বাংলাদেশের উপজেলা ভোটে আরও গুরুত্ব দেওয়া উচিত ছিল বিএনপি-র

Slider রাজনীতি সামাজিক যোগাযোগ সঙ্গী সারাদেশ

image

 

 

 

 

 

পূর্ণ প্রস্তুতিতে পূর্ণোদ্যমে ভোট লড়া আর চান্স নেওয়াটা এক নয়। হারলে হারলাম, জিতলে জিতলাম, দেখা যাক না কী হয়, এমন ভাবনা ক্ষতিকারক। শেষমেষ আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরায়, জেতা ভোটেও হারতে হয়। প্রতিপক্ষ মজা দেখে। পরাজিতরা উদভ্রান্তের মতো পরাজয়ের উৎস খোঁজে। শাসক দলের মস্তানি, ভোট জালিয়াতি, নির্বাচন কমিশনের পক্ষপাতিত্বকে কাঠগড়ায় তুলে লজ্জা ঢাকার প্রবণতা। এটা দলীয় দুর্বলতা। মানুষকে জয় করার অক্ষমতা। মানুষ ধরতে পারে সত্যিটা। উন্নয়নমুখী বাংলাদেশের দরকার পোড় খাওয়া রাজনীতিক নয়, ভাল রূপকার। প্ল্যান পছন্দ হলেই ভোট। জেলা বা জাতীয় স্তরে তফাৎ নেই।

৬ মার্চ বাংলাদেশের ১৮ উপজেলার নির্বাচন। গণতান্ত্রিক বিকেন্দ্রীকরণে উপজেলার হাতে ক্ষমতা যথেষ্ট। চাইলে অনেক কিছু করা যায়। সব অসঙ্গতি মিটিয়ে চেহারাটা সুচারু করাটাই নির্বাচিতদের দায়িত্ব। আওয়ামি লিগ সচেতন ভাবে নির্বাচন লড়ছে। প্রচারও চালাচ্ছে মন দিয়ে। তারা জানে, কোনও ভোটই ছোট নয়। উপজেলায় যারা ভোট দেবে ২০১৯-এ তারাই নির্বাচিত করবে সংসদীয় প্রার্থীদের। নির্বাচিতরা দেশ চালানোর দায়িত্ব পাবে। উপজেলার ফল খারাপ হলে সেখানেও তার প্রভাব পড়তে বাধ্য। ভাবনায় পিছিয়ে বিএনপি। তারা অতটা গুরুত্ব দিচ্ছে না। ট্রায়াল গেম মনে করে দূর থেকে লক্ষ্য রাখছে। সব শক্তি নিয়ে ঝাঁপাচ্ছে না।

বিএনপি সব আসনে প্রার্থী দেয়নি। শীর্ষ নেতাদের বক্তব্য, প্রার্থীরা না চাইলে মনোনয়ন দেওয়া হবে কেন। যারা চেয়েছে তারা পেয়েছে। গ্রাহ্য করার মতো যুক্তি নয়। সব নির্বাচনেই প্রার্থীর আগে দল। দলকে খোঁজ রাখতে হবে যোগ্য প্রার্থীরা কোথায়। তাদের টেনে এনে লড়াইয়ের ময়দানে নামাতে হবে। বিএনপি করছে ঠিক তার উলটো। প্রার্থীদের নিজেদের গরজে যেতে হবে দলের কাছে মনোনয়ন চাইতে। গেলে দল লড়াইয়ের সুযোগ দিতে রাজি। মনোনীত প্রার্থী যদি জেতে, নিশ্চয়ই বলবে, আমার ক্ষমতায় জিতেছি। আমার সাফল্য দলকে শক্তি যুগিয়েছে। প্রার্থীর গুরুত্ব বাড়লে দল গৌন হবেই। দক্ষিণপন্থী দলের সমস্যা এটাই। ভারতেও অনেক সময় একারণেই প্রার্থীর ওজন দলের চেয়ে বেড়ে যায়। তখন সামলান দায় হয়ে পড়ে।

১৮টি উপজেলার নির্বাচনে মাত্র ১০টিতে প্রার্থী দিয়েছে বিএনপি। ৮টি উপজেলায় লড়াই থেকে সরে দাঁড়ান হল কেন। দলের সাফ জবাব, কী করা যাবে। কেউ মনোনয়ন না চাইলে কাকে দেওয়া হবে। ঘুরে ফিরে সেই এক কথা। লড়াইয়ের দায় প্রার্থীদের। দল অনুমোদন দেবে মাত্র।

নতুন নির্বাচন কমিশনের প্রথম নির্বাচন এটাই। সামান্য ভুলচুকে সমালোচনার ঝড় উঠতে পারে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদা সাবধানী। তিনি জানিয়েছেন, সবাইকে নিয়ে সুষ্ঠু নির্বাচন করতে কোনও অসুবিধে হবে না। তাঁর চার সহযোগীও সক্রিয়। হুদা মুক্তিযুদ্ধে লড়েছেন। সিভিলিয়ান হিসেবে সাফল্য পেয়েছেন। স্ত্রী হুসনে আরার সঙ্গে তাঁর সুখের সংসার। তিন ছেলেমেয়ে কৃতি। তিনি মর্যাদা খোয়ানোর কাজ করবেন কেন। বিএনপি জানিয়েছে, আমরা তাঁকে নজরে রাখছি। তার আগে নিজেদের দলের দিকে খেয়াল করলে ভাল করত। মানুষকে কাছে টানাই যে কোনও দলের প্রধান কাজ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *