বাংলাদেশের পাকিস্তান-পরীক্ষা আজ

Slider খেলা

67160_bang

 

 

 

 

 

 

বড় আসরে পা রাখার আগে ভারত-পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে নিজেদের ঝালিয়ে নিবেন টাইগাররা। আর সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দুই দলের বিপক্ষে গা গরমের ম্যাচকে টাইগারদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভাবছেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। আইসিসির অভিজাত এ ওয়ানডে আসরের মূল লড়াইয়ে নামার আগে আজ গা-গরমের ম্যাচে পাকিস্তানের মুখোমুখি হচ্ছে টাইগাররা। বার্মিংহামের এজবাস্টন মাঠে খেলা শুরু বাংলাদেশ সময় বিকাল সাড়ে ৩টায়। আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে খেলতে নামার আগে ত্রিদেশীয় সিরিজে ভালো মতোই প্রস্তুতি সারে বাংলাদেশ দল। আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজের শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দারুণ জয় নিয়ে আত্মবিশ্বাসটা তুঙ্গে টাইগারদের। ২৭১ রানের টার্গেটে পাঁচ উইকেটের জয় নিয়ে আইসিসি ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ে শ্রীলঙ্কাকে সরিয়ে ষষ্ঠ স্থানে উঠে আসে বাংলাদেশ। দারুণ ফর্মে রয়েছেন দলের শীর্ষ বোলার ও ব্যাটসম্যানরা। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে ইংলিশ কন্ডিশনের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে সাসেক্সে ১০ দিনের ক্যাম্প করে বাংলাদেশ দল। এরপর আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজ  খেলে মাশরাফিরা। তবে ইংল্যান্ডের কন্ডিশনটা আয়ারল্যান্ডের চেয়ে ভিন্ন হবে বলে প্রস্তুতি ম্যাচ দুটিকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। মাশরাফি বলেন, ‘প্রস্তুতি ম্যাচ দুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আয়ারল্যান্ডের চেয়ে ইংল্যান্ডের উইকেট পুরোপুরি ভিন্ন। তবে ভারত ও পাকিস্তানের মতো দলের বিপক্ষে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচে আমরা একটা ধারণা পাব। তাই প্রস্তুতি ম্যাচ দুটিও আমাদের জন্য বড় ম্যাচ।’
দেশের বাইরে প্রথমবারের মতো নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয় পেল বাংলাদেশ। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও বাংলাদেশের সঙ্গে একই গ্রুপে খেলবে কিউইরা। ত্রিদেশীয় সিরিজ নিয়ে মাশরাফি বলেন, ‘আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে বৃষ্টির কারণে আমাদের জয় হাতছাড়া হয়েছে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে বেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেই আমরা হেরেছি। আর শেষ দুটি ম্যাচে আমরা খুব ভালো খেলেছি। এই মুহূর্তে দলের আত্মবিশ্বাস অনেক ওপরে।’ বৃহস্পতিবার রাতে আয়ারল্যান্ড থেকে বার্মিংহামে পৌঁছে মাশরাফি বাহিনী। ত্রিদেশীয় সিরিজে খেললেও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির বাংলাদেশ দলে নেই নাসির হোসেন, নুরুল হাসান সোহান ও শুভাশিষ রায়। ত্রিদেশীয় সিরিজ শেষে দেশে ফিরে আসেন অলরাউন্ডার নাসির হোসেন ও পেসার শুভাশিষ। তবে বিকল্প উইকেটরক্ষক হিসেবে দলের সঙ্গে রেখে দেয়া হয়েছে নুরুল হাসান সোহানকে।
