আজ সৌদি আরবে ঈদ, কোরবানি দিলেন হাজিরা

Slider জাতীয়

d3a94dc85be8a5fa1529d5c962727195-59a907ec1937a

 

 

 

 

 

আজ সৌদি আরবে ঈদ, সূর্যোদয়ের পর মক্কার কাবা শরিফে ঈদের নামাজ হয়। হাজিরা মুজদালিফায় থাকায় তাদের ঈদের নামাজ পড়তে হয়না ।
ফজরের নামাজ পড়ে সূর্যোদয়ের কিছু আগে মিনার উদ্দেশে রওনা দেন হাজিরা। মুজদালিফায় অবস্থান করা ওয়াজিব। তাঁবুতে পৌঁছে বিশ্রাম ও নাশতা সেরে বড়জামারায় গিয়ে শয়তানের উদ্দেশে পাথর নিক্ষেপ করবেন। জামারা হলো মিনা ময়দানে অবস্থিত তিনটি স্তম্ভ। এগুলোর নাম জামারাতুলউলা বা ছোটজামারাহ্, জামারাতুলউসতা বা মধ্যমজামারাহ্এবং জামারাতুলকুবরাবা বড়জামারাহ্।পাথর নিক্ষেপের পরবর্তী কাজ হলো কোরবানি করা।
হাজিদের একটি অংশ নিজে মুস্তাহালাকায় (পশুরহাট ও জবাইকরারস্থান) গিয়ে কোরবানি দেন। একটি অংশ ইসলামি উন্নয়ন ব্যাংকে (আইডিবি)৪৫০রিয়াল জমা দিয়ে তাদের মাধ্যমে কোরবানি দেন।এতে সময় বাচে এবং নিরাপদ, প্রতারিত হওয়ার সুযোগ নেই।
বাংলাদেশের হাজিদের একটি অংশপ্রবাসী, বিশেষ করে নিজ জেলার কোনো প্রবাসীকে পেলে তাঁদের মাধ্যমে কোরবানি দেন। এই প্রবাসীরা মূলত হজ উপলক্ষে পশুব্যবসার সঙ্গে যুক্ত থাকেন। অন্য কাউকে দিয়ে কোরবানি দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু প্রতারণার ঘটনাও ঘটে। হজে কোরবানির পশুর মধ্যে ছাগল, দুম্বা, উট অন্যতম। বাংলাদেশিরা উট কোরবানি খুব কমই দিয়ে থাকেন। পশু বেচাকেনার সঙ্গে জড়িত প্রবাসীদেরসঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৭ জিলহজে পর থেকেই পশু কেনা শুরুহয়। আইডিবির তত্ত্বাবধানে সবচেয়ে বেশি কোরবানি হয় মক্কায়। আইডিবির মাধ্যমে দমে শোকর বা কোরবানি জন্য কুপন মুল্য ৪৫০ রিয়াল। এরমধ্যে পশুরদাম,কসাইখানার খরচ,হিমাগারে মাংস সংরক্ষণ ও পৃথিবীর বিভিন্ন মুসলিম দেশের গরিব লোকজনের মধ্যে এইমাংস বিতরণের খরচ বাবদ নেওয়া হয়। প্রতি বছর বাংলাদেশেও এ মাংস ‘দুম্বারমাংস’ নামে যায় এবং দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিলি হয়।আবার অনেক হাজি যেসব এজেন্সির তত্ত্বাবধানে যান, তাদের মাধ্যমেই কোরবানি দিয়ে থাকেন। এ ক্ষেত্রে এজেন্সি গুলো তাদের ভাড়া নেওয়া বাড়িতে থাকা হাজিদের বিভিন্ন বেলার খাবারের সময় এ মাংসপরিবেশন করতে পারে।
আমরা যেহেতু আগেই কোরবানির টাকা নির্ধারিত ব্যাংকে জমা দিয়েছি, তাই আমাদের আর কোরবানির জন্য নির্ধারিত স্থানে যেতে হলোনা। তাই আমরা জামারা থেকে বেরিয়ে মাথামুণ্ডন করার জন্য নাপিতের দোকানের খোঁজ করলাম। কোনো কোনো জায়গায় দেখলাম, কিছু কিছু হজযাত্রী পয়সার বিনিময়ে অন্য হজযাত্রীদের মাথামুণ্ডন করে দিচ্ছেন। আমরা মাথামুণ্ডন করে গোসল সেরে মিনা থেকে স্বাভাবিক পোশাকপরে ১০ জিলহজ তাওয়াফে জিয়ারত করার জন্য মক্কার পথেরওনা হলাম। এটি হজের অন্যতম ফরজ কাজ।
মসজিদুল হারামের চত্বরের একপ্রান্ত থেকে একটাপায়েচলাপথজামারারদিকেচলেগেছে। রাস্তাটির বেশিরভাগ অংশইপাহাড়ের ভেতর দিয়ে তৈরি করা টানেল। টানেলের ভেতর পর্যাপ্তআলো ও বাতাসের ব্যবস্থা। মাথার ওপর বিশাল আকারের ফ্যান। এই টানেল দিয়ে হাঁটার সময় একটু ভয়ভয় লাগা অস্বাভাবিক নয়।
কাবা শরিফের তাওয়াফ শুরু করতে হয় হাজরেআসওয়াদ থেকে। ভিড়ের কারণে হাজরে আসওয়াদ স্পর্শ বা চুমু দেওয়া সম্ভবনা হলে ইশারায় চুমু দিতে হয়। শুরু করলাম তাওয়াফ। প্রচণ্ড ভিড়। তাওয়াফ করতে লাগল দুই ঘণ্টা। আর সায়ি (অর্থাত্সাফা-মারওয়া সাতবার আসা-যাওয়া) করতে লাগল আরও দুই ঘণ্টা। এখান থেকে আবার মিনায় জামারাতে যেতে হবে পাথর ছোড়ার জন্য।
হাজিরা মিনায় দুইদিন অবস্থান করে হজের অন্য আনুষঙ্গিক কাজ যেমন প্রতিদিন জামারায় তিনটি (ছোট, মধ্যম, বড়) শয়তানকে সাতটি করে পাথর নিক্ষেপ করবেন। মিনার কাজ শেষে আবার মক্কায় বিদায়ী তাওয়াফ করার পর নিজ নিজ দেশে ফিরবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *