ঢাকা ; রাজধানীর বনানীতে হোটেলে আটকে রেখে অস্ত্রের মুখে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে গণধর্ষণের মামলার প্রধান আসামি সাফাত আহমেদ আপন জুয়েলার্সের মালিকদের একজনের ছেলে। ধর্ষিতা দুই শিক্ষার্থীর একজনের দায়ের করা মামলায় ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়েছে সাফাত আহমেদসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে।
ছেলের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে দিলদার আহমেদ রবিবার রাতে বলেন, কেউ যদি এ ধরনের কাজ করে থাকে তাহলে আমি অবশ্যই তার বিচার চাই, তবে আমার ছেলে ব্ল্যাকমেইলিংয়ের শিকার।
তিনি আরো বলেন, আমার ছেলের (সাফাত) সঙ্গে বেসরকারি একটি টেলিভিশনের সংবাদ উপস্থাপিকা ফারিয়া মাহবুব পিয়াসার বিয়ে হয়। তবে আমি সেই বিয়ে মেনে নেইনি। সাফাতের তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী তাদের ধর্ষণের অভিযোগকারী দুই তরুণী দিয়ে এমনটি করিয়েছে।
এর কারণ ব্যাখা করে তিনি বলেন, মামলা করার জন্য ওই মেয়েই দুই তরুণীকে থানায় নিয়ে যায়। ঘটনার দেড় মাস পরে মামলার বিষয়টিকে তিনি নাটক হিসেবে মনে করছেন।
তদন্তের এ পর্যায়ে বনানী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল মতিন বলেন, সাফাত আহমেদ আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের বড় ছেলে। ধর্ষনের অভিযোগে সাফাত আহমেদসহ পাঁচজনকে আসামি করে দুই শিক্ষার্থীর মামলা দায়ের করলে, তাদের গুলশান-২ নম্বরের বাসায় ইতোমধ্যে বেশ কয়েকবার অভিযান চালানো হয়েছে। তবে আসামি সাফাতকে পাওয়া যায়নি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আব্দুল মতিন আরো বলেন, নাঈমের বাবার নাম সম্পর্কে এখনও নিশ্চত হতে পারেননি তারা। তবে তিনি একজন ঠিকাদার। এছাড়া সাদনান সম্পর্কে তিনি বলেন, পিকাসো নামের একটি রেস্তোরাঁর মালিকের ছেলে সাদমান। সাদনান একটি টেলিভিশন স্টেশনের প্রশাসন শাখায় কমরত বলেও তথ্য পাওয়া গেছে।
উল্লেখ্য, গত ২৮ মার্চ রাজধানীর বনানীর ২৭ নম্বর রোডের কে ব্লকের ৪৯ নম্বর ‘দি রেইনট্রি’ হোটেলের দুটি কক্ষে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীকে গণধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী দুই তরুণী গত বৃহস্পতিবার বনানী থানায় এ বিষয়ে অভিযোগ দিলে পুলিশ বিষয়টি আমলে নিয়ে তদন্ত শুরু করে।
গতকাল শনিবার রাতে এ ঘটনায় বনানী থানায় মামলা দায়ের হয়। মামলার বাদি ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী বলেছেন, অভিযুক্ত দুই যুবক প্রভাবশালী। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার পর থেকেই তাঁদের পরিবার এখন চরম উত্কণ্ঠায় আছে।
অভিযোগকারী দুই তরুণী কালের কণ্ঠকে বলেছেন, ঘটনাটি বনানীর ওই হোটেলে সারা রাত আমাদের আটকে রেখে ধর্ষণ করে সাফাত আহমেদ ও তার বন্ধু নাঈম আশরাফ। তাদেরকে ওই হোটেলের জন্ম দিনের অনুষ্ঠানে যেতে উত্সাহিত করে তাদের বন্ধু সাদনান সাকিফ। ঘটনার পর শুরুতে ভয়ে আমরা মুখ খুলতে পারিনি। পরে পুলিশের কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।