সৃষ্টিতে খুঁজে পাই স্রষ্ঠার পরিচয়

Slider শিক্ষা সামাজিক যোগাযোগ সঙ্গী সারাদেশ

 

Photo

 

 

 

 

ধর্মীয় প্রতিবেদন

এম আরমান খান জয় : মহাজ্ঞানী,পরাক্রমশালী,সর্বশক্তিমান ¯্রষ্টা এই বিশ্বজগতের কোনো কিছুই অনর্থক সৃষ্টি করেননি। প্রতিটি সৃষ্টিই তাঁর অস্তিত্বের প্রমাণ বহন করে। তাই চিন্তাশীল সম্প্রদায়কে তাঁর সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা-গবেষণা করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে যারা চিন্তা-গবেষণা করেন, কোরআনের ভাষায় তারাই জ্ঞানী। আমাদের মাথার উপরে খুঁটিবিহীন বিশাল ঝুলন্ত আকাশ, লাখো-কোটি গ্রহ-নক্ষত্র, অজ¯্র নীহারিকা ও চদ্র-সূর্য। বিশাল বিস্তৃত জমিন, পাহাড়, সাগর, ঝরনা, নহর, নদীনালা, বনজঙ্গল, বৃক্ষলতা, নয়নাভিরাম ফলফুল আর সবুজের সমারোহ। এসব কিছু তাঁর সৃষ্টি নৈপুণ্যের জীবন্ত নিদর্শন। পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘তিনি আল্লাহ, যিনি ঊর্ধ্বদেশে স্থাপন করেছেন খুঁটিবিহীন আকাশম-লী, যা তোমরা দেখতে পাও। অতঃপর তিনি আরশে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। তিনি সূর্য ও চন্দ্রকে কর্মে নিয়োজিত রেখেছেন। প্রত্যেকে নির্দিষ্ট সময় মোতাবেক আবর্তন করে। তিনি সব বিষয় পরিচালনা করেন। নিদর্শনগুলো প্রকাশ করেন, যাতে তোমরা স্বীয় পালনকর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ সম্পর্কে নিশ্চিত বিশ্বাসী হও। তিনিই ভূম-লকে বিস্তৃত করেছেন এবং তাতে পাহাড়-পর্বত, নদ-নদী স্থাপন করেছেন এবং প্রত্যেক ফলের মধ্যে দুই-দুই ধরনের সৃষ্টি করেছেন। তিনি দিনকে রাত্রি দ্বারা আবৃত করেন। এতে চিন্তাশীলদের জন্য নিদর্শন রয়েছে।’ (সূরা রাদ : ২-৩)। রাত-দিনের পরিবর্তনে এবং শীত-গ্রীষ্মের পালাবদলে চিন্তাশীল ব্যক্তি খুঁজে পায় তার ¯্রষ্টাকে। তিনি কীভাবে একজন পুরুষ ও একজন নারী থেকে অগণিত মানব সৃষ্টি করেছেন এবং তাদের বর্ণ, গঠন, স্বভাব, চরিত্র ও কথাবার্তায় দান করেছেন বৈচিত্র্য। এসব তাঁর অপার কুদরতের জীবন্ত সাক্ষী। আমরা প্রতিনিয়ত দেখতে পাই, সমুদ্রবক্ষে অথৈ পানির বুক চিরে উত্তাল তরঙ্গমালা ভেদ করে পণ্য বোঝাই জাহাজের আনাগোনা। দেখতে পাই, শূন্য আকাশে পাখিদের ডানা ঝাপটে উড়ে বেড়ানো। এটা আল্লাহর অসীম রহমত আর কুদরতের নিদর্শন। বস্তুত এ পৃথিবীর সবকিছুই মহান আল্লাহর অসীম ক্ষমতা, অপার কুদরত ও অস্তিত্বের প্রমাণ বহন করে চলেছে। প্রখ্যাত বিজ্ঞানী নিউটন বলেছেন, ‘বিশ্বের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের উপর দিয়ে স্থান ও কালের হাজার হাজার বিপদ অতিক্রান্ত হয়েছে। তা সত্বেও তাতে যে শৃঙ্খলা ও সুনিয়ন্ত্রণ পরিলক্ষিত হয় তা একজন নিয়ন্ত্রক ছাড়া কিছুতেই সম্ভব নয়।’ আর এ নিয়ন্ত্রকই হলেন সর্বশক্তিমান মহান আল্লাহ। বিজ্ঞানের চরম উৎকর্ষতার এই যুগে কম্পিউটার, স্যাটেলাইট, ইন্টারনেট ইত্যাদির সাহায্যে মানুষ যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বনের পরও আমরা অহরহ দেখতে পাই, ট্রেনে ট্রেনে, জাহাজে জাহাজে সংঘর্ষ ঘটে চলেছে। কিন্তু মহাকাশের অগণিত গ্রহ-নক্ষত্র ও নীহারিকার বিরামহীন পরিভ্রমণে কখনও সংঘর্ষ হয়নি। কিংবা সাগরের অতল তলদেশে বিশৃঙ্খলা পরিলক্ষিত হয়নি। তবুও কি আমরা বলব, এ জগৎ-সংসার চালকবিহীন আপনা আপনিই সুশৃঙ্খলভাবে চলছে? এক বুড়ো মহিলা চরকা চালাচ্ছিল। তাকে জিজ্ঞেস করা হলো, তিনি কেন ¯্রষ্টার অস্তিত্বে বিশ্বাস করেন। তিনি চরকা থেকে হাত উঠিয়ে নিলেন। চরকা বন্ধ হয়ে গেল। মহিলা বলল, এই সামান্য চরকারও একটা হাত প্রয়োজন, যে তাকে চালাবে। তাহলে কীভাবে এই বিশাল পৃথিবী কোনো পরিচালক ছাড়া চলতে পারে? ইমাম শাফেঈ (রহ.) কে ¯্রষ্টার অস্তিত্বের প্রমাণ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, এই বিশ্বজগতের সবকিছুই তাঁর অস্তিত্বের প্রমাণ। একটা তুঁত গাছের কথা চিন্তা কর। এই গাছের পাতা যদি রেশম পোকা খায়, তাহলে সুতা বের হয়। মৌমাছি খেলে মধু বের হয়। গরু-ছাগলে খেলে বের হয় লেদা-গোবর। আর হরিণে খেলে তার পেটে তৈরি হয় কস্তুরী। কে দিয়েছেন একই বস্তুর ভেতর এতো কারিশমা? নিশ্চয়ই এর পেছনে একজন সূক্ষ্ম কারিগর আছেন। তিনিই আল্লাহ এবং মহান সৃস্টি কর্তা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *