ডিমলায় কামার শিল্পের কাজ নুয়ে পরেছে!

Slider রংপুর সামাজিক যোগাযোগ সঙ্গী

Dimla News 24.04.17 3

 

 

 

 

ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি ঃ
টুং-টাং শব্দে আগুনে পুড়িয়ে লোহাকে গলিয়ে তৈরি করা হয় গৃহাস্থলির কাজে ব্যবহৃত নিত্যদিনের দাঁ-বটি। হাতুরীতে পিটিয়ে তৈরি করা এই সকল জিনিস। প্রত্যেকজনের বাসা বাড়ীতে এসব লৌহবস্তু কদর কত খানি তা ব্যবহার কারীরা জানে। আগুনে পুড়িয়ে তৈরি করা হয় দাঁ-বটি, কুঠার-ছুঁরি, শাবল-নিড়ানী, কাজে কাস্তে-কোঁদাল প্রভৃতি কাজ শিখেছে সেই ছোট বেলায় বাবা মৃত সবিন্দ্রনাথ কর্মকার কাছে। গ্রামীণ কর্মসংস্থানের পুরনোদিনের সংস্কৃতির ঐতিহ্য ভোঁতা পাথরের তৈরি বিভিন্ন প্রকার শিকার অস্ত্র।

সভ্যতার বিবর্তন ও বিকাশের সাথে-সাথে পরিবর্তন হয়েছে সবকিছুর। যে গুলোর স্মৃতিরুপ এখন স্থান পেয়েছে জাদু ঘরের লোকশিল্পে। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় এই সকল জিনিসের মধ্যে ক্ষেত-খামার ও গৃহাস্থালির কাজে ব্যবহার ব্যাপক। কিন্তু আধুনিক সভ্যতার গ্রাসে নুয়ে যেতে শুরু করেছে গ্রাম্য কামার শিল্প বলে জানান, কামার শিল্পি কারীগর রবীন্দ্র নাথ কর্মকার। ছোট বেলা থেকে তিনি বাবার কাছে দেখে-দেখে কাজ শিখেছে। কথায় বলে ‘‘শিখলে শেখ সাপের মন্ত্র, না হয় বাবার সাস্ত্র’’ খেলার ছলে ভাতী টেনে কয়লা পুড়িয়ে লোহাকেও লাল করে হাতুরীতে পেটানো হত। তারপর তৈরিকৃত অস্ত্র জলে ভিজিয়ে রেখে জ্বর সাড়ানো জন্য কিছুক্ষন।

দাদীর কাছে গল্প শোনা কাস্তের জ্বর এসেছে তাই এখন পানিতে ভিজেয়ে রাখলে জ্বর সারবে। এভাবে সেই থেকে হাতে খড়ি কাজ শেখেন বলে জানান তিনি। তার বাড়ী নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার খগাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের দোহল পাড়া গ্রামে। সোমবার দুপুরে তার সাথে কথা হলে তিনি জানান, আধুনিকতার ছোঁয়া এখন সর্বত্র এই সব কাজের পারিশ্রমিকতার মূল্যও কম। পাশাপাশি এখন গড়ে উঠেছে ওয়ার্কশপ লৌহ শিল্পের যালাই কারীগর। গ্রামগঞ্জে-হাট বাজার বন্দরে এখন তাদের তৈরীকৃত দাঁ-বটির কদর বেশি।

আমাদের কাছে তারা আসে গৃহস্থলির কাজে ব্যবহৃত জিনিসপত্রগুলো সানিয়ে নিতে। অবশ্য আমন-ইরি-বোরো ফসল কাটতে কাস্তে সানার ধুম পড়ে আমার এই কামার শালায়। অন্যদিন গুলোতে কাজ খুব কম বললেই চলে। বিভিন্ন কারণে বিলুপ্তির পথে গ্রাম্য কামার শালা। বাবার মুখে শুনেছি আমাদের এই দিকে না কি কামার পাড়া ছিল। এখন আর নেই কামার পাড়ার কামার কারীরা।

এ ব্যাপারে কথা হয় খগাখড়িবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম লিথনের সাথে, তিনি বলেন কামার শিল্প আমাদের ঐতিহ্য সংসারের প্রয়োজনীয় একটি অংশ, এটি যেন বিলিন হয়ে না যায় সে দিকে দৃষ্টি রাখা সকলের দরকার। সেই সাথে ইউপি সদস্য রুহুল আমিন বলেন এ শিল্প আমাদের অহংকার যার তৈরিকৃত সামগ্রী নিত্য দিনের সঙ্গী। আরো কথা হয় কাস্তে হাতে নিয়ে আসা কৃষক রফিকুল ইসলাম, তহিদুল ইসলা, শফিকুল ইসলাম, বিশ্বনাথ, আজিদুল ইসলাম, বলেন দাদা পুরান চাউল ভাতে বাড়ে মিশিনের তৈরী অস্ত্র আর হাতের তৈরী জিনিসের ব্যাপারটা আলাদা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *