এস. এম. মনিরুজ্জামান মিলন, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা সেচ্ছাসেবক লীগের অর্থ সম্পাদক আব্দুল মান্নান হত্যার পাঁচ দিন পর নওগাঁয় গ্রেফতার হন মূল আসামী সদর থানা যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সজীব দত্ত।
সজীব দত্তকে গ্রেফতারে বিশেষ ভূমিকা পালন করেন ঠাকুরগাঁও জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেওয়ান মো. লালন আহমেদ নেতৃত্বাধীন একটি দক্ষ আইটি বিশেষজ্ঞ দল। তারা বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করে সজীব দত্তের অবস্থান সনাক্ত করেন এবং নওগাঁ জেলা পুলিশের সহায়তায় সজীব দত্তকে গ্রেফতার করতে সমর্থ হন।
সজীব দত্তকে গ্রেফতার ও পুলিশ বাহিনীর চৌকস দলের অসামান্য অবদানের কথা চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে প্রশংসায় ভাসছেন পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা।
তারা নওগাঁয় গ্রেফতারকৃত সজীব দত্তের ছবি প্রকাশ করে, বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত সংবাদের লিংক প্রদান করে, ঠাকুরগাঁও জেলার পুলিশ সুপার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নাম উল্লেখ করে বিভিন্ন ধরণের স্ট্যাটাস প্রদান করছেন। সবাই ঠাকুরগাঁও জেলা পুলিশকে অভিনন্দন ও বিশেষ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছেন।
ইন্ডিপেনডেন্ট টেলিভিশনে নিজের পাঠানো প্রতিবেদনের ভিডিও প্রকাশ করে সাংবাদিক তানভির হাসান তানু লিখেছেন, “ধন্যবাদ ঠাকুরগাঁওয়ের দক্ষ আইটি বিশেষজ্ঞ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দেওয়ান লালন আহমেদ ও অন্যান্য পুলিশ বাহিনীর কর্মকর্তা ও সদস্যদের। আসামী গ্রেফতারে লালন ভাইয়ের ভূমিকা অতুলনীয়। আপনার দক্ষতায় কৃতজ্ঞ ঠাকুরগাঁওবাসী।”
চট্টগ্রামে কর্মরত ঠাকুরগাঁওয়ের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব শাওন আমীন লিখেছেন, “কবি হলেও প্রমান করলেন তিনি একজন জাদরেল পুলিশ অফিসার। ধন্যবাদ এসপি ফারহাত সাহেব’কে।”
এছাড়া অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পুলিশ সুপার ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের ব্যক্তিগত আইডিতে বিভিন্ন ধরণের অভিনন্দনবার্তা ও ধন্যবাদজ্ঞাপক বাক্য লিখেছেন।
জেলা প্রশাসন ও ঠাকুরগাঁওবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়ে পুলিশ সুপার ফারহাত আহমেদ বলেন, অপরাধীদের ধরতে ঘটনার দিন সকালে আমরা একটি টিম গঠন করি। তারা অপরাধীদের ফোন ট্র্যাক করে বেশকিছু অভিযান পরিচালনা করে। নওগাঁয় দীর্ঘসময় অবস্থানকালে নওগাঁ পুলিশের সহায়তায় আমরা মান্নান হত্যার মূল আসামী সজীব দত্তকে গ্রেফতারে সমর্থ হই। মূলত, বারবার অবস্থান ও ফোন নম্বর বদলানোয় সজীবকে গ্রেফতারে বিলম্ব হয়।
উল্লেখ্য, রাজনৈতিক হত্যার ঘটনায় অপরাধীদের গ্রেফতার করতে সমর্থ না হওয়ায় গত পাঁচ দিন ক্ষোভে ফুঁসছিল ঠাকুরগাঁওবাসী। তারা হত্যার দিন আব্দুল মান্নানের জানাজার পর থেকেই বিভিন্নভাবে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিল। পরদিন তারা ঠাকুরগাঁও শহরের প্রাণকেন্দ্র চৌরাস্তায় মানববন্ধন কর্মসূচিও পালন করে। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে প্রতিনিয়ত চলতে থাকে প্রতিবাদ। সেইসাথে উক্ত ঘটনায় পুলিশ ও সাংবাদিকদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন অনেকে।