ওয়ানডেতে পরস্পর ৩৫ সাক্ষাতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩১ হারের বিপরীতে ৪ বার জয় দেখেছে বাংলাদেশ। তবে সর্বশেষ পরিসংখ্যানটা টাইগারদের জন্য প্রেরণাদায়ক। সর্বশেষ দ্বিপক্ষীয় সিরিজে পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশের লজ্জায় ডোবায় বাংলাদেশ। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সফরে ৩-০তে সিরিজ খোয়ায় সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান। ওই সিরিজে চারটি সেঞ্চুরি আসে বাংলাদেশের তিন খেলোয়াড়ের ব্যাট থেকে। সিরিজের শুরুর দুই ওয়ানডেতে টানা দুই সেঞ্চুরি (১৩২ ও ১১৬)  হাঁকান টাইগার ওপেনার তামিম ইকবাল। প্রথম ওয়ানডেতে মুশফিক ১০৫ ও শেষ ম্যাচে ১২৭ রানের ইনিংস খেলেন বাংলাদেশের অপর ওপেনার সৌম্য সরকার। সদ্য ত্রিদেশীয় সিরিজে টানা দুই ম্যাচে ফিফটি হাঁকিয়ে আইসিসির ওয়ানডে ব্যাটসম্যান র‌্যাঙ্কিংয়ে ক্যারিয়ার সেরা ২৭তম স্থানে উঠে এসেছেন সৌম্য। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয়ে ব্যাট হাতে নৈপুণ্য দেখান তামিম, মুশফিক, সাব্বির মাহমুদুল্লারা। বাংলাদেশের ক্রিকেট ভক্তদের জন্য স্বস্তিটা মোস্তাফিজুর রহমানকে স্বরূপে ফিরতে দেখে। ত্রিদেশীয় সিরিজে তিন ম্যাচে মোস্তাফিজের শিকার ৭ উইকেট। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে ৯ ওভারের স্পেলে মাত্র ২৩ রানে চার উইকেট নেন বাংলাদেশের এ কাটার মাস্টার। বাংলাদেশ-পাকিস্তান ওয়ানডে দ্বৈরথে দ্বিতীয় সর্বাধিক ৬৭৬ রানের কৃতিত্ব তামিম ইকবালের। পাকিস্তানের সাবেক তারকা মোহাম্মদ ইউসুফের সংগ্রহ ৮৯৩ রান।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে স্বাগতিক ইংল্যান্ড ও সর্বশেষ বিশ্বকাপের দুই ফাইনালিস্ট অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে একই গ্রুপে খেলবে বাংলাদেশ। আর এটাকে ‘গ্রুপ অব ডেথ’ আখ্যা দিচ্ছেন মাশরাফি বিন মুর্তজাও। মাশরাফি বলেন, ‘আমরা যে গ্রুপে পড়েছি, সেটা বলতে গেলে ‘গ্রুপ অব ডেথ’। বিশ্বের বড় তিনটি দলের বিপক্ষে একই গ্রুপে আমাদের খেলতে হবে। তাদের বিপক্ষে আপনি ভবিষ্যৎবাণী করতে পারবেন না, আপনার দিনে আপনি জিততে পারেন। আমরা ম্যাচের শুরু থেকেই তৈরি থাকব, সুযোগ এলে আশা করি তা ভালোভাবে কাজে লাগাতে সক্ষম হবো।’
ত্রিদেশীয় সিরিজে নিউজিল্যান্ডকে হারানোয় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে টাইগারদের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। তবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটি কঠিন হবে বলে মনে করেন মাশরাফি। বলেন, টিম সাউদি ও ট্রেন্ট বোল্ট ফিরলে ওদের বোলিং আরো ভালো হবে। কেন উইলিয়ামসন ও মার্টিন গাপটিলও ফিরবেন। তবু একটা জয় সবসময় দলকে আত্মবিশ্বাস এনে দেয়। আয়ারল্যান্ড থেকে এটা নিয়ে ফিরতে  পারলাম, আশা করি এটা কাজে লাগবে।’ আগামী ৩০শে মে লন্ডনের ওভাল মাঠে ভারতের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। আর আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে টাইগাররা স্বাগতিক ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে আগামী ১লা জুন। গ্রুপের নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে ৫ই জুন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামবে টাইগাররা। আর শেষ ম্যাচে ৯ই মে টাইগারদের প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড।
প্রস্তুতি ম্যাচের সূচি
২৭শে মে    বাংলাদেশ-পাকিস্তান    এজবাস্টন, বার্মিংহাম
২৮শে মে    ভারত-নিউজিল্যান্ড    কেনিংটন ওভাল, লন্ডন
২৯শে মে    অস্ট্রেলিয়া-পাকিস্তান    এজবাস্টন, বার্মিহাম
৩০শে মে    বাংলাদেশ-ভারত    কেনিংটন ওভাল, লন্ডন
৩০শে মে    নিউজিল্যান্ড-শ্রীলঙ্কা    এজবাস্টন, বার্মিংহাম
বি. দ্র: সব খেলাই শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বিকাল সাড়ে তিনটায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *