আরও ছয় মেডিকেল কলেজ বন্ধ হতে পারে: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

Slider বাংলার মুখোমুখি সারাদেশ

9618f5e15daa0916eeb464bd42643a14-91f7ae489edb077f9d9cffcf7725fa4d-2

 

 

 

 

 

 
ঢাকা;  মেডিকেল শিক্ষা বিশেষজ্ঞ বলেছেন, মেডিকেল শিক্ষার ছয়টি মৌলিক বিষয়ে দেশে ৪ হাজার ৪০৭ জন শিক্ষকের স্বল্পতা আছে। অন্যদিকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, মেডিকেল শিক্ষার মানের ব্যাপারে কোনো সমঝোতা করা হবে না। চারটি কলেজ বন্ধ করা হয়েছে, প্রয়োজনে আরও ছয়টি বন্ধ করে দেওয়া হবে।

আজ শনিবার রাজধানীর এলজিইডি ভবনে আয়োজিত মেডিকেল শিক্ষার বর্তমান পরিস্থিতি এবং ‘হেলদি বাংলাদেশ’ নামের নাগরিক মোর্চার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তাঁরা এ কথা বলেন। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পাটিরসিপেটরি রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) দিনব্যাপী দুই পর্বের এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

বিকেলে ‘হেলদি বাংলাদেশ’ উদ্বোধনীর পর মোহাম্মদ নাসিম বলেন, বেশ কিছু মেডিকেল কলেজে গ্রন্থাগার ও পরীক্ষাগার নেই। হাসপাতালে রোগী থাকে না। সরকারি কর্মকর্তারা পরিদর্শনে গেলে রোগী ভাড়া করে আনে। এদের কোনোটিতে শিক্ষক নেই। এখানে শিক্ষকেরা ভাড়ায় কাজ করেন। এটা চলতে পারে না। তিনি বলেন, ‘মানহীন মেডিকেল কলেজ হয়তো ১০টা আছে। এ বছর চারটি বন্ধ করা হয়েছে, তাদের শিক্ষার্থী ভর্তি করতে দেওয়া হয়নি। এ থেকে শিক্ষা না নিলে অন্যগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে।’
আয়োজকদের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষা আরও উন্নত করার জন্য পরীক্ষার খাতায় কোড বা সংকেত ব্যবহার করার বিষয়টি মন্ত্রণালয় বিবেচনা করবে। ‘জাতীয় শারীরিক ফিটনেস দিবস’ বেছে নেওয়ার বিষয়টিও মন্ত্রণালয় বিবেচনা করবে।
সকালের অধিবেশনে দেশে মেডিকেল শিক্ষার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। এতে মূল বক্তব্য উপস্থাপনের সময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সেন্টার ফর মেডিকেল এডুকেশনের পাঠ্যক্রম উন্নয়ন ও মূল্যায়ন কর্মকর্তা অধ্যাপক মো. হ‌ুমায়ূন কবির তালুকদার বলেন, শিক্ষক স্বল্পতার মধ্য দিয়ে মেডিকেল শিক্ষা চলছে। অ্যানাটমি, ফিজিওলজি, বায়োকেমিস্ট্রি, প্যাথলজি, মাইক্রোবায়োলজি, ফার্মাকোলজিতে ৪ হাজার ৪০৭ জন শিক্ষকের ঘাটতি আছে। শুধু ফরেনসিক মেডিসিনের শিক্ষক ঘাটতি আছে ৪২৪ জন।
এই অধিবেশনে যৌথভাবে সভাপতিত্ব করেন বিএমএর সাবেক সভাপতি অধ্যাপক রশীদ-ই-মাহবুব ও বিএমডিসির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ সহিদুল্লা। এতে কুয়ালালামপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েল মেডিকেল কলেজের এ টি এম এমদাদুল হক এবং সিঙ্গাপুর ন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইয়ং লু লিন স্কুল অব মেডিসিনের জুবায়ের আমিন মেডিকেল শিক্ষা বিষয়ে দুটি উপস্থাপনা করেন। আলোচকেরা বলেন, মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের মান উন্নত করতে হবে, পরীক্ষার খাতায় নাম-ঠিকানার পরিবর্তে কোড ব্যবহার করতে হবে, নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়াতে হবে, পাঠ্যক্রম সময়োপযোগী করতে হবে।
বিকেলের অধিবেশনে পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, দেশের স্বাস্থ্যকে এগিয়ে নিতে ‘হেলথি বাংলাদেশ’ একটি মোর্চা হিসেবে কাজ করবে। স্বাস্থ্যসেবা, পুষ্টি, পরিচ্ছন্নতা ও শারীরিক সামর্থ্য—এই বিষয়গুলো হবে কাজের প্রধান এলাকা। এসব বিষয়ে জনসচেতনতা গড়ে তোলা হবে অন্যতম কাজ।
অনুষ্ঠানে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠা জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব) আবদুল মালিক, গণস্বাস্থ্যকেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বারডেমের মহাপরিচালক অধ্যাপক নাজমুন নাহার, ওয়াটার এইডের দেশি প্রতিনিধি খায়রুল ইসলাম, বাংলাদেশ সোসাইটি ফর ইমারজেন্সি কেয়ারের সভাপতি অধ্যাপক হ‌ুমায়ূন কবির চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য দেন।
এর আগে সকালে হেলদি বাংলাদেশ দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক সই করে। পরে বাহাদুর শাহ পার্ক থেকে একটি শোভাযাত্রা বের করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *