুগীখালী সেতুর পাশে এ ঘটনা ঘটে। তবে পুলিশ শাহনেওয়াজকে ছেড়ে দিয়েছে।
শাহনেওয়াজ পিরোজপুর জেলা পুলিশ লাইনে কনস্টেবল পদে কর্মরত। তাঁর বাড়ি খুলনার লবণচরা এলাকার। প্রায় চার মাস আগেও উপজেলার টাউন নওয়াপাড়া এলাকায় ছিনতাইয়ের সময় পুলিশ সদস্য শাহনেওয়াজ ধরা পড়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
মাছ ব্যবসায়ী আবদুর রব শেখ বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার লখপুর গ্রামের আলী আকবর শেখের ছেলে। ছিনতাইয়ের বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, গতকাল রাত সোয়া নয়টার দিকে আবদুর রব কাটাখালী এলাকা থেকে হেঁটে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় একটি মোটরসাইকেলে এসে দুই ব্যক্তি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাঁর পথরোধ করে। পরে তাঁর কাছে মাদকদ্রব্য আছে দাবি করে দেহ তল্লাশি করে। কিন্তু মাদকদ্রব্য না পেয়ে ওই দুই ব্যক্তি তাঁর কাছে থাকা ১৯ হাজারের বেশি টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ সময় আবদুর রব ছিনতাইকারী বলে চিৎকার করলে স্থানীয় বস্তির অর্ধশতাধিক নারী-পুরুষ ছুটে গিয়ে একজনকে আটক করে পিটুনি দেয়। মোটরসাইকেল নিয়ে দূরে দাঁড়িয়ে থাকা তাঁর সহযোগী টাকা নিয়ে দ্রুত খুলনার রূপসার দিকে পালিয়ে যায়। পরে আটক ব্যক্তিকে কাটাখালী হাইওয়ে থানা-পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। কাটাখালী হাইওয়ে পুলিশ তাঁকে ফকিরহাট থানায় হস্তান্তর করে।
কাটাখালী হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জামাল শেখ বলেন, গতকাল রাতে ছিনতাই করার সময় স্থানীয় লোকজনের হাতে পিটুনির শিকার শাহনেওয়াজ নামের এক ব্যক্তিকে থানায় নিয়ে আসা হয়। পরে তাঁকে ফকিরহাট থানার এসআই স্বপনের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফকিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জাহিদ শেখ বলেন, ‘আপনি যা জানতে চেয়েছেন, তার সবই ঠিক আছে। ওটা ভুল বোঝাবুঝি। স্থানীয় ফকিরহাট প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী ইয়াছিনসহ অন্য সাংবাদিকেরা উপস্থিত থেকে বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছেন। মাছ ব্যবসায়ী আবদুর রবের টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। এটা নিয়ে আর লেখালেখি করার কী আছে। এ ছাড়া বিষয়টি মানবিক, তাই আমি শাহনেওয়াজকে ছেড়ে দিয়েছি।’
ফকিরহাট প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী ইয়াছিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে বলেন, ‘আমি কোনো মীমাংসায় ছিলাম না। খবর পেয়ে থানায় গিয়েছি। সেখানে গিয়ে শুনি, আবদুর রব নামের যে মাছ ব্যবসায়ীর টাকা ছিনতাই হয়েছে, তিনি কোনো অভিযোগ করেননি। এ কারণে থানার ওসি সাহেব পুলিশ সদস্য শাহনেওয়াজকে ছেড়ে দিয়েছেন। এর বেশি কিছু জানা নেই।’
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পঙ্কজ চন্দ্র রায় বলেন, শাহনেওয়াজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে পুলিশ তদন্ত করে দেখছে। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পেলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।