ছয় বছর পরে আগামীকাল কুমিল্লায় যাচ্ছেন খালেদা জিয়া

Slider
image_156507.comilla pic 2ছয় বছর পর কুমিল্লায় যাচ্ছেন ২০ দলীয় জোট নেত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। সরকার বিরোধী আন্দোলন চাঙ্গা করার অংশ হিসেবে দেশব্যাপী সফরের অংশ হিসেবে আগামীকাল শনিবার কুমিল্লায় যাচ্ছেন তিনি। এদিন বিকালে কুমিল্লা টাউন হল মাঠে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি ও গুম-খুন-হত্যা, দুর্নীতিসহ সরকারের অপশাসনের প্রতিবাদে ২০ দলীয় জোট আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দেবেন তিনি। এদিকে খালেদা জিয়ার কুমিল্লার জনসভা সফল করতে জেলা বিএনপি ও এর অঙ্গ-সংগঠনসহ ২০ দলীয় জোটের নেতা-কর্মীরা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। এ জনসভাকে ঘিরে কুমিল্লার সর্বত্রই সাজ সাজ রব। দলীয় নেত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে জেলা সদরসহ বিভিন্ন স্থানে দলীয় নেতা-কর্মীরা নির্মাণ করেছে ৫ শতাধিক তোড়ণ, লাগিয়েছে ফেস্টুন। বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে, কুমিল্লা মহানগরীসহ জেলার বিভিন্ন সড়ক। চলছে মাইকিং। দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রচারণায় এখন মুখরিত উপজেলা থেকে মহানগরী পর্যন্ত।
বিএনপি সূত্রে জানা যায়, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া আগামীকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় সফরসঙ্গীদের নিয়ে ঢাকা থেকে কুমিল্লার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেবেন। তিনি কুমিল্লায় পৌঁছে সার্কিট হাউজে বিশ্রাম নেবেন। তারপর বেলা ৩টার মধ্যেই ঐতিহাসিক কুমিল্লা টাউন হল মাঠের জনসভাস্থলে উপস্থিত হবেন। ঢাকা থেকে রওয়ানার পর কুমিল্লার দাউদকান্দি গোমতী সেতু টোলপ্লাজায় ২০ দলীয় জোট নেত্রীকে শুভেচ্ছা জানাবেন দাউদকান্দি, মেঘনা, তিতাস অঞ্চলের জনগণ। বেগম খালেদা জিয়াকে বরণের প্রথম ধাপ দাউদকান্দি থেকে শুরু হয়ে তা মহাসড়কের আলেখারচর, দূর্গাপুর, শাসনগাছা, পুলিশ লাইন, জেলখানা সড়ক, ফৌজদারি মোড়, প্রেসক্লাব মোড়, সার্কিট হাউজ মোড়, ষ্টেডিয়াম সড়ক, কান্দিরপাড় এলাকা ও জনসভাস্থল টাউনহল মাঠ পর্যন্ত বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে। এছাড়া খালেদা জিয়ার আগমনকে স্বাগত জানিয়ে বর্ণিল ব্যানার, ফেষ্টুনের সাজ থেকে বাদ পড়েনি কুমিল্লা মহানগরীর ২৭টি ওয়ার্ড, প্রতিটি উপজেলার ইউনিয়ন, ওয়ার্ডও। তাছাড়া দাউদকান্দি থেকে কুমিল্লা নগরী অন্তত ৫০ কিলোমিটার সড়ক জুড়ে নির্মাণ করা হয়েছে ৫ শতাধিক বর্ণাঢ্য তোরণ। রাস্তার দুই ধারে, বড় ভবনে রং-বেরংয়ের পোষ্টার, ব্যানার, ফেষ্টুন, প্লে-কার্ডে ছেয়ে গেছে পুরো জেলায়। সূত্র আরো জানায়, জনসভার প্রধান সমন্বয়ক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও যুগ্মমহাসচিব নজরুল ইসলাম খানের সার্বিক তত্ত্বাবধানে জনসভার সকল কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকেই নজরুল ইসলাম খান কুমিল্লায় অবস্থান করছেন। তার সঙ্গে রয়েছেন নোয়াখালীর সাবেক এমপি মো: শাহজাহান।
এদিকে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার আগমনে কুমিল্লা জেলা বিএনপিসহ এর অঙ্গ-সংগঠন নেতা-কর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা। এছাড়াও ২০ দলীয় জোটের অন্যান্য শরীক দলের নেতা-কর্মীরাও বেশ উদ্বেলিত। উপজেলা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের ইউনিটগুলো ব্যাপক লোক সমাগম ঘটাতে প্রায় ১৫ দিন আগ থেকেই মতবিনিময়, সভা-সমাবেশ ও গণসংযোগ চালিয়েছেন। কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিন ও বিএনপির কেন্দ্রিয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কুসিক মেয়র মনিরুল হক সাক্কুর সার্বিক তদারকিতে বেগম খালেদা জিয়ার জনসভায় লাখো মানুষের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে দলীয় নেতা-কর্মীরা নিরলস পরিশ্রম করে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছেন।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বেগম খালেদা জিয়ার জনসভাস্থল কুমিল্লার ঐতিহাসিক টাউন হল মাঠের উত্তরে মিলনায়তনের দ্বিতীয় তলার বেলকনিতে তৈরি করা হয়েছে বিশাল মঞ্চ। মাঠের অগ্রভাগে বাঁশের বেষ্টনির ভেতরে মহিলাদের জন্য আসন ব্যবস্থা থাকছে। মাঠের উত্তর পশ্চিম কোণে সাংবাদিকদের বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মাঠের উত্তরে মুক্তমঞ্চে জাসাসের শিল্পীরা দুপুর থেকে গান পরিবেশন করবেন। মাঠের পূর্ব-পশ্চিম পার্শ্বে রয়েছে পানীয় জলের এবং উত্তর-পশ্চিম গেইটের ভেতরে করা হয়েছে গণ টয়লেটের ব্যবস্থা।
এ ব্যাপারে কুমিল্লা (দক্ষিণ) জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমিন উর রশিদ ইয়াছিন বলেন, জনসভায় বেগম রাবেয়া চৌধুরী সভাপতিত্ব করবেন। কেন্দ্রিয় নেতৃবৃন্দ কয়েকদিন আগ থেকেই কুমিল্লায় অবস্থান করছেন। তাদের দিক নির্দেশনায় অত্যন্ত সুচারুভাবে দেশনেত্রীর জনসভার সকল কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০০৮ এর ২৩ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ধানের শীষের পক্ষে ভোট চাইতে সর্বশেষ কুমিল্লায় এসেছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *